1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আফগানিস্তান নিয়ে মতভেদ মার্কিন কর্মকর্তাদের

১৬ আগস্ট ২০১০

আফগানিস্তান নিয়ে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এক রকম পরিকল্পনা করলেও, ভিন্ন সুরে কথা বলছেন সেখানে ন্যাটো বাহিনীর অধিনায়ক জেনারেল ডেভিড পেট্রেয়াস৷ তিনি বলেন, আফগানিস্তানে সৈন্য কতদিন থাকবে, তা নির্ভর করবে পরিস্থিতির ওপর৷

https://p.dw.com/p/Ooeu
আফগানিস্তানে মার্কিন সৈন্যছবি: AP

প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়া পরপরই আফগানিস্তানে সৈন্য সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন ওবামা৷ তাঁর উদ্দেশ্য ছিল, যুদ্ধ দ্রুত শেষ করে সৈন্যদের দেশে ফিরিয়ে আনা৷ ঠিক করেছিলেন, আগামী বছরের মাঝামাঝি থেকেই সৈন্য প্রত্যাহার শুরু হবে৷ কিন্তু পরিস্থিতি সে কথা বলছে না৷ ২০০১ সালে অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত সেখানে নিহত হয়েছে ২ হাজার বিদেশি সৈন্য৷ কমেনি সহিংসতাও৷ আর এর মধ্যেই, আফগানিস্তানে ন্যাটো বাহিনীর সমর অধিনায়ক মার্কিন জেনারেল পেট্রেয়াস বললেন, আগামী বছর থেকে সৈন্য প্রত্যাহার শুরু হবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই৷ সবকিছু নির্ভর করবে পরিস্থিতির ওপর৷ বিষয়টি নিয়ে প্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে কথাও বলেছেন তিনি৷

গতকাল রোববার এনবিসি টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পেট্রেয়াস বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ওভাল অফিসে বসেই আমার কথা হয়েছে৷ তিনি স্পষ্ট করেই বলেছেন, যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে আমার বিশ্লেষণের ওপর তাঁর ভরসা আছে৷ আর আমিও আমার দায়িত্বটি ভালোভাবেই বুঝি৷ তাই যে কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের নিতে হবে পরিস্থিতি বুঝে৷ কোনো সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনার প্রয়োজন পড়লে, আমি আগে থেকেই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলব৷

NO FLASH - US Marines in Afghanistan
২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত আফগানিস্তানে নিহত হয়েছে ২ হাজার বিদেশি সৈন্যছবি: AP

ইরাক যুদ্ধের কৃতিত্বধারী পেট্রেয়াস কয়েক মাস আগেই আফগানিস্তানের দায়িত্ব নিয়েছেন৷ আর এরপর এই প্রথম কোনো টেলিভিশনকে সাক্ষাৎকার দিলেন তিনি৷ পেট্রেয়াসের কথা হলো, আফগানিস্তানে সফলতা মাত্র আসতে শুরু করেছে৷ তাই সৈন্য প্রত্যাহারের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এখনো আসেনি৷ পেট্রেয়াস যখন এই কথা বলছেন, তখনই অন্য কথা বললেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট গেটস৷ সেনা কর্মকর্তা হিসেবে পেট্রেয়াস আবার তাঁরই অধীন৷ গেটস সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘২০১১ সালের জুলাই মাস থেকেই সৈন্য প্রত্যাহার শুরু হবে৷ আর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কারো মনে কোনো সন্দেহ থাকা ঠিক নয়৷'' সরাসরি না বললেও পেট্রেয়াসকে ইঙ্গিত করেই যে তাঁর এই বক্তব্য, তা আর বলার অপেক্ষা করে না৷ আর এটাও বোঝা যাচ্ছে যে, দুই সহযোগীর ভিন্ন অবস্থানের কারণে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে প্রেসিডেন্ট ওবামাকে বেশ বেগ পেতে হবে৷

ওদিকে, মার্কিন কর্মকর্তাদের এই মতভেদের মধ্যেই তালেবান জানিয়েছে, আফগানিস্তানে বেসামরিক মানুষ হত্যার ঘটনায় যদি আন্তর্জাতিক তদন্ত হয়, তবে তাতে সহায়তা দিতে রাজি তারা৷ আজ সোমবার, এক বিবৃতিতে তারা একথা জানায়৷ এছাড়া, তদন্ত দলে তালেবান প্রতিনিধিকেও রাখতে হবে বলে জানানো হয় বিবৃতিটিতে৷ তবে তালেবান গোষ্ঠীর পাশাপাশি, দলটিতে জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংগঠন এবং ন্যাটো বাহিনীর প্রতিনিধিও থাকতে পারে৷

উল্লেখ্য, জাতিসংঘ এক সপ্তাহ আগে জানিয়েছিল, বোমা হামলা ও সামরিক অভিযানে নিরীহ আফগানের হতাহতের সংখ্যা ৩১ শতাংশ বেড়েছে৷ যার জন্য দায়ী মূলত তালেবান৷ তবে এই জঙ্গি গোষ্ঠী এই দায় মাথায় নিতে নারাজ৷ তারা বলেছে, ন্যাটো হামলাতেই নিরীহ মানুষ মারা পড়ছে বেশি৷ আর পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমগুলো সে খবর ঢেকে রেখে তালেবানের ওপর দোষ চাপাচ্ছে৷

পেট্রেয়াস অবশ্য আবারো তালেবানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে সম্মতির কথা জানিয়েছেন৷ এ কথা আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইও বলে আসছিলেন৷ পেট্রেয়াস বলেন, ‘‘আমাদের বুঝতে হবে, হামিদ কারজাই একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট৷ আমাদের লক্ষ্য এক৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের মতের মিল রয়েছে৷ আর কিছু কিছু ক্ষেত্রে মতের অমিল থাকলেও, তা মোটেই অস্বাভাবিক নয়৷''

প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ