1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কাদের মোল্লার ফাঁসির আদেশ

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩

একাত্তরে মানবতা বিরোধী অপরাধে ট্রাইব্যুনাল জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলেও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তার ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন৷ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুক্তিযোদ্ধা ও সুশীল সমাজের সদস্যরা৷

https://p.dw.com/p/19iZN
Abdul Quader Molla, 64, the fourth-highest ranked leader of the Jamaat-e-Islami party, gestures at the central jail in Dhaka on February 5, 2013. A Bangladeshi court sentenced a senior Islamist opposition official to life in prison Tuesday for mass murder and crimes against humanity during the 1971 liberation war against Pakistan. AFP PHOTO/STR (Photo credit should read STRDEL/AFP/Getty Images)
ছবি: Strdel/AFP/Getty Images

গত ৫ই ফেব্রুয়ারি মানবতা বিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন৷ কিন্তু এই রায়ে ক্ষুব্ধ হন দেশের তরুণ এবং সুশীল সমাজ৷ রায় প্রত্যাখ্যান করে ফাঁসির দাবিতে সেদিন রাত থেকেই শুরু হয় আন্দোলন৷ শাহবাগকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে গণজাগরণ মঞ্চ৷ সেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সবখানে৷ অবশেষে আইন সংশোধন করে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের সুযোগ করা হয়৷ কাদের মোল্লার রায়ের বিরুদ্ধে আসামি পক্ষের পাশাপাশি ৩রা মার্চ রাষ্ট্রপক্ষও আপিল করে৷ গত ২৩শে জুলাই আপিলের শুনানি শেষ হয়৷ শুনানি শেষ হওয়ার ৫৪ দিনের মাথায় আপিল বিভাগ রায় দিল৷ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ৫ জন বিচারপতি সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে মঙ্গলবার কাদের মোল্লার ফাঁসির আদেশ দেন৷ ৫ জন বিচারপতি হলেন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন, বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি মো. অব্দুল ওয়াহাব মিয়া, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী৷

People attend a mass demonstration at Shahbagh intersection, demanding capital punishment for Bangladesh's Jamaat-e-Islami senior leader Abdul Quader Mollah, after a war crimes tribunal sentenced him to life imprisonment, in Dhaka February 8, 2013. About 100,000 people rallied in Bangladesh's capital on Friday to vent their anger at the country's feuding politicians, the fourth day of protests after an Islamist leader convicted of war crimes was spared execution. Most Bangladeshis had expected a death sentence to be handed to Mollah, 64, assistant secretary-general of Jamaat-e-Islami - the country's biggest Islamist party. REUTERS/Andrew Biraj (BANGLADESH - Tags: CIVIL UNREST POLITICS CRIME LAW)
কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায়ে ক্ষুব্ধ হন দেশের তরুণ এবং সুশীল সমাজ৷ রায় প্রত্যাখ্যান করে ফাঁসির দাবিতে সেদিন রাত থেকেই শুরু হয় আন্দোলন এবং শাহবাগকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে গণজাগরণ মঞ্চ৷ছবি: REUTERS

কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মোট ৬টি অপরাধ বিবেচনায় নেয়া হয়েছে৷ এগুলো হল পল্লবি এলাকার গণহত্যা,কবি মেহেরুননিসা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা, সাংবাদিক খন্দকার আবু তালিব হত্যা, কেরানিগঞ্জের ভাটার চর ও ভাওয়াল খানবাড়ি হত্যাকাণ্ড, আলুব্দি গণহত্যা এবং মিরপুরের হযরত আলি পরিবারে গণহত্যা৷ এর সঙ্গে লুটতরাজ, ধর্ষণ এবং ধ্বংসযজ্ঞের অভিযোগও আছে৷

এই মামলার আপিলে আদালত দুই পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য ছাড়াও স্বপ্রনোদিত হয়ে দেশের ৬ জন বিশিষ্ট আইনজীবীর মতামত নিয়েছেন৷

রায় ঘোষণার পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, এই রায় ঐতিহাসিক এবং এর মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে৷ এই রায় একই সঙ্গে জনপ্রত্যাশা পূরণ করেছে৷ তিনি বলেন, কাদের মোল্লার যে অপরাধ তাতে মৃত্যুদণ্ডই তার প্রাপ্য শাস্তি৷

কাদের মোল্লার আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক এই রায়কে ন্যায়বিচারের পরিপন্থি বলে উল্লেখ করেন৷ তিনি বলেন, এই রায়ে তারা ক্ষুব্ধ এবং বিস্মিত৷ পূর্ণাঙ্গ রায় দেখে এর বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করা হবে বলে জানান ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক৷ তবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, এই রায়ের ব্যাপারে রিভিউ আবেদন করার কোনো সুযোগ নেই৷ আইন অনুযায়ী ৪৫ দিনের মধ্যে এই রায় কার্যকর হবে৷

রায় ঘোষণার পর আলুব্দি গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী এবং সেই ঘটনায় আহত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আমির হোসেন মোল্লা ডয়চে ভেলেকে বলেন, এই রায় কার্যকর হওয়ার মধ্য দিয়ে শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে৷ তিনি জানান, আগের রায়ে তিনি হতাশ হলেও এবার তিনি সন্তুষ্ট৷ আলুব্দি গণহত্যার সময় তিনি আহত হয়ে প্রাণে বেঁচে গেলেও তার ৬ জন আত্মীয় শহীদ হয়েছেন৷ এই মামলার আরেক সাক্ষী শহীদুল হক মামা বলেন, ৪২ বছর পর তার হতাশা কেটে গেছে৷ তিনি ট্রাইব্যুনাল গঠন হওয়ার পর প্রবাস জীবনের পাট চুকিয়ে দেশে ফিরে আসেন৷

এদিকে এই রায়ের শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ আবার সেখানে অবস্থান নিয়ে উল্লাস প্রকাশ করে৷ গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এই রায়ই তাঁরা প্রত্যাশা করেছিলেন৷ তাঁদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে৷

এদিকে ক্ষমতাসীন ১৪ দল আনুষ্ঠানিকভাবে এই রায়ের সন্তোষ প্রকাশ করলেও বিরোধী দল বিএনপি কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি৷ আর জামায়াতে ইসলামীর সমর্থকরা রায়ের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে গাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশের গাড়িতে আগুন দিয়েছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য