উড়ন্ত চাকি না উড়ন্ত পাখি?

অস্ট্রিয়ার আল্পস পর্বতাঞ্চলের দক্ষিণ টিরোল এলাকায় পাবেন লিয়েনৎস শহর৷ এখানেই দেখতে পাবেন সেই আজব হোটেল, যার নাম ‘উ-ফোগেল'৷ সামনে থেকে দেখতে সত্যি একটা ‘ফোগেল বা পাখির মতো৷ পিছন থেকে খানিকটা ইউএফও বা ফ্লাইং সসার-এর মতো দেখতে৷

স্থপতি পেটার ইয়ুংমান ও তাঁর ছেলে লুকাস মিলে এই আজব বাড়িটি সৃষ্টি করেছেন৷ পেটার ইয়ুংমান বলেন, ‘‘গোড়ায় এটা একটা ‘অ্যালপাইন হাট' বা কুটির হবার কথা ছিল৷ কুটিরটা কোথায় থাকবে,তা জানা ছিল না৷ তাই আমরা কুটিরটাকে খুঁটির ওপর বানিয়েছি, যাতে সেটা যে কোনো জায়গায় থাকতে পারে৷''

‘উ-ফোগেল'-এর আবিষ্কর্তা লুকাস ইয়ুংমান বুঝিয়ে দিলেন, ‘‘সামনের এই অংশটা পাখির ঠোঁটের মতো দেখতে, যা থেকে উ-ফোগেল নামটি এসেছে৷ আসলে এই পাখির ঠোঁট ‘অ্যালপাইন হাট'-গুলিতে বরফ আটকানোর কাজে আসে৷'' অর্থাৎ ঢোকার দরজাটা যাতে বরফে ঢেকে না যায়৷

আজ উ-ফোগেল একটি মিনি হোটেল, যেখানে সব রকম আরামের ব্যবস্থা আছে: ফ্যাশনেবল বাথটাব, আন্ডারফ্লোর হিটিং, এয়ার কন্ডিশনিং৷ ডাবল রুমে রাত্রিবাসের মাশুল ১২০ ইউরো৷ সুবিশাল জানলাগুলি দিয়ে চারদিকের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখা যায়৷ উ-ফোগেল তৈরিতে শুধুমাত্র কাঠ, কাচ ও পাথর ব্যবহার করা হয়েছে৷ লুকাস ইয়ুংমান পেশায় ইনডাস্ট্রিয়াল ডিজাইনার৷ তিনি জানালেন, ‘‘সাধারণভাবে উ-ফোগেল তৈরি করতে যা কিছু ব্যবহার করা হয়েছে, তার সবটাই এই এলাকা থেকে এসেছে৷ যেমন যে লার্চ গাছের কাঠ দিয়ে গোটা বাড়িটা তৈরি৷''

উ-ফোগেলে থাকতে কেমন লাগে? এই মিনি হোটেলে আটজন মানুষ রাত কাটাতে পারেন৷ জানলাগুলো দিয়ে প্রচুর আলো আসে৷ জামাকাপড় রাখার কাচের আলমারি থেকে শাওয়ারটা দেখা যায়৷ রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে জানলার ব্লাইন্ডগুলো ওঠানো-নামানো যায়৷ ছয় মিটার বাই ছয় মিটার বাই পাঁচ মিটার খুব ছোট মনে হয় না৷ জানলাগুলোর জন্য মনে হয় যেন খোলা আকাশের নীচে বাস করছেন৷ কিচেনটা অতি আধুনিক, এমনকি ইনডাকশন কুকার পর্যন্ত আছে৷ উ-ফোগেলের সব ঘরে মেঝের নীচে হিটিং, তা সত্ত্বেও একটা ফায়ারপ্লেস আছে৷ বাথরুমটা একটু খুঁজতে হয় বটে, কিন্তু কমোড ইত্যাদি সবই আছে৷ ছুটি কাটানোর পক্ষে আদর্শ৷