1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে ইসলাম-বিরোধী আন্দোলন

৬ জানুয়ারি ২০১৫

বড়দিন শেষ৷ আর তার অর্থ, পুবের ড্রেসডেন শহরে প্রতি সোমবার আবার ‘পেগিডা' গোষ্ঠীর ইসলাম ও অভিবাসন বিরোধী ব়্যালি শুরু হতে চলেছে৷ বার্লিন, কোলোন কিংবা স্টুটগার্টে কিন্তু পেগিডা-বিরোধীদের সংখ্যা অনেক বেশি৷

https://p.dw.com/p/1EFWW
Protest gegen Pegida in Köln
ছবি: picture-alliance/dpa/O. Berg

‘পেগিডা' নামটি যে জার্মান শব্দগুলির আদ্যক্ষর মিলিয়ে, তাদের অর্থ দাঁড়ায়: প্রতীচ্যের ইসলামীকরণের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমী ইউরোপীয়বৃন্দ৷ গতবছরের অক্টোবর মাসে মাত্র শ'খানেক সমর্থক নিয়ে এই তৃণমূল আন্দোলনটি শুরু হয়৷ সে'যাবৎ তা শুধু ড্রেসডেনেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, জার্মানির অন্যান্য বড় শহরেও দানা বাঁধার চেষ্টা করছে৷

বড়দিনের আগে ড্রেসডেনে পেগিডা সমর্থকরা যে ব়্যালি করেন, তাতে যোগ দিয়েছিলেন সাড়ে ১৭ হাজার মানুষ৷ এই সোমবার পেগিডার হয়ে ড্রেসডেনে পথে নামেন ১৮ হাজার৷ কিন্তু জার্মানির বাদবাকি শহরে যে পেগিডা বিরোধী স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয়, তা অনেক বেশি নজর কেড়েছে৷

রাজধানী বার্লিনে শ'তিনেক পেগিডা সমর্থক পৌর ভবন থেকে ব্রান্ডেনবুর্গ তোরণ অবধি মিছিল করতে গিয়ে ব্যর্থ হন, কেননা হাজার পাঁচেক পেগিডা বিরোধী তাদের পথ অবরোধ করেন৷ পশ্চিমের কোলোন শহরে আড়াই'শ পেগিডা সমর্থক রেলওয়ে স্টেশন থেকে শহরের প্রখ্যাত ক্যাথিড্রাল অবধি মিছিল করতে চেয়েছিল, কিন্তু আড়াই হাজার পেগিডা বিরোধী আন্দোলনকারীদের সম্মুখীন হয়ে তাদের সে পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়৷ ওদিকে দক্ষিণের স্টুটগার্ট, মধ্য জার্মানির ম্যুনস্টার এবং উত্তরের হামবুর্গ শহর মিলিয়ে মোট ২২ হাজার পেগিডা বিরোধী পথে নামেন৷ এই সোমবার ড্রেসডেনে পেগিডা বিরোধী আন্দোলনকারীদের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়ায়নি৷ কাজেই সব মিলিয়ে ড্রেসডেনে পেগিডার সাফল্যের পাশাপাশি বাকি জার্মানিতে পেগিডা বিরোধীদের লক্ষণীয় উপস্থিতিকে রাখতে হবে৷

জার্মানির রাজনৈতিক মহল, গির্জার কর্মকর্তা, সাংস্কৃতিক জীবনের প্রতিনিধি, সকলেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তাঁরা এই দেশকে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখতে চান, বিদেশি-বহিরাগতদের স্বাগত জানাতে চান৷ চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল স্বয়ং তাঁর নববর্ষের ভাষণে জাতিবাদকে প্রত্যাখ্যান করেছেন৷ ম্যার্কেল মন্ত্রীসভার সামজিক গণতন্ত্রী আইনমন্ত্রী হাইকো মাস স্বয়ং বার্লিনে পেগিডা বিরোধী মিছিলে অংশ নিয়েছেন৷ এমনকি জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে টুইট করা হয়েছে ‘‘(জার্মানিতে) বহিরাগত-বিদ্বেষি প্ররোচনার কোনো স্থান নেই''৷

ড্রেসডেন যে স্যাক্সনি রাজ্যের রাজধানী, সেখানে মুসলিমদের সংখ্যা চার শতাংশের বেশি নয়; স্যাক্সনি কিংবা পুবের কোনো রাজ্যেই অভিবাসী, বহিরাগত নিয়ে বড় কোনো সমস্যা নেই৷ অথচ ঠিক সেখানেই এই পেগিডা আন্দোলন জন্ম নিয়েছে৷ এর অনেক কারণ থাকতে পারে, কিন্তু ‘‘স্টের্ন'' সাপ্তাহিকের একটি সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী জার্মানির ৩০ শতাংশ মানুষ মনে করেন যে, জার্মান জনজীবনে ইসলামের প্রভাব এতোই বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, পেগিডার প্রতিবাদ মিছিল এক হিসেবে যৌক্তিক বলা যেতে পারে৷

এই বিচারে পেগিডা আন্দোলন ও পেগিডা বিরোধী আন্দোলন এখন জার্মানদের আত্মানুসন্ধান ও আত্মদর্শনের বহির্প্রকাশ বলে গণ্য হতে পারে, এমন একটি প্রক্রিয়া, যার অভিব্যক্তি অনেক ক্ষেত্রেই প্রতীকী: সোমবার কোলোনের গথিক ক্যাথিড্রাল, পৌর ভবন ইত্যাদি ঐতিহাসিক স্থাপত্যের বাইরের আলোকসজ্জা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল৷ বার্লিনের ব্রান্ডেনবুর্গ তোরণের আলোকসজ্জাও বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ এ সবই খোদ ড্রেসডেনের প্রখ্যাত সেম্পার অপেরা হাউসের অনুকরণে৷ অতীতে অপেরা হাউসের সামনে পেগিডা সমাবেশ চলাকালীন অপেরা ভবনের আলোকসজ্জা বন্ধ করে তার পরিবর্তে অভিবাসন তথা বহিরাগতদের প্রতি সহানুভূতিশীল আলোকলিখন দেখানো হয়েছিল৷

এসি/ডিজি (ডিপিএ, রয়টার্স, এএফপি, এপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য