1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মামলার তদন্তে আল-কায়েদার দাবির প্রভাব

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৪ মে ২০১৫

আল-কায়েদা ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করার পর, মামলার তদন্তকারীরা বিষয়টির নানা দিক নিয়ে ভাবছেন৷ দায় স্বীকারকে উড়িয়ে না দিলেও, এর ফলে মামলার তদন্তে কোনো নাটকীয় মোড় নেবে না বলে মনে করেন তাঁরা৷

https://p.dw.com/p/1FJlw
Bangladesch Protest gegen Ermordung von US-Blogger (Bildergalerie)
ছবি: DW

জঙ্গি গোষ্ঠী আল-কায়েদার পক্ষ থেকে শুধু অভিজিৎ নয়, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মোট ছ'জন ব্লগার, শিক্ষক ও লেখককে হত্যার দায় স্বীকার করা হয়েছে৷ অভিজিৎ রায় ছাড়াও তারা ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবু, রাজীব হায়দার এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক একেএম সাইফুল ইসলামকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে৷ এছাড়া পাকিস্তানে এক নারীসহ দু'জনকে হত‌্যার কথা স্বীকার করেছে তারা৷ এঁরা হলেন করাচির ড. শাকিল এবং আনিকা নাজ৷

শনিবার জিহাদিস্ট ফোরাম নামের একটি ওয়েবসাইটে ভিডিও প্রকাশের মাধ্যমে এই হত্যার দায় স্বীকার করেন আল-কায়েদার ভারতীয় উপ-মহাদেশের প্রধান আসিম উমর৷ যুক্তরাষ্ট্রের অনলাইনভিত্তিক জঙ্গিবিরোধী আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা প্রতিষ্ঠান ‘দ্য সার্চ ফর ইন্টারন্যাশনাল টেরোরিস্ট এনটিটিস' (এসআইটিই) এই তথ্য সংবাদমাধ্যমকে জানায়৷ তারা বলে, এই ছ'জনকে হত্যার দায় স্বীকারের পাশাপাশি অন্যান্য ইসলাম বিদ্বেষীদের হত্যা অব্যাহত থাকবে বলেও হুমকি দিয়েছে আল-কায়েদা৷

ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ও আনসার বাংলা-৭ নামে দু'টি জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা জড়িত৷ তাদের সঙ্গে আল-কায়েদার যোগাযোগ থাকতেই পারে৷ আমরা এর আগেও এই জঙ্গিদের সঙ্গে আল-কায়েদার সম্পর্ক থাকতে পারে বলে জানিয়েছি৷ কারণ এর আগে যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের কাছ থেকে আল-কায়েদা মতাদর্শের বই ও প্রমাণপত্র উদ্ধার করেছি আমরা৷''

এদিকে ব্লগার রাজিব হত্যা মামলায় যাদের শাস্তি হয়েছে, তারা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য৷ আর ওয়াশিকুর রহমান বাবু হত্যায় ঘটনাস্থল থেকেই দু'জনকে আটক করা হয়৷ উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লাব কুমার সরকার ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘ওয়াশিকুর রহমান বাবু হত্যায় যে দু'জন মাদ্রাসা ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারাও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য৷ তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এটা স্পষ্ট যে, তারাও আল-কায়েদার ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ৷ তবে তারা সিনিয়রদের নির্দেশে কাজ করে৷ তার ওপরের ব্যক্তিদের ব্যাপারে তাদের তেমন ধারণা নেই৷''

এদিকে অভিজিৎ রায় হত্যার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত হিযবুত তাহরির সদস্য শাফিউর রহমান ফারাবীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ সে ফেসবুকে অভিজিৎকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল৷ তবে গোয়েন্দারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নিশ্চিত হতে পারেনি যে সে অভিজিৎ হত্যায় সরাসরি জড়িত কিনা৷

যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘তবে ফারাবী হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে তথ্য দিয়েছে৷ আর আমরাও কারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সে সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছি৷ এখন তাদের গ্রেপ্তারের অপেক্ষা৷ এটুকুই বলবো, তারা একটি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত৷''

তিনি বলেন, অভিজিৎ হত্যা মামলার তদন্তে সহায়তার জন্য আসা এফবিআই প্রতিনিধিরাও মনে করেন যে, উগ্রবাদীরা অভিজিৎকে হত্যা করেছে৷ আগত হয়েছেন তাঁর স্ত্রী বন্যাও''

র‌্যাব-এর মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার মোহাম্মদ মুফতি মাহমুদ খান সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘‘জঙ্গিরা যে অভিজিৎ রায়সহ আরও কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, এটা নিশ্চিত৷ তবে হত্যাকাণ্ডে আল-কায়েদা গোষ্ঠী জড়িত কিনা, তা নিশ্চত নয়৷'' তাঁর মতে, ‘‘এমনও হতে পারে যে আল-কায়েদা তাদের প্রচারের জন্য এই কৌশল নিতে পারে৷ নয়ত অভিজিৎ হত্যার দু'মাস পর কেন তারা দায় স্বীকার করবে?''

ওদিকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল বলেছেন, ‘‘অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আল-কায়েদা আদৌ জড়িত কিনা, তা খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷ তারা যে দাবি করেছে তা কতটুকু সঠিক তা নিশ্চিত করবেন গোয়েন্দারা৷''

প্রসঙ্গত, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি একুশে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির উল্টো দিকে ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা৷ একই ঘটনায় তাঁর স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও গুরুতর আহত হন৷ বন্যা এখন যুক্তরাষ্ট্রে আছেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান