1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কলম্বিয়ায় টেকসই চাষবাস

হলগার ট্রেজাক/এসি১৬ জুন ২০১৬

দক্ষিণ অ্যামেরিকার অ্যান্ডিজ পর্বতমালা৷ এখানে প্রকৃতির সবুজের অনেকটাই উধাও৷ কাজেই স্থানীয় চাষিদের টেকসই, পরিবেশ-সম্মত অথচ অনাগ্রাসী প্রযুক্তি সম্পন্ন চাষবাস শেখানোর চেষ্টা চলেছে৷

https://p.dw.com/p/1J6yc
জার্মানির একটি শস্য ক্ষেত
ছবি: picture-alliance/chromorange

পরিবেশ-সম্মত চাষ শেখানোর চেষ্টা কলম্বিয়ায়

এ কাজে পানি বাঁচাতে হবে৷ তাই অ্যান্ডিজ পর্বতমালার চাষিখামারগুলোতে ক্রমেই আরো বেশি করে জল চোঁয়ানোর আওয়াজ শোনা যাচ্ছে৷ খামারচাষিরা চারাগাছগুলোর গোড়ায় পানি দিচ্ছেন৷ গোটা প্রণালীটা লাগানোর জন্য যে এক হাজার ইউরো ধার নিতে হয়েছে, তা এক বছরের মধ্যেই উশুল হয়ে গেছে৷

মানুষজনকে তাদের মনোভাব বদলাতে হবে, বলে ব্যাংক উপদেষ্টা আনা ক্রিস্টিনার অভিমত৷ তিনি পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে পড়াশুনা করেছেন৷ দেখালেন, উপত্যকাগুলিতে গাছপালা কিভাবে ধীরে ধীরে উধাও হয়েছে৷

কন্টাক্টার ব্যাংকের গ্রাহক উপদেষ্টা আনা ক্রিস্টিনা জামোরা বলেন, ‘‘এখানে যেমন সব কিছু ইতিমধ্যেই ধ্বংস হয়ে গেছে, ফলে আর কোনো সবুজ বাকি নেই৷ ওখানে এখনো মানুষ থাকে, কিন্তু কিছুই আর প্রায় গজায় না৷ পরিবারের মানুষজনের পেট ভরানোর মতো রুটি তৈরির ময়দাটা হয়, কিন্তু তার বেশি কিছু নয়৷’’

তরুণ ব্যাংক কর্মীরা ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে থাকেন, আবার তাঁরা পরিবেশ সংক্রান্ত উপদেষ্টাও বটে – সেই হিসেবে তাঁরা জাতিসংঘের একটি কর্মসূচির অঙ্গ৷ সমগ্র অ্যান্ডিজ পার্বত্য এলাকার জন্য জার্মান তরফ থেকে এই কর্মসূচি সৃষ্টি করা হয়েছে৷ ব্যাংক কর্মীদের কাজ হলো, তারা দেখবেন ও শিখবেন৷

বৃষ্টির অভাব নেই

ডন গাব্রিয়েল চিকেইসা-এর এখানে বৃষ্টির কোনো অভাব নেই৷ তিনি চারপাশের জঙ্গল কাটতে দেননি৷ গাব্রিয়েল চিরকালই পানির অপচয় সম্পর্কে আদিবাসী ইন্ডিও-দের মতোই সচেতন৷ অ্যান্ডিজ পর্বতমালা অঞ্চলের অন্যান্য চাষিদের জলকষ্ট সম্পর্কে তিনি অনেক কিছু শুনেছেন বটে, কিন্তু নিজে অভিজ্ঞতা করেননি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সে সমস্যা নেই, কেননা এখানকার পানি আসে ওপর থেকে, যেখানে চিরকালই পানি থাকে৷ আমরা সেই পানি জড়ো করি; সেই পানি আবার গাছের মূল, কাণ্ড, ডালপালা হয়ে সেখানেই ফিরে যায়৷ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে নিজেদের বাঁচাতে হলে এই প্রণালীটা উপলব্ধি করা দরকার৷’’

কলম্বিয়ার এই অংশে ব্যাংক উপদেষ্টা বললে গালিগালাজ শুনতে হয় না৷ কন্টাকটার ব্যাংকের উপদেষ্টারা গাড়িতে দূর পথ গিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে, অথবা যারা গ্রাহক হতে পারেন, এমন মানুষদের সঙ্গে দেখা করেন৷ চাষিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন এই ব্যাংক কর্মীরা৷ আজকের বিষয় হলো, রাসায়নিক সারের বদলে অরগ্যানিক সারের ব্যবহার৷

সব চাষিই যে ঋণ নিতে প্রস্তুত, এমন নয়, তা সে ঋণ যতোই ক্ষুদ্র হোক না কেন৷ জোসে দে লা ক্রুজ নিজেই বহুকষ্টে টাকা বাঁচিয়ে তাঁর গরুটিকে কিনেছেন৷ জোসে বলেন, ‘‘একবার ঋণ নিলে ওদের কাছে বাঁধা পড়তে হয়৷ গরুর জন্যে ২০ লাখ পেসো ছাড়া আমি ৫০ হাজার পেসো সুদ দিতে যাব কোন দুঃখে?’’

মুরগির বিষ্ঠা থেকে সার

ইউরোপের তুলনায় এখানে সুদের হার সত্যিই বেশি৷ কিন্তু এক হাজার ইউরো খরচ করলে এমন একটা স্টোভ কিনতে পাওয়া যায়, যাতে মাত্র এক-চতুর্থাংশ কাঠ লাগে – অর্থাৎ কাজ কমে, আবার জঙ্গলের কাঠও বাঁচে৷ সবজি চাষি জুয়ান জিসাস আকস্তা আর তার পরিবারের পক্ষে সেটা একটা সাশ্রয় বৈকি৷ তবে তারা ইতিমধ্যেই ব্যাংকের ভালো খদ্দের বলে পরিচিত, তাই তাদের সুদের হার পাঁচ শতাংশের নীচে৷ শেষবার ঋণ নিয়ে জুয়ানের পরিবার মুরগি কিনেছেন৷ মুরগির বিষ্ঠা থেকে ভালো অরগ্যানিক সার হয়৷ জুয়ান বলেন, ‘‘আমরা যদি তা গরম থাকতেই মাটিতে ছড়াই, তাহলে ভালো সার হয়, আবার এ থেকে পয়সাও পাওয়া যায়৷’’

এই চাষি পরিবারের আসল কাজ হলো সবজির চাষ৷ তা যখন ভালো চলে না, তখন রোজগারের অন্য একটা পথ রইল৷ কন্টাকটার মাইক্রোক্রেডিট ব্যাংকের পরিচালক গ্লোরিয়া লুচিয়া বুস্তস বলেন, ‘‘এটা হলো চাষিদের সাহায্য করার একটা পন্থা৷ এরকম আরো অনেক পন্থা আছে, যেমন পরিবেশ-সম্মত কাঠের উনুন, গোবরগ্যাস তৈরির সরঞ্জাম, কফি বিন শুকনোর সৌরশক্তি চালিত ড্রায়ার, পানি ধরে রাখার চৌবাচ্চা৷ এভাবে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যও সরবরাহ করি৷’’

কলম্বিয়ায় কৃষিকাজের ভবিষ্যৎ এদের হাতে: নারিনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা পরিবেশ-সম্মত কৃষিকাজের পদ্ধতি সম্পর্কে একটা ধারণা পাচ্ছেন৷ মাটিতে লাঙল না ঠেকিয়ে চাষ, এই আদর্শ ফিনকা বা খামারে তা শেখা যায়৷ ভবিষ্যতে চাষিরাও এখানে শিখতে পারবেন, টেকসই কৃষিকাজের সঙ্গে অনাগ্রাসী প্রযুক্তির গাঁটছড়া পড়ে কি করে, তা দেখতে পারবেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান