1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফিরে দেখা

২০ জুন ২০১৩

হাফিজা বেগম কfকলির সব গেছে৷ তিন মাস হয়ে গেল জামায়াত-শিবিরের সেই আক্রমণের৷ অনেকে ন্যূনতম ‘সান্ত্বনা পুরস্কার' পেলেও কাকলির পরিবার কিছুই পায়নি৷ অপরাধ – আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকা!

https://p.dw.com/p/18sbr
ছবি: AFP/Getty Images

সংগীত শিল্পী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সক্রিয় কর্মী এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজা বেগম কল্পনা৷ জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ফাঁসির আদেশ হওয়ার পর দেশ জুড়ে যে তাণ্ডব চালানো হয় কাকলির পরিবারও তার নির্মম শিকার৷ হামলার ভয়াবহতা পাঠক-শ্রোতাদের জানাতে গত ১৮ই মার্চ তাঁর একটি সাক্ষাৎকার প্রচার করা হয়েছিল৷ তিন মাস পর আক্রান্তরা কেমন আছেন তাও তো জানা দরকার! সেই তাগিদ থেকেই ১৭ জুন থেকে শুরু করা হয় তিন পর্বের ধারাবাহিক৷ এটাই তার শেষ পর্ব৷

Delwar Hossain Sayedee Kriegsverbrechen Todesurteil Bangladesch
হিংসার আগুন এখনো থামে নিছবি: AFP/Getty Images

প্রথম দুই পর্বে আমরা শুনেছি গাইবান্ধার সাজু মিয়া আর খুলনার কয়রা উপজেলার অমিয় দাশের অসহায়ত্ব, সাহায্য প্রার্থনা করা আকুতি৷ ধারাবাহিকটি হাফিজা বেগম কাকলির কাহিনি দিয়েও শেষ করা যেত৷ কিন্তু আমরা এবার বেছে নিয়েছি সাংবাদিক ও সমাজকর্মী সায়ন্তনী ত্বিষাকে৷ তাঁর সঙ্গে কথা বলার কারণ, ‘আমরা' নামের একটি সংগঠনের অন্যতম উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি জামায়াত-শিবিরের আক্রমণের শিকারদের সহায়তা দিয়েছেন ঘটনাস্থলে গিয়ে৷ তারপরও যোগাযোগ রেখেছেন, খোঁজখবর নিয়েছেন তাঁদের৷ কাকলির সঙ্গে কথা বললে সাজু মিয়া এবং অমিয় দাশের মতো শুধু একটি পরিবারের কথাই জানা যেত৷ ত্বিষা এই তিনজন তো বটেই, আরো অনেক অসহায় পরিবারের কথা জানেন৷

সাক্ষাৎকার

অবশ্য এর আগেও সায়ন্তনী ত্বিষার সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়েছে ডয়চে ভেলেতে৷ গত ৫ই মার্চ জামায়াত-শিবিরের সমর্থকরা আক্রমণ চালানোর পরপরই দেয়া সেই সাক্ষাৎকারে বাঁশখালির সর্বস্ব হারানো কিছু পরিবারের নিদারুণ দুর্গতির কথা ফুটে উঠেছিল তাঁর বর্ণনায়৷ তাঁদের অবস্থার এখনো খুব উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি৷ জামায়াত সমর্থকদের তৎপরতা এখনো দৃশ্যমান৷ তাই ব্যক্তি উদ্যোগে সাহায্য করতে গেলে বাধার মুখে পড়তে হয়৷ প্রশাসনের সহায়তা ছাড়া বাঁশখালিতে গিয়ে কাউকে সাহায্য-সহযোগিতা করা প্রায় অসম্ভব৷

কয়রায় সেরকম পরিস্থিতি অন্তত নেই৷ তবে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের চিত্র ভয়াবহ৷ সেখানে সাজু মিয়া তাঁর ভাই হত্যার বিচার চাওয়া তো দূরের কথা, জীবিকার তাগিদেও ঘর থেকে বেরোতে পারছেন না – এ খবর ত্বিষারও জানা৷ চলতি ধারাবাহিকের প্রথম পর্বে সাজু মিয়া নিজেই তাঁর অসহায়ত্বের কথা জানিয়েছেন বলে পুনরাবৃত্তি নাইবা হলো৷ সম্প্রতি দেয়া সায়ন্তনী ত্বিষার সাক্ষাৎকার শুনে বরং দেখা যাক বাস্তবতার কিছু বদলে যাওয়া রূপ৷ সরেজমিনে গিয়ে, আক্রান্ত এবং অন্যান্য সমাজকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে ত্বিষার ধারণা হয়েছে, জামায়াত-শিবির আক্রমনকারী বলে আক্রান্তদের সাহায্যে এগিয়ে যেতে ভয় পান অনেকে৷ তাই সাজু মিয়া, অমিয় দাশের মতো অসংখ্য অত্যাচারিতের সাহায্য প্রার্থনা নিভৃতেই কাঁদে৷

Shayantani Twisha , Journalistin und Sozialarbeiterin Bangladesh
সাংবাদিক ও সমাজকর্মী সায়ন্তনী ত্বিষাছবি: Shayantani Twisha

ত্বিষার আরেকটি অভিজ্ঞতালবদ্ধ পর্যবেক্ষণ বিশ্বাস করাই কঠিন৷ জামায়াত-শিবির সমর্থকদের হামলার শিকারদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাই সবচেয়ে বেশি অসহায়! অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে ত্বিষা ভেবেছিলেন আক্রান্তদের মধ্যে যাঁরা ‘সরকারি দলের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে জড়িত তাঁদের সাহায্য-সহযোগীতা করা ততটা জরুরি নয়, কেননা আর কারো দিকে না হলেও সরকার তো তাঁদের দিকে তাকাবেই৷ এ কথা ভেবে ত্বিষা সুন্দরগঞ্জে গিয়ে সাজু মিয়াদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ালেও হাফিজা বেগম কল্পনার কাছে গিয়ে শুধু সমবেদনা জানিয়েই ফিরে এসেছিলেন৷ ফল হয়েছে এই – বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক হয়েও সরকারের কাছ থেকে কোনো ক্ষতিপূরণ তো পানইনি, সমাজকর্মীদের কাছ থেকেও পাননি কিছুই৷ যে দেশে সরকার সমর্থক হলে নাকি ‘সাত খুন মাফ', কারো কারো বেলায় এখনো এ কথা সত্যি হলেও জামায়াত-শিবিরের হামলার শিকারদের অনেকেরই অভিজ্ঞতা বলছে ভিন্ন কথা৷

সাক্ষাৎকার: আশীষ চক্রবর্ত্তী

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য