1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ঋণ মাথায় নিয়ে ‘ক্যামেরনিক’-এর যাত্রা শুরু হল ইংল্যন্ডে

১২ মে ২০১০

একটু আধটু নয়, ১১.১ শতাংশ বাজেট ঘাটতি৷ সংসদে সহজে জমি ছেড়ে দেবে না বিরোধী লেবার৷ ‘ক্যামেরনিক’ সরকারে লিব-ডেম যে পুরো মাত্রায় জোটের গভীরে ঢুকেছে এক্ষুনি সেকথাও বলা যাচ্ছে না৷

https://p.dw.com/p/NMOd
‘ক্যামেরনিক’ এর দুই নায়ক, ক্যামেরন আর নিকছবি: picture-alliance/dpa

কেমন এই নতুন ব্রিটিশ সরকার

বাইরে থেকে দেখলে চাকচিক্যের ঘাটতি নেই৷ প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন তো বটেই, তাঁর মন্ত্রিসভার যে'কটা নাম এ পর্যন্ত জানা গেছে, তাঁদের অনেকেই কোটিপতি৷ বেশ ধনতান্ত্রিক এবং বেশ রক্ষণশীল এখনও পর্যন্ত সরকারের চেহারা৷ জোটসঙ্গী লিব-ডেম দলের শীর্ষনেতাটি, যিনি এখন উপ-প্রধানমন্ত্রী এই সরকারে, একমাত্র তিনিই সেই অর্থে জনপ্রতিনিধি৷ কোথাও একটা সাধারণ মানুষের শিকড় আছে নিক ক্লেগ-এর মধ্যে৷ সে কারণেই মন্দার মার খাওয়া ব্রিটেনে তিনি এই নির্বাচনের মুখে উঠে এলেন প্রায় উল্কার মত৷

মন্দার মার এখনও ব্রিটেনকে ভোগাচ্ছে

অবশ্যই ভোগাচ্ছে৷ অতলান্তিক সাগরের ওপারে মন্দার ধাত্রীভূমি অ্যামেরিকা ওবামার নেতৃত্বে এই মুহূর্তে খানিকটা সামলে নিয়েছে বটে, কিন্তু এই ইউরোপে মন্দা কিন্তু এখনও যথেষ্ট দুর্যোগের মেঘ ঘনিয়ে রেখেছে৷ গ্রিসের কথা বাদই দিলাম, স্পেন, পর্তুগালও সেই ঝাপটায় প্রায় ধরাশায়ী৷ ইউরোকে বাঁচাতে উঠেপড়ে লেগেছেন ইইউ-র অর্থমন্ত্রীরা৷ ব্রিটেনের পরিস্থিতি তার থেকেও সঙ্গিন৷ ব্রিটেন ইউরোকে আপন করে নেয়নি৷ চালিয়ে যাচ্ছে পাউন্ড অর্থনীতি৷ আর মন্দাক্রান্ত অর্থবাজারে পাউন্ডের কোমরের জোর বজায় রাখতে গত কয়েক বছর ধরে ভর্তুকির খেলা খেলতে হয়েছে ব্রিটেনকে৷ ফলে, বাজেট ঘাটতি বেড়েছে৷ তার পরিমাণ ১১.১ শতাংশ৷ আছে ঋণের ফাঁদও৷ সেটাকে প্রথমে সামলাতে হবে ক্যামেরন সরকারকে৷ তার বাইরেও রয়ে গেছে, জোট বিষয়ক কচকচি৷ রয়ে গেছে বিরোধীদের আক্রমণ সামলাতে যুদ্ধকৌশল, এইসব কিছুই৷ সোজা, কথায়, ‘মুক্তি কোথায়, মুক্তি কোথায় আছে?'

Großbritannien Wahlen - Wahllokal
মন্দা কমবে এই আশায় ভোট দিয়েছেন ব্রিটিশরাছবি: AP

জোট নিয়ে গোলযোগ

মধুচন্দ্রিমা পর্ব তো এখন! তাই গোলযোগ বলা যাবে না এখনই৷ বলা যায়, সবেমাত্র বোঝাপড়ার শুরু৷ এই যেমন, নিক ক্লেগকে ক্যামেরন খুশি করলেন উপ প্রধানমন্ত্রীর পদ দিয়ে৷ কিন্তু লিব-ডেম এমন একটা দল, যাতে ক্লেগ এক সদ্য গোঁফ গজানো তরুণ তুর্কি হলেও এই দলে রয়েছেন বহু ঘুঘু রাজনীতিবিদ৷ তাঁরা তাঁদের সব দাবিদাওয়া পেশ করতে শুরু করলে জোট বজায় রাখতে ক্যামেরন বা টোরিদের বেশ বেগ পেতে হবে৷ এই যেমন, ‘৫০ দিনের মধ্যে বাজেট ঘাটতির হালে পানি আনব' বলে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ব্রাউনের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন ক্যামেরন৷ এখন অর্থবাজারের যা পরিস্থিতি, তাতে বাজেট ঘাটতি মেটাতে হলে চাই বাইরের ঋণ৷ আর ঋণ পেতে গেলে গ্রিসের মতই সরকারি খরচে বিপুল কাটছাঁট করতে হবেই৷ ক্রেডিট রেটিং সংস্থাগুলি তারপর জানাবে, কতটা যোগ্যতা আছে এই অর্থনীতির ঋণ পাওয়ার জন্য৷ আর বোঝাই যাচ্ছে, সামাজিক পরিষেবায় হাত পড়লেই সাধারণ মানুষ বিক্ষুব্ধ হবেন৷ তাছাড়া বিরোধীরা তো বসেই থাকল ঘাড়ের ওপর৷ ভুলে গেলে চলবে না, লেবাররা কিন্তু সংসদে বেশ ভালোমাত্রাতেই হাজির৷

তাহলে ফুলের সিংহাসনে ডেভিডের অভিষেক হল না

ডেভিড, থুড়ি ক্যামেরনের কাছে ইউরোপ তো বটেই, অতলান্তিকের ওপার থেকে এবং অন্যান্য দেশ থেকেও আসছে অভিনন্দন৷ এরই মধ্যে অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবর্নের সহকারী হিসেবে আনা হয়েছে লিব-ডেম-এর নেতা ভিনস কেবলকে৷ নিক ক্লেগ কে নিয়ে বুধবার বিকেলে ডাউনিং স্ট্রিটে জোট সরকারের প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে ক্যামেরন জানিয়েছেন, সরকারের প্রত্যেকটি স্তরে লিব-ডেম-এর উপস্থিতি থাকবে৷ নতুন সরকার লড়ে যাবে ব্রিটেনের যাবতীয় সমস্যার সমাধান করতে৷ নতুন এই ব্রিটিশ সরকারকে ‘ক্যামেরনিক সরকার' বলাই যায় এই সাংবাদিক সম্মেলনের পর৷

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন