1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইনকাদের ঐশ্বর্য? পানি!

১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭

পেরুর কুস্কো শহর ৬০০ বছরের পুরনো ও এককালে ইনকাদের রাজধানী ছিল৷ ইনকারা জানতেন, পানিসম্পদ কীভাবে ব্যবহার ও সুরক্ষিত করা যায়৷ তাদের উত্তরসূরিরা যা থেকে আজও শিখতে পারেন৷

https://p.dw.com/p/2jqHA
ছবি: Jahanshah Javid

উৎস থেকে নালা দিয়ে বাগানে পানি যাচ্ছে তিপনের ভগ্নস্তূপে৷ ৬০০ বছর আগে তৈরি এক স্বর্গ৷ এককালে এখানে ৩০০ মানুষের বাস ছিল – যে হাইড্রলিক ইঞ্জিনিয়ার বেশ কয়েক দশক ধরে জায়গাটির দেখাশোনা করছেন, তিনিই এ কথা জানালেন৷ সাড়ে তিন হাজার মিটার উচ্চতায় অবস্থিত স্থানটি ইনকা সভ্যতার প্রযুক্তিগত বিকাশের এক অপূর্ব নিদর্শন৷

রুবেন সিয়েরা পালোমিনো শোনালেন, ‘‘তিপন একটি সুবিশাল পরিবেশগত পরীক্ষাগার, যেখানে স্প্যানিশদের আগমনের আগে দক্ষিণ অ্যামেরিকার মানুষ কীভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ, বিশেষ করে পানির ব্যবহার করতেন, তার একটা আন্দাজ পাওয়া যায়৷ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে আর কৃষিকাজে পানির প্রয়োজন পড়ত৷ সেজন্য ইনকারা পানি সরবরাহের বিশেষ পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন৷ তা থেকেই এই সব খাল ও নালা, মাটির নীচের চৌবাচ্চা আর পানি বয়ে নিয়ে যাবার আকোয়াডাক্টের সৃষ্টি৷’’

ইনকাদের ঐশ্বর্য পানি

ইনকারা বেশ কয়েকশ’ মিটার উঁচু পাহাড় থেকে পানি নীচে নিয়ে যাওয়ার পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন৷ পরে সেই পানি ভাগাভাগি করে বাগানে সেচ দেওয়া কাজ সেরে একেবারে উপত্যকা অবধি বইয়ে নিয়ে যাওয়া হতো৷

এর কয়েক কিলোমিটার পশ্চিমেই কুস্কো, যা স্প্যানিশদের আসার আগে ইনকাদের রাজধানী ছিল৷ বছরে ২০ লাখ টুরিস্ট ইনকাদের এই প্রাচীন রাজধানীটি দেখতে আসেন৷ শহরটিতে আজ সাড়ে চার লাখ মানুষের বাস৷ তা সত্ত্বেও অতীতের ইনকা সংস্কৃতি যেন এখানে আজও বেঁচে রয়েছে৷

দূষণ

শহরের প্রান্তের নদীনালাতেও যেন ইনকাদের ছোঁয়া – তিপনের মতো ঐ একই পদ্ধতি৷ সাপি নদীর জল কৃত্রিম জলাশয়ে ধরে রেখে নদীর গতিবেগ কমানো হয়৷ ফলে পানি কিছুটা পরিষ্কার হয়৷ পানিতে যে আবর্জনা যে খুব বেশি পড়ে, তা নয় – কিন্তু হাজার হাজার শৌচালয়ের অপরিশোধিত পানি এখানে এসে পড়ছে, কাজেই দুর্গন্ধে টেকা দায়! সংশ্লিষ্ট পূর্ত সংস্থার হাইড্রলিক ইঞ্জিনিয়ার স্বয়ং পারলে নাকে কাপড় দেন৷

‘সেদাকুস্কো’-র জোয়েল জামালোয়া জর্দান বললেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য হলো কুস্কো শহরের পানিকে জীবাণুমুক্ত করা৷ এই সাপি নদীর পানিকেও৷ নদীর জল অত্যন্ত দূষিত: আমাদের কাজ হলো, নদীকে দূষণমুক্ত করা৷’’

সিউয়েজ প্ল্যান্ট

সমস্যা এই যে, শহরের প্রান্তে একের পর এক নতুন বসতি গড়ে উঠছে৷ সেই সব বস্তিবাসীদের শহরের পানি সরবরাহ প্রণালীর সঙ্গে সংযোগ নেই, পয়ঃপ্রণালীর সঙ্গেও নয়৷ কাজেই যাবতীয় ময়লা সাপি নদীর পানির সঙ্গে মিশে মাটির নীচের খাল ধরে শহরের অপর প্রান্তে অবস্থিত সান জেরোনিমো এলাকায় পৌঁছে যায় – যেখানে ময়লা পানি পরিশোধনের একটি সিউয়েজ প্ল্যান্ট আছে৷ ২০১৪ সাল থেকে জার্মান সহযোগিতায় পেরু সরকার প্ল্যান্টটির আধুনিকীকরণের ব্যবস্থা করছেন৷

সিউয়েজ প্ল্যান্টের পরিচালক আলভারো ফ্লোরেস বোজা বললেন, ‘‘পেরুর আধুনিকতম সিউয়েজ প্ল্যান্টে কাজ করতে খুব ভালো লাগে; আবার পেশাদারি দৃষ্টিকোণ থেকেও এটা একটা চ্যালেঞ্জ৷ প্রত্যেক দিন আমরা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যে সব নানা ধরনের নতুন প্রযুক্তি ও নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে, যা এখনও পেরুতে এসে পৌঁছয়নি, তার সঙ্গে পরিচিত হই৷’’

পেরুতে জনবসতির ময়লা পানির একটা বড় অংশ নদী-নালা, জলাধার ও সাগরে গিয়ে পড়ে – যা জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশ, দু'টোর কোনোটার পক্ষেই মঙ্গলজনক নয়৷

ইওয়াখিম এগার্স/এসি