নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া উচিত বলে মনে করছেন পাঠক মোহাম্মদ রাশেদ৷ এর কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন ‘‘আমাদের দেশে এখন হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি হওয়া নিত্যদিনের ব্যাপার আর সেখানে নির্যাতিত মুসলিম ভাইদের একটু ঠাঁই দিলে কি দেশের ওপর বাড়তি চাপ পরবে? তাছাড়া পবিত্র কুরআনে বর্ণিত আছে, যে যেই ব্যক্তি নিরপরাধ মানুষের জীবন রক্ষা করে, সে সমগ্র মানবজাতিকে রক্ষা করে৷''
আর জলিলুর রহমানের ধারণা, মানুষ হয়ে যদি মানবতা না থাকে তবে সে মানব জীবন মুল্যহীন আর সেই মানবিক কারণেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া উচিত৷
পাঠক সোনিয়ার মতে কে কোন ধর্মের আর কোন দেশের সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়, কারণ, ‘‘আমাদের একটাই পরিচয়, আমরা সবাই মানুষ আর সবার রক্তের রং লাল৷'' আর তাই তিনি মনে করেন রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া উচিত৷
-
বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের কথা
সহিংসতা
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৮৬ জন প্রাণ হারিয়েছে৷ গৃহহীন হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার জন৷ অক্টোবরের ২৭ তারিখে তোলা এই ছবিতে ঐ রাজ্যের একটি গ্রামের বাজার দেখা যাচ্ছে, যেটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল৷ শিশুরা সেখান থেকে বিভিন্ন জিনিস সংগ্রহ করছে৷
-
বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের কথা
পালিয়ে বাঁচা
সহিসংতা থেকে বাঁচতে নভেম্বরের ১৯ থেকে ২১ তারিখ শত শত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের ত্রাণকর্মীরা৷ উপরের ছবিটি ২১ নভেম্বরের৷ কক্সবাজারের কুটুপালাং শরণার্থী কেন্দ্রে বসবাসরত রোহিঙ্গা নারীরা নতুন আসা শরণার্থীদের দেখছেন৷
-
বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের কথা
নতুন শরণার্থী
মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত পার হয়ে কুটুপালাং শরণার্থী কেন্দ্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন নতুন শরণার্থীরা৷
-
বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের কথা
ধরা পড়ায় কান্না
অবৈধভাবে বাংলাদেশ সীমান্ত পার হওয়ায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সদস্যরা তাদের ধরেছে৷ মুসলিম নারী ও তাঁর সন্তানরা তাই কাঁদছেন৷
-
বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের কথা
অপেক্ষা
কুটুপালাং ক্যাম্পে ঢোকার অপেক্ষায় নতুন আসা রোহিঙ্গারা৷
-
বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের কথা
সন্তানসহ মা
মুসলিম এই রোহিঙ্গা নারী তাঁর সন্তানকে নিয়ে কুটুপালাং শিবিরে ঢোকার অপেক্ষায় আছেন৷
-
বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের কথা
শরণার্থী শিশু
কুটুপালাং শরণার্থী কেন্দ্রের রোহিঙ্গা শিশুরা স্কুলে পড়াশোনার ফাঁকে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আছে৷
-
বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের কথা
আদি বাসিন্দা
কুটুপালাং ক্যাম্পে নিজেদের বাড়িতে শিশুরা৷
-
বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের কথা
বাড়ির আঙিনায়
একজন রোহিঙ্গা নারী তাঁর সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে কুটুপালাং শরণার্থী শিবিরে তাঁর বাড়ির সামনে বসে আছেন৷
তবে পাঠক এস রহমান কিন্তু মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার কথা বলেছেন ঠিকই, কিন্তু তিনি আবার সরকারকে সতর্কও করে দিয়েছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘রোহিঙ্গারা যাতে মূল ভুখন্ডের বাসিন্দাদের সাথে মিশে না যায়, সে কারণে প্রাথমিকভাবে ক্যাম্প করে দিতে হবে৷ তাছাড়া তারা যেন (ফিরে গিয়ে) স্বদেশে সম্মানের সাথে বেঁচে থাকতে পারে, সে জন্য বিশ্ব জনমত তৈরি করে মিয়ানমারকে চাপ প্রয়োগ করতে হবে৷ আর এ ব্যাপারে প্রতিবেশী দেশ হিসাবে অগ্রনী ভুমিকা বাংলাদেশকেই পালন করতে হবে৷''
এদিকে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার পক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে মৃধা লিখেছেন, ‘‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশিরাও তো ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল, তবে এখন কেন বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা আশ্রয় পাবেনা ?'' রাজু আহমেদও মৃধার সাথে একমত পোষন করেন৷
পাঠক পারভেজও মনে করেন এই মুহূর্তে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া উচিত৷
তবে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে পুরোপুরি ভিন্নমত পাঠক সুত্রধর মিলনের৷ যাঁরা আশ্রয় দেওয়ার পক্ষে , তাদের উদ্দেশ্য করে ফেসুকে মিলন লিখেছেন, ‘‘ত্রকদিন রোহিঙ্গারা দেশে সন্ত্রাস করবে তা লিখে রাখুন দরদী ভাইরা৷''
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী
-
রোহিঙ্গাদের ‘যুদ্ধের’ যেন শেষ নেই
আটকে পড়া
গত ১০ মে চারটি নৌযানে করে ইন্দোনেশিয়ার আচে প্রদেশে প্রবেশ করে ৬০০ রোহিঙ্গা৷ একই সময়ে লাংকাওইতে প্রবেশ করে প্রায় এক হাজার রোহিঙ্গা৷ সমুদ্র থেকে স্থলে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ তাঁদের ঘিরে ফেলে৷ ভাগ্যান্বেষণে দেশ ছাড়া মানুষগুলো এখনো মুক্ত নয়৷
-
রোহিঙ্গাদের ‘যুদ্ধের’ যেন শেষ নেই
ক্লান্ত
মানবপাচারকারীরা তাঁদের ছেড়ে যাওয়াতে সমুদ্রবক্ষে বিপদেই পড়েছিলেন রোহিঙ্গারা৷ আনুমানিক সপ্তাহ খানেক সমুদ্রপথে ঘুরে অবশেষে ভীষণ ক্ষুধার্ত এবং ক্লান্ত অবস্থায় তাঁরা ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছান৷ দীর্ঘ অর্ধাহার, অনাহারে অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেকে৷ তাঁদের চিকিৎসা চলছে৷
-
রোহিঙ্গাদের ‘যুদ্ধের’ যেন শেষ নেই
ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা
প্রতিবছর এভাবেই মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে শত শত রোহিঙ্গা৷ মিয়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কিছু বাংলাদেশিও থাকেন সব সময়৷ ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী তোলায় অনেক নৌযান ডুবে যায় সাগরে, সলিলসমাধি হয় অনেকের৷ জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, এ বছরের প্রথম তিন মাসে ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ছেড়েছেন অন্তত ২৫ হাজার রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি৷
-
রোহিঙ্গাদের ‘যুদ্ধের’ যেন শেষ নেই
ওদের কোনো দেশ নেই!
বৌদ্ধপ্রধান দেশ মিয়ানমারে ৮ লক্ষের মতো রোহিঙ্গা মুসলমানের বাস৷ তবে সংখ্যাটা দ্রুতই কমছে৷ বৌদ্ধদের সঙ্গে দাঙ্গার কারণে দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন অনেকেই৷ মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকারই করে না৷ তাদের মতে, রোহিঙ্গারা ‘বাংলাদেশি অভিবাসী’৷ আবার বাংলাদেশে আশ্রয় নিলে ঐতিহাসিক কারণেই তাঁদের মিয়ানমার থেকে আগত বহিরাগতের মর্যাদা দেয় বাংলাদেশ৷
-
রোহিঙ্গাদের ‘যুদ্ধের’ যেন শেষ নেই
আধুনিক দাস-বাণিজ্য
মানবপাচারকারীদের কাছে সমুদ্রপথে বাংলাদেশ ছাড়া রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশিরা যেন ক্রীতদাস৷ মাত্র ২০০ ডলারের বিনিময়ে নির্বিঘ্নে মালয়েশিয়ায় পৌঁছে দেয়ার কথা বলে নৌযানে তুললেও যাত্রীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হয়৷ খেতে না দেয়া, ছোট্ট জায়গায় গাদাগাদি করে থাকতে বাধ্য করা, শারীরিক নির্যাতন – বলতে গেলে সব ধরণের অত্যাচারই চলে তাঁদের ওপর৷
-
রোহিঙ্গাদের ‘যুদ্ধের’ যেন শেষ নেই
থাইল্যান্ড নিয়ে আতঙ্ক
রোহিঙ্গারা থাইল্যান্ডেও যান৷ জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, ২০১২ সালে আড়াই লাখ মানুষ অবৈধভাবে থাইল্যান্ডে প্রবেশ করেছেন৷ অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য থাইল্যান্ড অবশ্য একেবারেই নিরাপদ ঠিকানা নয়৷ মানবপাচারকারীরা সে দেশে নিয়ে অভিবাসন প্রত্যাশীদের জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি করে৷ মুক্তিপণ না দিলে মেরেও ফেলা হয়৷ সম্প্রতি মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে বেশ কিছু গণকবরের সন্ধান পেয়েছে থাই সরকার৷
-
রোহিঙ্গাদের ‘যুদ্ধের’ যেন শেষ নেই
পরিত্যক্ত
থাইল্যান্ড সরকারের অভিযান শুরুর পর অনেক রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশিকে গভীর জঙ্গলে ফেলে পাচারকারীরা পালিয়ে যায়৷ মালয়েশিয়া সীমান্তের কাছের জঙ্গল থেকে উদ্ধার করে এ পর্যন্ত অন্তত শ’ খানেক অভিবাসন প্রত্যাশীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে থাই কর্তৃপক্ষ৷
লেখক: গাব্রিয়েল ডমিনগেজ/এসিবি