1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইইউ-এর কাছ থেকে বাংলাদেশ পাচ্ছে ৮৫ লাখ ইউরো

৪ জুন ২০১০

জলবায়ু পরির্বতন ঠেকাতে প্রয়োজন বিশ্ব নেতৃবৃন্দের ঐকমত্যের বিষয়টির প্রতিই লক্ষ্য রেখে চলছে এখন নানা আলোচনা৷ বিশেষজ্ঞদের অভিমত চলতি বছরের শেষ নাগাদ মেক্সিকোতে কোপ-১৬ সম্মেলনে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে আসতে হবে একটি একক সিদ্ধান্তে৷

https://p.dw.com/p/Nhj1
ছবি: DW

সিদ্ধান্তটি গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নের সঠিক রুপরেখা বাস্তবায়নে নিতে হবে পরিকল্পনা৷ তাই চলছে আলোচনা৷ বড় দেশগুলো গুটি গুটি পায়ে এগিয়েও আসছে৷ এই তো দিন কয়েক আগে ঢাকায় শেষ হলো বাংলাদেশসহ আট দেশের সমন্বয়ে গঠিত বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন শীর্ষক আঞ্চলিক সম্মেলন৷ এই সম্মেলনেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ঘোষণা আসলো তারা বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তনে করণীয় কৌশল বাস্তবায়নে এ বছরই বাংলাদেশকে ৮৫ লাখ ইউরো প্রদান করবে৷

সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনে কার্যকর কৌশল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, মালদ্বীপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে একটি চুক্তিও হয়েছে৷ সম্মেলনে আসন্ন মেক্সিকো জলবায়ু সম্মেলন সফল করার বিষয়টিই প্রাধান্য পায়৷ দু'দিনব্যাপী এই সম্মেলন শেষ হয় সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে৷ বাংলাদেশের পরিবেশ এবং বন প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ইইউ কমিশনার ফর ক্লাইমেট এ্যাকশন কনি হেডেগার্ড কথা বলেন, সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দেন৷

এসময়ই জানানো হয় যে সম্মেলনে বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, মালদ্বীপ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে একটি যৌথ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে৷ চুক্তি অনুযায়ী ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ সব দেশের জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল বাস্তবায়নের আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে৷ চুক্তিটি বাকি দেশগুলোর জন্যও উন্মুক্ত আছে৷ ইচ্ছে করলে এশিয়ার অন্য ছোট ছোট দেশ স্বাক্ষর করতে পারে৷ এসব দেশ কৌশল বাস্তবায়নে পরস্পরের অভিজ্ঞতা এবং কারিগরি সহায়তা আদান-প্রদান করবে৷ একই সঙ্গে তারা উন্নত দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে চাপ সৃষ্টি করবে৷ এসব দেশের কার্যক্রমকে সমন্বয় করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ধনী দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবে৷

অনেকই বলেন গত বছরের ডিসেম্বরে কোপেনহেগেন সম্মেলন ছিল ব্যর্থ৷ বাংলাদেশের পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ কিন্তু এই বক্তব্যের সঙ্গে মোটেই এক মত নন৷ তিনি মনে করছেন, কোপ-১৫ নামের কোপেনহেগেন সম্মেলন কার্যত ব্যর্থ হয়নি৷ এখানে একটি আইনী বাধ্যবাধকতা আরোপ করে চুক্তি না হলেও এই সম্মেলন থেকে কিছু ইতিবাচক দিকও বেরিয়ে এসেছে৷ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে রাজনৈতিক নেতাদের সদিচ্ছা প্রকাশ পেয়েছিল৷ তাঁর কথা হচ্ছে, আসন্ন মেক্সিকো সম্মেলনে আবারও ওই চুক্তিটি আদায়ের চেষ্টা করবে বাংলাদেশ৷

২০০৮ থেকে ২০১০ সাল মেয়াদে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় জোটকে আর্থিক সহায়তা দিতে ১০ কোটি ইউরোর তহবিল গঠন করেছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজেট এবং সুইডেন ও চেক প্রজাতন্ত্রের দ্বিপক্ষীয় অনুদান সহায়তা নিয়ে এই তহবিল করা হয়েছে৷ এ ছাড়া আফ্রিকা, ক্যারিবীয় এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক সহায়তার জন্য দশম ইউরোপীয় উন্নয়ন তহবিলের আওতায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪ কোটি ইউরো৷ চলতি বছরের শেষ নাগাদ এই সব অর্থ ছাড় দেয়া শুরু হবে৷ বিশেষ করে বাংলাদেশসহ ২০ দুর্যোগপূর্ণ দেশে এই অর্থ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে উল্লেখ করেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের কমিশনার ফর ক্লাইমেট এ্যাকশন কনি হেডেগার্ড৷ তিনি বলেন, এ বছরের শেষ নাগাদ বাংলাদেশকে দেয়া হবে ৮৫ লাখ, কম্বোডিয়াকে ২২ লাখ, মালদ্বীপকে ৩৮ লাখ, রুনয়ান্ডাকে ৪৫ লাখ ইউরো৷

কনি হেডেহার্ডের কথায় কোপেনহেগেন সম্মেলনের ব্যর্থতাকে সাফল্যে পরিণত করতে আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে৷ কোপেনহেগেনে যা সম্ভব হয়নি মেক্সিকোতে তা সফল করাই হবে এখন আমাদের প্রধান এজেন্ডা৷ এ জন্য বাংলাদেশসহ সংশিস্নষ্ট দেশগুলোকে একযোগে কাজ করা এবং পারস্পরিক সহায়তা বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি৷ অর্থের স্থায়ী সমাধান এবং টেকসই পরিবেশ উন্নয়নে কার্যকর একটি চুক্তি করাই হবে মেক্সিকো সম্মেলনের প্রধান উদ্দেশ্য৷ তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধে বিশ্বজনমত বাড়ছে৷

কোপেনহেগেন সম্মেলন অনেকেটাই ব্যর্থ হওয়ার পর এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১০০ টি দেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় এগিয়ে এসেছে, এ তথ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের৷ বিশ্বের মুষ্টিমেয় যে সব ধনী দেশ পরিবেশ দূষণ ঘটাচ্ছে তেমনি স্বল্পোন্নত ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে যারা সবচেয়ে ক্ষতিরমুখে রয়েছে তারা তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছে৷ এই জনমত কাজে লাগিয়ে আসন্ন মেক্সিকো জলবায়ু সম্মেলনে একটি বিধিবদ্ধ চুক্তি আদায়ের চেষ্টা করবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু বিষয়ক কমিশনার বলছেন, বাংলাদেশসহ যে সব দরিদ্র দেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে তাদের পক্ষে কাজ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷

প্রতিবেদন : সাগর সরওয়ার

সম্পাদনা : আবদুস সাত্তার