1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কেন্দ্র-রাজ্য চাপানউতোর

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

ভারতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর হত্যাকারী সাত অপরাধীকে তামিলনাড়ু সরকার মুক্তি দেবার সিদ্ধান্ত নিলে সুপ্রিম কোর্ট তার উপর স্থগিতাদেশ দেয়৷ গত ১৮ই ফেব্রুয়ারি শীর্ষ আদালত এই তিন হত্যাকারীর ফাঁসির আদেশ মকুব করে৷

https://p.dw.com/p/1BCKK
ছবি: picture-alliance/united archives

তামিলনাড়ু সরকার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর হত্যাকারী সাতজনকে মুক্তি দেবার সিদ্ধান্ত নিলে কেন্দ্রীয় সরকার সেই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে৷ শুধু তাই নয়, এ নিয়ে তারা সুপ্রিম কোর্টে গেলে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর স্থগিতাদেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত৷ তামিলনাড়ু সরকারকে এই মর্মে নোটিশ দিয়ে বলা হয়েছে যে, আগামী ৬ই মার্চ পরবর্তী শুনানি হবে আর নতুন আদেশ না দেয়া পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে৷

তামিলনাড়ু সরকারের দিক থেকে পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট৷ ঐ সাতজনের মধ্যে রাজীব হত্যায় চারজনের ফাঁসির সাজা হয়েছিল৷ এর মধ্যে একজন অন্যতম অপরাধি মুরুগানের স্ত্রী নলিনী৷ রাজীব গান্ধীর পত্নী সোনিয়া গান্ধী এবং মেয়ে প্রিয়াঙ্কা বাড্রা জেলে নলিনীর সঙ্গে দেখা করার পর, নলিনীকে ক্ষমা করে তাঁর ফাঁসি রদ করার আবেদন জানান আদালতে৷ কারণ নলিনী তখন গর্ভবতী ছিলেন৷ উল্লেখ্য নলিনীর মেয়ে এখন বিলেতে ডাক্তারি পড়ছেন৷ অন্য তিনজন মুরুগান, স্নথন ও পেরারিভালানের ফাঁসি বহাল থাকে৷ তাঁদের প্রাণ ভিক্ষার আবেদন কেন্দ্রীয় সরকার ১১ বছর ধরে ঝুলিয়ে রাখার কারণে, গত ১৮ই ফেব্রুয়ারি শীর্ষ আদালত এই অহেতুক বিলম্বের জন্য আসামিদের ফাঁসি মকুব করে যাবজ্জীবন কারাবাসের আদেশ দেয়৷ একথাও বলে যে, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার যদি চায় তাহলে তাঁদের মুক্তি দিতে পারে, যেহেতু তাঁদের ২৩ বছর জেল খাটা হয়ে গেছে৷

রাজীব গান্ধীর হত্যাকারীদের মুক্তি দেবার যে সিদ্ধান্ত তামিলনাড়ুর জয়ললিতা মন্ত্রিসভা নিয়েছে, তার আইনি এক্তিয়ার নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে৷ কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৩৫ ধারা অনুযায়ী কেন্দ্রের বিনা অনুমতিতে রাজ্য সরকার এই ধরণের একতরফা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না৷ কারণ রাজীব হত্যার তদন্ত করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই আর বিচার হয়েছিল কেন্দ্রের সন্ত্রাস বিরোধী টাডা আইনে৷

Priyanka Gandhi Vadra
রাজীব গান্ধীর শেষকৃত্যানুষ্ঠানে প্রিয়াঙ্কা ও রাহুল গান্ধীছবি: AP

প্রশ্ন হলো, সত্যিই কি রাজ্য সরকার পারে না? রাজ্য সরকারের বক্তব্য, অবশ্যই পারে৷ কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন না এলে রাজ্য সরকার ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৩২ ধারা মোতাবেক মুক্তি দিতে পারে৷ এই প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং স্বয়ং৷ বলেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করা ভারতের আত্মাকে হত্যা করার সামিল৷ সেই সব সন্ত্রাসীরা এভাবে ছাড়া পেলে তা হবে ন্যায়বিচারের পরিপন্থি৷ রাজীব পুত্র রাহুলের মন্তব্য, ‘‘ব্যক্তিগতভাবে আমি মৃত্যুদণ্ডের বিরোধী৷ কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর হত্যাকারীরা যদি এভাবে ছাড়া পায়, তাহলে সাধারণ মানুষ দেশের কাছ থেকে কী আশা করতে পারেন? তামিলনাড়ুর এআইএডিএমকে সরকারের সস্তা জনপ্রিয়তা কুড়াবার ধান্দা ছাড়া আর কিছুই নয়৷'' তাই এখন এর চূড়ান্ত ফায়সালার জন্য আগামী ৬ই মার্চ পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই৷

এক্তিয়ারের প্রশ্নটা অবশ্য শুধু আইনি বৈধতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়৷ আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের প্রেক্ষিতে এর রাজনৈতিক অভিঘাত গভীর৷ তামিল আবেগকে কাজে লাগিয়ে ভোট ব্যাংকের ফায়দা তোলা৷ বিজেপি নেতা সুব্রামনিয়াম স্বামী মনে করেন, জয়ললিতার দল কয়েক দশক আগে শ্রীলঙ্কার তামিল টাইগার জঙ্গি দলের চরম বিরোধী ছিলেন, আজ ভোট বাক্সের লোভে তিনি ও তাঁর দল ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন৷ লোভ শুধু জয়ললিতার দলের একার নয়, সব তামিল রাজনৈতিক দলের একই লোভ৷ তাই মুক্তি দেবার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সব তামিল দল৷ আগামী মার্চে জেনিভাতে বসবে তামিল টাইগার বা এলটিটিই-এর বিরুদ্ধে অভিযানে শ্রীলঙ্কা সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে বিচারসভা৷ তাতে শ্রীলঙ্কা সরকারের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেবার জন্য জয়ললিতা সরকার তামিল জাতীয়তাবাদী অবস্থান নিয়ে কেন্দ্রকে চাপ দিতে পারে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য