1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইরানের ধাঁচেই বিপ্লব ভাঙতে প্রশাসন নামালো মিশর

২৬ জানুয়ারি ২০১১

বছর কয়েক আগের ইরানের ছবিই আবার মনে করিয়ে দিচ্ছে মিশর৷ স্বতঃস্ফুর্ত বিপ্লবের কন্ঠরোধ করতে ব্যাপক ধরপাকড় নিষেধাজ্ঞার জাল বিছিয়ে দিল হোসনি মোবারক সরকার৷

https://p.dw.com/p/105SV
Egypt,
পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ছবি দেখেছে গোটা বিশ্বছবি: picture-alliance/dpa

নিষেধাজ্ঞার রকম

নিষেধাজ্ঞার মাত্রা যাকে বলে রীতিমত চিন্তায় পড়ে যাওয়ার মতই৷ মিশরের হোসনি মোবারক সরকারের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার থেকেই বিপ্লব কেন্দ্রীভূত হচ্ছিল৷ মঙ্গলবারটাকে মোবারক সরকারের উচ্ছেদের জন্য আহ্বান জানিয়ে ফেসবুকের পাতায় বিপ্লবের ঘোষণা করা হয়৷ বলা হয়েছিল, এই দিনটাই হবে ‘ডে অফ রিভোল্ট'৷ সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে তরুণ প্রজন্ম থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ যোগ দিয়েছিলেন বিক্ষোভে৷ কিন্তু সারাদিন রাজধানী কায়রোয় দফায় দফায় বিক্ষোভ এবং পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ছবি দেখেছে গোটা বিশ্ব৷ মঙ্গলবার সারাদিনের খবর ছিল, তিনজনের মৃত্যু৷ আহত অসংখ্য৷ এরপর সারারাত ধরেই পুলিশের সঙ্গে খন্ডযুদ্ধ চলে বিক্ষোভকারীদের৷ অবশেষে বুধবার সকালেই মোবারক সরকারের ঘোষণা, যাবতীয় জমায়েত, বিক্ষোভ, মিছিল ইত্যাদি সবই বেআইনি৷ মিছিলে যোগ দিলেই গ্রেপ্তার করা হবে এবং দেওয়া হবে কড়া শাস্তি৷

Flash-Galerie Ägypten Kairo Proteste
ইরানের ধাঁচেই বিপ্লব ভাঙতে প্রশাসন নামালো মিশরছবি: picture-alliance/dpa

ইরানের মতই বিপ্লব ভাঙতে প্রশাসনের ব্যবহার

সেই একই পদ্ধতি মিশরেও৷ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে এ ধরণের গণতান্ত্রিক বিপ্লবের পরিণতি এরকই হতে দেখা যাচ্ছে সাম্প্রতিক অতীতে৷ বস্তুত টিউনিশিয়ার পরিস্থিতির দিকে তাকিয়েই মিশরেও সংঘবদ্ধ হয়েছে এই আন্দোলন৷ যাতে সমাজের সব শ্রেণীর অকুন্ঠ যোগদান প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে৷ যদিও বিক্ষোভকারীরা সরকারের এই দমননীতিতে ভয় পাচ্ছে না৷ দেখা যাচ্ছে, রাজধানী কায়রোতে বিক্ষোভের বেগ কিছুটা প্রশমিত হলেও আলেকজান্দ্রিয়া সহ মিশরের অন্য বেশ কয়েকটি শহরে কিন্তু বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে৷

Flash-Galerie Ägypten Kairo Proteste
বিক্ষোভকারীরা সরকারের দমননীতিতে একদমই ভয় পাচ্ছে নাছবি: picture-alliance/dpa

বিক্ষোভের নেপথ্যে

আসলে মিশরে নামে গণতন্ত্র থাকলেও পরোক্ষে একদলীয় শাসন চলে আসছে তিনটি দশক ধরে৷ একদা যে মিশর জ্ঞানে, শৌর্যে এবং বিজ্ঞানে বিশ্বের অন্যতম দেশগুলির সারিতে ছিল, একনায়কতন্ত্র আর অপশাসনের একাধিক দৃষ্টান্তে সেদেশের মানুষের মধ্যে ক্রমশই পুঞ্জীভূত হয়েছে ক্ষোভ৷ বেকারী, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, প্রশাসনিক দুর্নীতি ইত্যাদি অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে মিশরে ১৯৮১ সাল থেকে প্রেসিডেন্টের গদি দখল করে রাখা হোসনি মুবারক এবং তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে৷ বহু জায়গাতেই দেখা গেছে, এমনকি কোলে শিশু সন্তানদের নিয়ে নারীরাও বেরিয়ে এসেছেন বিক্ষোভে সামিল হতে৷ অর্থাৎ, মানুষ পরিবর্তন চাইছে৷ কিন্তু প্রশাসনিক চাপ দিয়ে সেই পরিবর্তনের পথ বন্ধ করে দিতে বদ্ধপরিকির মোবারক সরকার৷ আর তাই এত নিষেধাজ্ঞার বাড়বাড়ন্ত৷

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ