ইউরো এলাকার ভবিষ্যৎ নিয়ে বিরোধ তুঙ্গে
২৭ অক্টোবর ২০১০কিন্তু তাদের এই সিদ্ধান্ত বাকিদের তেমন পছন্দ হচ্ছে না৷ যে কোনো সংকট থেকে শিক্ষা গ্রহণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ, যাতে ভবিষ্যতে এমন সংকট এড়ানো যায়৷ যে ১৬টি দেশে অভিন্ন মুদ্রা ‘ইউরো' চালু আছে, তাদের ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য৷ বাজেট ঘাটতির মাত্রা মারাত্মক আকার ধারণ করায় গ্রিস প্রায় দেউলিয়া হতে বসেছিল৷ স্পেন, পর্তুগাল ও ইটালির মত দেশের অবস্থাও তেমন ভাল ছিল না৷ কিন্তু দুর্বলতা মাত্র কয়েকটি দেশের হলেও সংকটে পড়ল ইউরো, যার কুফল ভোগ করতে হল গোটা ইউরো এলাকাকে৷ এমন নয় যে শুরু থেকে কোনো রক্ষাকবচের ব্যবস্থা ছিল না৷ যেমন ইউরো এলাকার বাজেট ঘাটতির মাত্রা সর্বোচ্চ ৩ শতাংশে বেঁধে দেওয়া হয়েছিল৷ তা সত্ত্বেও বিভিন্ন দেশ বার বার সেই নিয়ম লঙ্ঘন করেছে, তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হয় নি৷
ই.ইউ. সম্মেলনে বিষয়টি আলোচনার আগেই পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশেষ তৎপর হয়ে উঠেছে ইউরো এলাকার দুই প্রধান শক্তি – জার্মানি ও ফ্রান্স৷ তারাই ভবিষ্যৎ বিধিনিয়মের একটা রূপরেখা তুলে ধরছে, যার আওতায় নিয়ম ভাঙলে কড়া শাস্তির বিধান রয়েছে৷ এমনকি কোনো দেশ লাগাতার নিয়ম ভেঙে চললে সাময়িকভাবে তার ভোটাধিকারও কেড়ে নেওয়ার বিধান রাখতে চায় এই দুই দেশ৷ জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেছেন, এটা ঠিক, যে শুধু জার্মানি ও ফ্রান্সের মধ্যে বোঝাপড়াই এক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়৷ কিন্তু অন্যদিকে জার্মানি ও ফ্রান্সের বোঝাপড়া ছাড়াও বিশেষ কিছু করা সম্ভব নয়৷
ইউরো-গ্রুপের প্রধান ও লুক্সেমবুর্গ'এর প্রধানমন্ত্রী জঁ ক্লোদ ইয়ুঙ্কার বিশেষ করে সাময়িকভাবে কোনো দেশের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রস্তাবের কড়া সমালোচনা করেছেন৷ তাছাড়া তিনি চান না, যে আপদকালীন অবস্থায় যে তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা, তা শুধু ইউরো এলাকার দেশগুলির জন্য সীমাবদ্ধ থাকুক – ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব সদস্য দেশ যেন এই সুযোগ না পায়৷ এছাড়াও ইউরো চুক্তি সংস্কারের বিভিন্ন দিক নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলছে৷ কোনো সদস্য দেশ প্রায় দেউলিয়া হয়ে পড়লে তাকে বাঁচাতে শুধু রাষ্ট্র নয়, ব্যাঙ্ক ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকেও সেই উদ্যোগে সামিল করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক