তারকা, শব্দ, উচ্চারণ, লি না, টেনিস, চীন, ফ্রেঞ্চ ওপেন,
১৯ জানুয়ারি ২০১৪টেনিসে চীন এখন যেটুকু আলোচনায় আসে তা একমাত্র লি না-র কারণেই৷ ২০১১ সালে তাঁর ফ্রেঞ্চ ওপেন জয়ের মুহূর্তটিকে অনেক ক্রীড়ালেখক ‘টেনিসে চীনা বিপ্লবের সূচনা' হিসেবে আখ্যায়িত করেন৷ প্রথম চীনা এবং প্রথম এশীয় খেলোয়াড় হিসেবে লি না-র ওই সাফল্য এশিয়ার টেনিস অঙ্গনেও পরিবর্তনের জোয়ার এনেছে৷ আজ এশিয়ার যে প্রান্তের যে শিশুই বড় হয়ে টেনিস খেলোয়াড় হতে চায়, তার সামনে ‘রোল মডেল' একজনই – লি না৷
৩১ বছর বয়সি লি না এ পর্যন্ত একটি গ্র্যান্ড স্লাম এককের পাশাপাশি ৮টি ডাব্লিউটিএ এবং ১৯টি আইটিএফ শিরোপাও জিতেছেন৷ এমন সাফল্যে তারকা খ্যাতি এবং জনপ্রিয়তাও এসেছে৷ চীনের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে লি না-র অনুসারীর সংখ্যা ইতিমধ্যে ১ কোটি ছাড়িয়েছে৷
তারকাখ্যাতি এবং জনপ্রিয়তা সবার ভাগ্যে জোটেনা৷ যাঁদের জোটে তাঁদের সবাই আবার তা ধরে রাখতে পারেন না৷ লি না সেটা জানেন৷ তারকামর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখা যে কঠিন তা-ও অনুভব করেন সবসময়৷ অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে অংশ নিতে মেলবোর্নে গিয়ে শুক্রবার এ বিষয়েই কথা বলেছেন এশিয়ার একমাত্র গ্র্যান্ডস্লাম একক জয়ী খেলোয়াড়৷ সাধারণ একজন খেলোয়াড় থেকে তারকা হিসেবে অনেকের কাছে ‘রোল মডেল' হওয়ার পার্থক্য বোঝাতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘এখন শিশু-কিশোরও সব সময় আমার দিকে নজর রাখে, আমি কোর্টে বা কোর্টের বাইরে কী করি সব কিছুর খোঁজ রাখে৷ এ কারণে মনের ভেতরে সব সময় চাপ অনুভব করি৷ বাচ্চারা আমাকে দেখে শিখবে – এ কথা ভেবে এখন আমি একটা বাজে শব্দও উচ্চারণ করতে পারিনা৷ এমন অনেক কিছুই করতে পারিনা যা আগে অনায়াসেই করতে পারতাম৷''
মানসিকতায় লি না এমনিতেই বিদ্রোহী৷ আন্তর্জাতিকভাবে তেমন পরিচিতি পাওয়ার আগেই তার প্রমাণ রেখেছেন৷ চীনে সব টেনিস খেলোয়াড়কে সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত কোচের অধীনে প্রশিক্ষণ নিতে হয়৷ এ নিয়ম না মেনে ২০০৮ সালেই নিজের কোচ নিজে ঠিক করেছিলেন লি না৷
এখন অবশ্য সব বিষয়ে আগের মতো আপোসহীন থাকতে পারেননা৷ প্রচার মাধ্যমের অতিরিক্ত উৎসাহের কারণে ছোট ছোট কারণেও অস্বস্তিতে পড়তে হয়৷ এ অবস্থা কে না এড়াতে চায়, বলুন! অনর্থক সমালোচনার শিকার না হতে তাই নিজেকে বদলে নিয়েছেন অনেকটা৷ আগে একসময় অল্পস্বল্প মদ্যপান করতেন, এখন পানি ছাড়া কিছুই পান করেন না!
এমন পরিবর্তনের কারণটা তাঁর মুখেই শোনা যাক৷ লি না বলেছেন, ‘‘পার্টিতে গেলে আমাদের তো কখনো কখনো একটু ড্রিঙ্ক করতেই হয়৷ কোনো পার্টিতে একটু ড্রিংক করলেই পরের দিন পত্রিকায় খবর ছাপা হতো – ‘লি না পান করতে পছন্দ করেন'৷ পরিস্থিতির কোনো উল্লেখ থাকে না সেখানে৷ পত্রিকায় ওরকম খবর পড়ার পর থেকে আমি নিজেকে বলি – পার্টিতে গেলেও এখন আর পানি ছাড়া অন্য কিছু পান করা ঠিক হবে না, ঠিক আছে, পানিই ভালো, এটা তো সত্যিই স্বাস্থ্যকর পানীয়!''
এসিবি/ডিজি (এএফপি, এপি)