1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউটিউবে আঙ্গেলা ম্যার্কেল!

২০ আগস্ট ২০১৭

চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বুধবার সকালে প্রায় এক ঘণ্টা সময় কাটান জার্মানির চারজন সোশ্যাল মিডিয়া তারকাদের সঙ্গে – এদের মধ্যে তিনজন আগামী ২৪শে সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন৷

https://p.dw.com/p/2iRMq
ছবি: Reutes/A. Schmidt

১৯ বছরের লিজা, সমবয়সি ইওহানা আর ১৮ বছর বয়সি কিলিয়ান স্বীকার করলেন যে, তারা এখনও ঠিকমতো জানেন না, কী করে ভোটপত্রে চিকে দিতে হয়৷ এ ধরনের প্রথমবারের ভোটারদের মন কাড়ার জন্যই আঙ্গেলা ম্যার্কেল ইউটিউবে অবতীর্ণ হলেন ও এই চারজন সফল ভিডিও ব্লগারের প্রশ্নের উত্তর দিলেন৷ আসলে এদের বিশেষত্ব রাষ্ট্রবিজ্ঞান থেকে শুরু করে প্রযুক্তি, ফ্যাশন, লাইফস্টাইল ও সেক্স সংক্রান্ত পরামর্শ অবধি৷

প্রথমে ব্লগার ‘ইটসকোলস্ল'-র পালা৷ ইনি ম্যার্কেলকে প্রশ্ন করলেন শিক্ষা, উচ্চশিক্ষা বর্জিত পরিবারবর্গের সন্তান-সন্ততিদের জন্য সমান সুযোগ ও সমলিঙ্গ বিবাহের প্রতি ম্যার্কেলের ‘না' সম্পর্কে৷

Merkel answers YouTubers' questions

‘ইটসকোলস্ল' অভিযোগ করলেন যে, জার্মানিতে স্কুল পর্যায়ের ইতিহাস পাঠক্রমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে বড় বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় – যা শুনে ইওহানা বলেন, ‘খুব সত্যি৷' ম্যার্কেলকে যখন জিজ্ঞাসা করা হলো, তিনি গোটা দেশে স্কুলশিক্ষার মান, পাঠক্রম ও পরীক্ষাপ্রণালী অনুরূপ করার জন্য কিছু করবেন কিনা, তখন ম্যার্কেলের জবাব হলো, শিক্ষা বিষয়টি রাজ্য সরকারের দায়িত্বে৷

শুনে লিজার মনে হয়েছিল যে, ম্যার্কেল ও ঐ তরুণ ব্লগারের মধ্যে বোঝাবুঝিতে কিছু ঘাটতি ছিল৷ দু'জনেই পরস্পরকে কিছুটা অবজ্ঞা করেছেন, বলে লিজার মনে হয়েছে৷ কিন্তু তিন প্রথমবারের ভোটারই এ ব্যাপারে একমত যে, ম্যার্কেল পরিস্থিতি বেশ ভালোভাবে সামলে নিয়েছেন

ডিজেল কেলেঙ্কারির ছায়া?

পরের ব্লগার ছিলেন ‘আলেক্সিবেক্সি', যিনি একজন সাংবাদিক, প্রযুক্তি সংক্রান্ত ব্লগার ও একটি বিদ্যুৎ-চালিত গাড়ির মালিক৷ তিনি তথাকথিত ‘ডিজেলগেট' কেলেঙ্কারি ও ইলেক্ট্রোমোবিলিটি বা ই-মোবিলিটি অর্থাৎ বিদ্যুৎ-চালিত গাড়ির ক্ষেত্রে ম্যার্কেলের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুললেন৷ ম্যার্কেল নিজে একজন ডক্টর উপাধিপ্রাপ্ত পদার্থবিদ, কিন্তু বোঝা গেল যে বিষয়টি তাঁর ঠিক পেটোয়া নয় – অন্তত ম্যার্কেল বৈজ্ঞানিক খুঁটিনাটিতে না গিয়ে, শুধু বললেন যে, তিনি আগামী ৪ঠা সেপ্টেম্বর তারিখে বর্ধিত কার্বন ডাইঅক্সাইড এলাকাগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে শলাপরামর্শ করবেন৷

‘‘আসল সমস্যা হলো, গাড়ির ব্যাটারি চার্জ করার মতো পর্যাপ্ত স্টেশন নেই'', বললেন কিলিয়ান৷ সরকারের সদস্যরা একবার একটা – বিদ্যুৎ-চালিত – টেসলা গাড়ি নিয়ে বেরোলেই সেটা বুঝতে পারবেন, বলে তাঁর ধারণা৷ কিন্তু ‘আলেক্সিবেক্সি' যে নিখর্চায় গাড়ির ব্যাটারি চার্জ করতে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন, তাতে শুধু ইওহানারই আপত্তি নেই – স্বয়ং চ্যান্সেলরও বললেন যে, বৈদ্যুতিক গাড়ির চালকদের প্রথাগত গাড়িচালকদের মতোই তাদের জ্বালানির মূল্য দেওয়া উচিত৷

‘‘প্রথমদিকে চ্যান্সেলর যা বলেছেন, তার থেকে এটা অনেক ভালো'', কিলিয়ান বললেন; ‘‘অনেক বেশি তথ্যপূর্ণ৷ আমি ই-মোবিলিটির ব্যাপারে আগ্রহী৷'' আর ‘আলেক্সিবেক্সি' যখন ম্যার্কেলকে প্রশ্ন করলেন, চ্যান্সেলরের প্রিয় ইমোজি-টা কি, তখন অন্যরা চোখ ঘুরিয়ে তাদের বিরক্তি প্রকাশ করলেন৷

বিউটি এক্সপার্ট ও ব্লগার

‘ইশতার ইসিক' তাঁর ব্লগে বিউটি আর ফ্যাশন টিপস দিয়ে থাকেন, কিন্তু তাঁর কাছ থেকেই কিছু চোখা চোখা প্রশ্নের সম্মুখীন হন ম্যার্কেল৷ যাঁরা বাস্তবিক ভোট দিতে যান, তাঁদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, এ কথা উল্লেখ করে ‘ইশতার ইসিক' ম্যার্কেলের কাছ থেকে জানতে চান যে, ম্যার্কেল এ ব্যাপারে কী করছেন৷ উত্তরে ম্যার্কেল তাঁর পডকাস্ট ও তাঁর ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম পেজগুলির কথা বলেন – কিন্তু বোঝা যায় যে, ৬৪ বছর বয়সি ম্যার্কেলকে তথাকথিত নিউ মিডিয়ার ডিজিটাল নেটিভ বলা চলে না৷

‘ইশতার ইসিক' তারপর জানতে চান, পুরুষ অধ্যুষিত পরিবেশে কাজ করতে তাঁর কেমন লাগে ও তিনি পরবর্তী মন্ত্রীসভায় ৫০ শতাংশ মহিলা সদস্য রাখার প্রস্তাব সমর্থন করবেন কিনা৷

উত্তরে ম্যার্কেল বলেন: ‘‘আমরা খুব সম্ভবত একটি জোট সরকারে থাকব, কাজেই আমি অপরপক্ষের হয়ে কিছু বলতে পারব না৷ কিন্তু আমি নিশ্চিত করব যে, মন্ত্রীসভায় মহিলাদের উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব থাকবে৷''

সোশ্যাল মিডিয়া সংক্রান্ত বিষয়গুলিতে ম্যার্কেলের অস্বস্তি ও তিনি নারীবাদ সংক্রান্ত প্রসঙ্গগুলি মোটামুটি এড়িয়ে যাওয়া সত্ত্বেও তিনজন প্রথমবারের ভোটারের ধারণা যে, বিভিন্ন প্রশ্নে ম্যার্কেলের প্রতিক্রিয়া বিশ্বাসযোগ্য হয়েছে, বিশেষ করে ‘হেট স্পিচ' প্রসঙ্গে৷

সবশেষে বিশ্বরাজনীতি

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ‘মিস্টারউইসেনটুগো' এর্দোয়ান ও ট্রাম্পের প্রতি জার্মানির মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন৷ তাঁর ব্লগের ফলোয়ারদের মধ্যে অনেকেই উত্তর কোরিয়া নিয়ে চিন্তিত: এক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অগ্নিগর্ভ টুইটগুলো সম্পর্কে চ্যান্সেলরের অভিমত জানতে চান ‘মিস্টারউইসেনটুগো'

‘‘আমি সে ভয় দেখি না'', বলেন ম্যার্কেল৷ ‘‘উত্তেজনা বৃদ্ধি করে,আমরা সে ধরনের যাবতীয় উক্তি ব্যবহার করার বিরোধী৷ এই সংঘাতের কোনো সামরিক সমাধান নেই৷ আমরা সেটা বলবো ও অন্যরা দেখবে যে, তা সত্যি৷ কথাবার্তা সাধারণত উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রাথমিক পর্যায়৷ আমি তা রোধ করার জন্য সর্বসাধ্য প্রয়োগ করব৷ সেটাই হবে আমাদের অবদান, আমরা যা ইতিমধ্যেই করছি৷''

‘‘(‘মিস্টারউইসেনটুগো') ওনাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কিছু বলানোর চেষ্টা করছে৷ কিন্তু উনি সেদিকে যাচ্ছেন না'' – এই হলো লিজার মন্তব্য৷ ‘‘উনি যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিরূপ করতে চান না, সেটা পুরোপুরি বোধগম্য৷''

‘‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদেশ৷ ওনার ব্যক্তিগত অভিমত সম্ভবত আলাদা, কিন্তু উনি চ্যান্সেলর'' – যা ইওহানারও জানা, কাজেই ‘মিস্টারউইসেনটুগো'-র প্রশ্নগুলো তার কাছে সমস্যাকর বলে মনে হয়েছে৷

প্রথম ভোটারদের তিনজনই বার্লিনের ইংরেজি-জার্মান জন এফ কেনেডি স্কুলের সাবেক পড়ুয়া৷ ম্যার্কেলের সাথে ইউটিউব আলাপচারির ফলে তাদের রাজনৈতিক পছন্দ-অপছন্দ না বদলালেও, ম্যার্কেল যে একটি ‘সলিড পার্ফর্মেন্স' দিয়েছেন, সে বিষয়ে তারা একমত৷ আগামী নির্বাচনে ম্যার্কেল যে জিতবেন, সে ব্যাপারেও তাদের বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই৷ শুধু ইওহানার দুঃখ রয়ে গেল যে, ম্যার্কেলকে একটি প্রশ্ন করা হয়নি: উদ্বাস্তুদের সম্পর্কে তিনি ব্যক্তিগতভাবে কী ভাবেন?

এসি/জেডএইচ

জার্মান নির্বাচন নিয়ে আপনার কিছু বলার থাকলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য