1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘রামপালে অনাপত্তি' কোথায়?

৭ জুলাই ২০১৭

রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আপত্তি তুলে নিয়েছে ইউনেস্কো – পোল্যান্ডে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির সভা চলাকালেই সরকারের এ মন্তব্যে চলছে তোলপাড়৷ সভার ভিডিও, এমনকি ইউনেস্কোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সিদ্ধান্তেও নেই এমন কোনো তথ্য৷

https://p.dw.com/p/2g97u
Bangladesch Sundarbans Mangrovenwald Khulna Rehe
ছবি: Imago/UIG

ইউনেস্কোর অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির ৫ তারিখের সভার ভিডিও সরাসরি প্রচারিত হয়েছে৷ প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার এই সেশনের দু'ঘণ্টা ৩৬ মিনিটে শুরু হয় বাংলাদেশের সুন্দরবন নিয়ে আলোচনা৷ প্রায় আধ ঘণ্টার এ আলোচনায় অংশ নেয় বাংলাদেশ ছাড়াও দশটি দেশ এবং পরিবেশবাদী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার-আইইউসিএন৷

ইউনেস্কোর ওয়েবসাইটে দেয়া খসড়া প্রস্তাবে দেখা যায়, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ঘুরে যাওয়া হেরিটেজ কমিটি ও আইইউসিএন প্রতিনিধি দলের সব সুপারিশ বাস্তবায়নে আবারও জোর দাবি জানানো হয়েছে৷ একই সাথে বলা হয়, এখনই ঝুঁকিপূর্ণ ঐতিহ্যের যেসব লক্ষণ দেখা যায়, সুন্দরবনে তা নেই৷ তবে, মিঠাপানির প্রবাহ, সুন্দরবনের আশেপাশে বড় আকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং সুন্দরবনের আউটস্ট্যান্ডিং ইউনিভার্সার ভ্যালু ঠিক রাখতে সমন্বিত পরিকিল্পনার অভাব রয়েছে৷

এ সব কারণে অচিরেই সুন্দরবনের অপূরণীয় ক্ষতি হবার আশংকা হেরিটেজ কমিটি এবং আইইউসিএন-এর৷ এজন্য এই সভাতেই সুন্দরবনকে ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় নেয়ার সুপারিশও করা হয়৷

তবে এই বিষয়ে সর্বপ্রথম আপত্তি তোলে তুরস্ক৷ তুরস্কের মূল বক্তব্য ছিল, সুন্দরবনের পরিবেশ ও মিঠা পানির প্রবাহ নিয়ে দু'পক্ষের দ্বিমত রয়েছে৷ ফলে, মতপার্থক্য নিরসনে আরো সময় প্রয়োজন বলে মনে করে দেশটি৷ এছাড়া পরিবেশ সমীক্ষা করতে বাংলাদেশের রাজি হওয়া এবং সুন্দরবনের জটিল নদীব্যবস্থা পরিচালনা, এ সব যুক্তি দেখিয়েও বাংলাদেশকে আরো সময় দেয়ার অনুরোধ জানায় তুরস্ক৷

তুরস্কের বক্তব্যকেই সমর্থন করে লেবানন, কুয়েত, আজারবাইজান, ইন্দোনেশিয়া, পর্তুগাল, অ্যাঙ্গোলা এবং তানজানিয়া৷ ২০১৬ সালে দেয়া সুপারিশ বাস্তবায়নে মত জানায় জিম্বাবোয়ে৷ রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বন্ধের আহ্বানও জানায় দেশটি৷ তবে একই সাথে নিজেদের অবস্থান ব্যাখার জন্য বাংলাদেশকে আরো সময় দিতেও অনুরোধ জানায় জিম্বাবোয়ে৷

এদিকে, মূল সুপারিশ, অর্থাৎ এখনই সুন্দরবনকে ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় স্থানান্তরের বিষয়ে একমত হলেও সভার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার কথা জানান ফিনল্যান্ডের প্রতিনিধি৷

ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম ছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী৷ তৌফিক-ই-ইলাহী তাঁর বক্তব্যে বরাবরের মতোই সুন্দরবন রক্ষায় সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন৷

ইউনেস্কো রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাংলাদেশি সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া বিবৃতিতে এমন তথ্য দেয়া হলেও, ইউনেস্কোর আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তে পাওয়া যায়নি এমন কোনো কথা৷

আলোচনার পর – রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ বা স্থানান্তর না করলে ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় স্থানান্তর করা হবে – এই অংশটুকু খসড়া থেকে বাদ দেয়া হয়৷ কিন্তু সভার সিদ্ধান্ত বা আলোচনা, কোনো অংশেই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বিষয়ে অনাপত্তি, বা ছাড়পত্র দেয়ার মতো কোনো কিছুই ছিল না৷

সুন্দরবনের কাছেই প্রস্তাবিত অরিয়ন বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ বাতিল করায় সিদ্ধান্তে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে বাংলাদেশকে৷ অপর দু'টি বক্তব্যে ২০১৬ সালে হেরিটেজ কমিটি এবং আইইউসিএন-এর করা সুপারিশ পূর্ণ বাস্তবায়ন করতেও অনুরোধ করা হয়েছে গৃহীত সিদ্ধান্তে৷

পশুর নদীর খননে পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা (ইআইএ) না করায় উদ্বেগও প্রকাশ করে ইউনেস্কো৷ সবশেষ, সুন্দরবন সংরক্ষণ নিয়ে আপডেট প্রতিবেদন এবং বাকি সব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের প্রতিবেদনও ২০১৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির কাছে জমা দিতে অনুরোধ করা হয়েছে৷

খসড়াতে এর পরই ছিল সব সুপারিশ না মানলে ২০১৮ সালে কমিটির পরবর্তী বৈঠকে ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় সুন্দরবনের নাম নেয়ার হুঁশিয়ারি৷ তবে গৃহীত সিদ্ধান্ত শুধু বাদ পড়েছে এই অংশটুকুই৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য