1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাত্র ছয় ঘণ্টা অফিস?

৩০ মে ২০১৪

সুইডেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর গোথেনবুর্গে সেটাই পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে৷ কাজের সময় কমা মানেই যে উৎপাদন ক্ষমতা কমা, এমন নয়৷ এই যেমন এতে করে কর্মীদের মনমেজাজ ও স্বাস্থ্য ভালো থাকে৷ তবে এই নীতির সমালোচকও আছেন৷

https://p.dw.com/p/1C8yE
ছবি: Fotolia

সুইডেনে শীত বেশি, মানুষ কম, আর যাঁরা আছেন, তাঁরা সমৃদ্ধিতেই বাস করেন, তাড়াহুড়ো না করে, আদৌ জেরবার না হয়ে৷ এটাই হলো সুইডেনের বিশেষত্ব৷ মানুষজনের যেন প্রচুর অবসর; অথচ তাঁদের রোজগারপাতিও ভালো৷ এটা যে কি করে সম্ভব, সেটা বিদেশি-বহিরাগতরা প্রথমে বুঝে উঠতে পারেন না৷

অর্থীনিবিদদের কাছে উত্তরটা আংশিক: সুইডেনের উৎপাদনশীল ও সুশিক্ষিত শ্রমিকবৃন্দ, যাঁরা অন্যান্যদের চেয়ে শীঘ্র নতুন প্রযুক্তি শিখে নিয়ে তা কাজে লাগাতে পারে৷ নয়ত সুইডেনেও সাপ্তাহিক কাজের সময় ৪০ ঘণ্টা৷ কাজে কামাই হয়ত একটু বেশি আর সুইডিশরা উচ্চশিক্ষায় সময় দেন বলে তাঁদের কর্মজীবনও শুরু হয় একটু দেরিতে৷

Symbolbild Büro Schreibtisch
সুইডেনেও সাপ্তাহিক কাজের সময় ৪০ ঘণ্টাছবি: Fotolia/olly

হিসেব বলছে, ২০১২ সালে সুইডিশ বা সুইডরা গড়ে কাজ করেছেন ১,৬২১ ঘণ্টা৷ নেদারল্যান্ডসের মানুষ তার থেকেও কম কাজ করেছে: ১,৩৮১ ঘণ্টা৷ অপরদিকে ব্রিটিশরা তার থেকে বেশি: ১,৬৫৪ ঘণ্টা৷ আবার তাঁরাও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় কিছুই নয়: যুক্তরাষ্ট্র্রে মানুষজন কাজ করেছেন বছরে ১,৭৯০ ঘণ্টা৷ অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশের মানুষদের স্বভাবতই বেশি কাজ করতে হয়, তাই চিলির মানুষ কাজ করেছেন ২,০২৯ ঘণ্টা এবং মেক্সিকোর মানুষরা ২,২২৬ ঘণ্টা৷ এ সবই হলো অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংগঠন ওইসিডি-র পরিসংখ্যান৷

সুইডেনে যাঁরা কাজের সময় কমানোর পক্ষে, তাংদের যুক্তি হলো, কাজের সময় কমালে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়বে, কমবে না৷ আর ‘স্ট্রেস’-ও হবে কম৷ উৎপাদন ক্ষমতার বিচারে সুইডেন ইতিমধ্যেই বিশ্বে প্রথম জনা বারো দেশের মধ্যে পড়ে৷ গোথেনবুর্গ শহরের নগর প্রশাসন এবার তত্ত্বটা হাতে-নাতে পরীক্ষা করে দেখতে চলেছেন: আগামী ১লা জুলাই থেকে বয়োবৃদ্ধদের দেখাশোনা ও পরিচর্যার জন্য যে সব সরকারি কর্মী আছেন, তাঁদের একদলের কাজের সময় দিনে আট ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ছয় ঘণ্টা করা হচ্ছে; বাকিদের কাজের সময় আট ঘণ্টাই থাকবে৷ এক বছর পরে তুলনা করে দেখা হবে, কোন পদ্ধতিতে সাশ্রয় বেশি – যেমন যে কর্মীরা ছয় ঘণ্টা কাজ করেছেন, তাঁদের অসুখের জন্য কামাই কম হয় কিনা৷

কাজের সময় কম করার বিরোধীরা বলছেন, বৃহত্তর অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে শ্রমজীবীদের কাজের সময় এক ধাক্কায় ২৫ শতাংশ কমিয়ে দেওয়ার কোনো প্রশ্নই উঠতে পারে না! সাপ্তাহিক কাজের সময় কম করার প্রচেষ্টা ইউরোপের অন্যান্য দেশেও হয়েছে: ফ্রান্স এবং জার্মানিতে তা কমিয়ে ৩৫ ঘণ্টা করা হয়েছে; এমনকি নেদারল্যান্ডসে আরো কম, গড়ে ৩০ ঘণ্টা৷ তার ফলাফল যে সর্বত্র এক হয়েছে, এমন নয়৷

সরকারি থেকে বেসরকারি পর্যায়ে গেলে দেখা যাবে, শিল্পসংস্থারাও ব্যাপারটা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে৷ গোথেনবুর্গে জাপানি টয়োটা গাড়ি কোম্পানির শাখায় দিনে আট ঘণ্টার শিফটের পরিবর্তে দু'টি ছয় ঘণ্টার শিফট প্রচলন করা হয়েছে: প্রথমটি সকালের শিফট, দ্বিতীয়টি দুপুরের শিফট৷ বলতে কি, টয়োটা এই ছয় ঘণ্টার শিফট চালু করে আজ থেকে ১২ বছর আগে৷

টয়োটা সার্ভিস সেন্টারের ম্যানেজার এলিজাবেথ জনসন বলেছেন: ‘‘এটা গোড়া থেকেই বিপুলভাবে সফল৷ আমরা তার ফলাফল দেখেছি: কর্মী, সংস্থা বা গ্রাহক, সকলের পক্ষেই তা ইতিবাচক৷ কাজেই এই প্রণালী বদলানোর ব্যাপারে কোনো আলোচনাই হয়নি৷''

এসি/ডিজি (এএফপি, এপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য