1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপ ভূমিলগ্ন, উড়ছেনা বিমান

১৭ এপ্রিল ২০১০

খুব তাড়াতাড়ি রেহাই পাচ্ছেন না ইউরোপের বিভিন্ন বিমানবন্দরে আটকা পড়া যাত্রীরা৷ কারণ বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ছাইমেঘের প্রভাবে আগামী পাঁচদিন পর্যন্ত বিমান চলাচল বন্ধ রাখতে হতে পারে৷

https://p.dw.com/p/Mz9R
ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দরে এক যাত্রী ঘুমিয়ে পড়েছেনছবি: AP

আইসল্যান্ডের আবহাওয়া দপ্তরের মতে, বাতাসের কারণে ছাইমেঘ ধীরে ধীরে রাশিয়ার দিকে ছুটে যাচ্ছে৷ কমপক্ষে আগামী দুই দিন তা একই দিকে ছুটবে৷ তবে আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি পর্যন্তও একই ধারা বজায় থাকতে পারে বলে তাদের ধারণা৷

এদিকে আজও বন্ধ রয়েছে ইউরোপের সবচেয়ে বড় তিন বিমানবন্দর-- হিথরো, ফ্রাঙ্কফুর্ট ও প্যারিসের শার্লস দ্য গল৷

প্যারিসের তিনটি সহ উত্তরের সব বিমানবন্দর সোমবার স্থানীয় সময় সকাল আটটা পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্স৷ ইটালিও একই সময় পর্যন্ত তার বিমানবন্দরগুলো বন্ধ রাখবে বলে জানিয়েছে৷ এদিকে ব্রিটেন ও জার্মানি গ্রীনিচ মান সময় রবিবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত অধিকাংশ ফ্লাইটের ক্ষেত্রে তাদের আকাশসীমা ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে৷

এছাড়া এতদিন চালু থাকা অনেক দেশের বিমানবন্দর নতুন করে বন্ধের ঘোষণাও আসছে৷ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বিমানবন্দরে আটকে পড়া যাত্রীদের৷ ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দরে এমনই এক যাত্রী জানালেন, ‘‘আমাকে মিয়ামি যেতে হবে৷ ওখান থেকে আমার একটি জাহাজে ওঠার কথা রয়েছে৷ কিন্তু কবে সেখানে যেতে পারবো বুঝতে পারছিনা৷ যেতে না পারলেও, আমাকে জাহাজের ভাড়ার প্রায় ৯০ ভাগ পরিশোধ করতে হবে, যা আমার জন্য খুব কঠিন৷''

Chaos auf Frankfurter Flughafen nach Vulkanausbruch in Island
ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দরের নোটিশ বোর্ডে ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণাছবি: AP

এভাবে হাজার হাজার যাত্রীকে অনিশ্চয়তার মধ্যে কাটাতে হচ্ছে৷ কবে তাঁরা বিমানে চড়তে পারবেন তা কেউ বলতে পারছেনা৷ ইউরোপের ৩৮টি দেশের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ইউরোকন্ট্রোল বলছে, ছাইমেঘের কারণে প্রায় ১৬ হাজার ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে শনিবার৷ এর আগে শুক্রবারও সমান সংখ্যক ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছিল৷ উল্লেখ্য, ইউরোপে প্রতিদিন প্রায় ২২ হাজার ফ্লাইট চলাচল করে৷

এদিকে শুধু সাধারণ যাত্রীরাই যে বিপাকে পড়েছেন তা নয়৷ বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতা ও কূটনীতিকরাও আটকা পড়েছেন বিভিন্ন স্থানে৷ এই যেমন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাঁর বার্লিন ফেরার কথা ছিল শুক্রবার৷ কিন্তু এখনো তিনি ফিরতে পারেন নি৷ কবে পারবেন কেউ তা বলতে পারছেনা৷ আফগানিস্তানে আহত চার জার্মান সেনাও ফিরতে পারেননি দেশে৷ তাই তাঁদের চিকিত্সা নিতে হচ্ছে তুরস্কে৷

ওদিকে স্পেনে ইউরোপীয় অর্থমন্ত্রীদের এক বৈঠকে অংশ নেয়া ফ্রান্স ও জার্মানির অর্থমন্ত্রীরা আটকে যাবার ভয়ে সাংবাদিক সম্মেলন না করেই তাড়াতাড়ি দেশে ফিরে এসেছেন৷ এছাড়া ছাইমেঘের কারণে নিহত পোলিশ রাষ্ট্রপতির শেষকৃত্যে মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা সহ অন্যান্য শীর্ষনেতারা অংশ নিতে পারবেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে৷ ভারত, পাকিস্তান, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো ও নিউজিল্যান্ডের প্রতিনিধিরা এরই মধ্যে তাঁদের পোল্যান্ড সফর বাতিল করেছেন বলে পোলিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে৷ তবে চেক প্রজাতন্ত্র ও স্লোভাকিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানরা রেল ও সড়ক পথে পোল্যান্ড যাবেন বলে নিশ্চিত করেছেন৷

আন্তর্জাতিক বিমান যোগাযোগ সংস্থা বা আইএটিএ-এর হিসেব অনুযায়ী, বিমান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় বিমান সংস্থাগুলোকে প্রতিদিন প্রায় ২৩০ মিলিয়ন ইউরো লোকসান গুনতে হচ্ছে৷ উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিমান চলাচল বন্ধের এটাই সবচেয়ে বড় ঘটনা৷

প্রতিবেদন : জাহিদুল হক

সম্পাদনা : রিয়াজুল ইসলাম