1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপীয় বনাম আফ্রিকান ফুটবল

৩ জুন ২০১০

কোয়ার্টার ফাইনাল - এই হলো বিশ্বকাপ ফুটবলে আফ্রিকার কোনো দলের সেরা সাফল্য৷ তাও মাত্র দু’বার৷ প্রথমবার ১৯৯০ সালে৷ সেবার কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল ক্যামেরুন৷ আর পরের বার ২০০২ সালে সেনেগাল৷

https://p.dw.com/p/NgVB
ছবি: DW

তবে যুব বিশ্বকাপে একবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ঘানা৷ আর বিশ্ব জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে রানার্সআপ হয়েছিল নাইজিরিয়া৷ মোটের উপর এই হলো বিশ্ব ফুটবলে আফ্রিকার অবস্থান৷

আর ইউরোপীয় ফুটবল? মনে হয় এটা নিয়ে বলার কিছু নেই৷ মোটামুটি সবাই জানে বিশ্ব ফুটবলে তাদের সাফল্য আর খ্যাতি সম্পর্কে৷ সব বিশ্বকাপেই ইউরোপ থেকে সবচেয়ে বেশি দল অংশগ্রহণ করে থাকে৷ যেমন এবারের বিশ্বকাপে থাকছে ১৩টি দল৷ অন্যদিকে আফ্রিকা থেকে ৬টি৷

তবে সাফল্যই তো আর সব বিচারের মাপকাঠি নয়৷ কে ভাল বা দৃষ্টিনন্দন ফুটবল খেললো তাও কিন্তু দেখে দর্শকরা৷ এদিক দিয়ে একসময় ইউরোপের চেয়ে এগিয়ে ছিল আফ্রিকা৷ বলছি গত শতকের আশি/নব্বই দশকের কথা৷ ‘পাওয়ার প্লে' আর হঠাৎ করে আক্রমণ চালিয়ে প্রতিপক্ষকে বোকা বানিয়ে বল জালে জড়ানো - এই ছিল আফ্রিকার ফুটবল৷ কোনো কোনো খেলোয়াড়ের ব্যক্তিগত পারফরমেন্সের উপর ভর দিয়েও অনেক সময় আফ্রিকার দলগুলো সাফল্য পেয়েছে৷

Flash-Galerie WM Fans Uruguay
ছবি: AP

কিন্তু এই অবস্থার পরিবর্তন হতে থাকে যখন আফ্রিকার সেরা খেলোয়াড়রা অর্থনৈতিক আর খ্যাতির কারণে পাড়ি জমায় ইউরোপে৷ সেখানে ফুটবল হলো ‘টীম গেম'৷ ব্যক্তি খেলোয়াড়ের পারফরমেন্স দেখানোর কোনো সুযোগ নেই সেখানে৷ আর ঐ যে পাওয়ার প্লে'র কথা বলছিলাম, সেটাও অনুপস্থিত ইউরোপীয় ফুটবলে৷ এর পরিবর্তে ইউরোপে যে ধাঁচে খেলা হয় সেটাকে অনেকে বলেন ‘সেফটি-ফার্স্ট' অ্যাপ্রোচ৷

আফ্রিকার সেরা খেলোয়াড়রা যখন খেলতে থাকলো ইউরোপীয় অঙ্গনে তখন তার প্রভাব পড়তে থাকলো তাদের নিজের দেশের খেলাতে অর্থাৎ আফ্রিকার ফুটবলে৷ কিন্তু দলের অন্য খেলোয়াড়রা তো আর ইউরোপীয় স্টাইলে অভ্যস্ত নয়৷ ফলে যা হবার তাই হয়েছে৷ অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে আফ্রিকান ফুটবলের সৌন্দর্য৷ আর সেইসাথে বিশ্ব ফুটবলে তাদের সাফল্যের সংখ্যাও৷

তবে সব ছাপিয়ে এবার কী আফ্রিকা পারবে নিজেদের সেরা সাফল্যকে ছাড়িয়ে যেতে? পারবে কি আফ্রিকার কোনো দেশ সেমিফাইনাল বা ফাইনালে খেলতে? কারণ এবারই যে প্রথমবারের মতো তারা লড়বে নিজেদের মাটিতে৷ আফ্রিকার কিংবদন্তি খেলোয়াড় ঘানার আবেদি পেলের বিশ্বাস, এই বিশ্বকাপেই ঘুচতে পারে আফ্রিকানদের বিশ্বকাপ শিরোপা-খরা! মুচকি হাসবেন না৷ কারণ আফ্রিকার তিনবারের সেরা এই খেলোয়াড়ের আগের করা একটি মন্তব্যে ঠিক এভাবেই হেসেছিল সবাই৷ কিন্তু পরে সবাইকে বোকা হতে হয়েছে৷ ফিফা কনফেডারেশনস কাপের সময় তিনি ফুটবল কর্তাদের বলেছিলেন, আফ্রিকান চ্যাম্পিয়ন মিসর ইটালিকে হারিয়ে দিতে পারে৷ সে'সময় সবাই হাসলেও পরে দেখা গেল সেটাই হয়েছিল৷ এবার আপনিই সিদ্ধান্ত নিন, আবেদি পেলের এবারের মন্তব্যে আপনি হাসবেন কিনা৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী