ইয়োহান ৎসোফানি-র আঁকা ‘লাস্ট সাপার’ ছবিটি পুনরুদ্ধার
৪ জুলাই ২০১০জন্মসূত্রে জার্মান ব্রিটিশ শিল্পী ইয়োহান ৎসোফানি এই তৈলচিত্রটি এঁকেছিলেন ১৭৮৭ সালে৷ কলকাতার সেইন্ট জনস চার্চ-কে ছবিটি উপহার স্বরূপ দিয়েছিলেন তিনি৷ পরের ২২৩ বছরে ছবিটির গায়ে সময়ের যে আঁচড় পড়েছিল, তা সাফ করে ছবিটি পুনরুদ্ধার করতে দরকার ছিল কুশলী দক্ষতার৷ এগিয়ে আসে গোয়েটে ইন্সটিটিউট কলকাতা এবং ইনটাক৷ কাজ শুরু করে দেখা যায়, এর আগে যে কয়েকবার ছবিটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা হয়েছিল, তাতে অনেক ভুলচুক ছিল, বলছিলেন জার্মান রেস্টোরেশন বিশেষজ্ঞ রেনাটে কান্ট৷ তিনি বলেন, ‘‘মাক্সমূলার ভবন এবং ইনটাক এই প্রকল্পটি হাতে নিয়েছিল সংরক্ষণ বিষয়ক জ্ঞান হস্তান্তরের লক্ষ্য নিয়ে, যেটা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছিল৷ কারণ এর আগে অদক্ষ হাতে ছবিটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করায় বরং ক্ষতিই হয়েছিল৷ ইউরোপে কীভাবে ছবি পুনরুদ্ধার করা হয়, কী উপকরণ ব্যবহার করা হয়, সবকিছুর সঙ্গেই ওদের পরিচয় করানো হয়েছে, যা ওদের জানা ছিল না৷''
সেইন্ট জনস চার্চের ভেতরেই একটি অস্থায়ী স্টুডিও গড়ে কাজ করেছেন রেনাটে কান্ট এবং ইনটাক-এর পাঁচজন শিল্পীর একটি দল৷ তাঁরা জানালেন, সত্যিই অনেক কিছু তাঁরা শিখেছেন এই কর্মশালা থেকে৷
ভবিষ্যতে কি আরও এ ধরণের পুনরুদ্ধার প্রকল্পে উদ্যাগী হবে গোয়েটে ইনস্টিটিউট? কলকাতার ম্যাক্সমুলার ভবনের পরিচালক ডঃ রাইমার ফলকার জানালেন, ‘‘হ্যাঁ, এই প্রকল্পটির সাফল্যের পর শিল্প সংরক্ষণ এবং পুনরুদ্ধারের অন্যান্য ক্ষেত্রে, যেমন প্রাচীন পুঁথি বা পটচিত্রের পুনরুদ্ধারে একই ভাবে আধুনিক কলা-কৌশল স্থানীয় স্তরে নিয়ে আসার কথা ভাবা যেতেই পারে৷''
সারা পৃথিবীতে ইয়োহান ৎসোফানি-র ৩০ থেকে ৩৫টি তৈলচিত্রের খোঁজ মেলে৷ এর মধ্যে নয়টি ছবি আছে ভারতে৷ সাতটি কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সংগ্রহে৷ এছাড়া লখনউ এবং কলকাতার লা মার্টিনিয়ার স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা যিনি, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেই ফরাসি মেজর জেনারেল ক্লদ মার্টিন-এর প্রতিকৃতি এঁকেছিলেন ৎসোফানি৷ সেই তৈলচিত্রটি এখনও আছে লখনউ-তে৷ আর এই নয় নম্বর ছবি, কলকাতার পত্তনিদার জোব চার্নক-এর সমাধি লাগোয়া সেন্ট জনস চার্চে রাখা এই লাস্ট সাপার৷
ছবিটির আনুষ্ঠানিক আবরণ উন্মোচন করা হয় রবিবার বিকেলে৷
প্রতিবেদন: শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম