এখনও অন্ধকার জীবনে অভ্যস্ত ইন্দোনেশিয়ার বাদুই উপজাতি
১৯ জুলাই ২০১০বাদুই গ্রামের সাপরি জানালেন অগ্রগতি বা প্রযুক্তি কোনটারই দরকার নেই তাদের৷ একগাল হেসে এএফপি-কে তিনি বলেন, প্রকৃতির কাছাকাছি আমাদের জীবন যথেষ্ট ছন্দময়, যা প্রয়োজন তার সবই আমরা পেয়েছি৷
সাত সন্তানের বাবা ৩৮ বছর বয়স্ক সাপরি বাইরের দুনিয়াকে খুব সামান্যই তোয়াক্কা করেন৷ বিশ্ব অর্থনৈতিক ধস তাকে একেবারেই প্রভাবিত করে না৷ বিশ্বকাপ সম্পর্কে নাম মাত্র জানে তারা৷
সাপরির গোটা জগৎ ''বাদুই আবাসভূমি''-র সীমানার মধ্যেই নিহিত৷ জাভার কেন্দ্রস্থলে ৫ হাজার হেক্টর বা ১২ হাজার ৩শ ৬০ একরের বনভূমি নিয়েই এই বাদুই আবাসভূমি৷ বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দ্বীপের মধ্যে এটি একটি৷ বাদুই জনগোষ্ঠীর মানুষের সংখ্যা প্রায় ১২ হাজারের কাছাকাছি৷ প্রায় ৩০টি গ্রাম জুড়ে তাদের বসবাস৷ বাদুইদের সনাতন বাড়িঘর তৈরি হয় বাঁশ এবং তাল গাছের পাতা দিয়ে৷ তবে তাদের বাড়ির কোন জানালা থাকে না৷ মাটির চুলায় কাঠ জ্বেলে তৈরি হয় বাদুই উপজাতিদের খাবার৷ তারা বাড়ির মেঝেতে বসে খাওয়া দাওয়া করে৷ বাড়িতে আসবাবপত্র, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এবং আধুনিক সরঞ্জামাদি নিষিদ্ধ৷
গ্রামের প্রধান দারো দাইনাহ বলেন, আমরা কয়েক শতাব্দী ধরে শ্রদ্ধার সঙ্গে কঠোরভাবে এই সব নিয়ম পালন করে আসছি৷ বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে উপজাতীয় প্রধান হিসেবে জনসংযোগের দায়িত্ব পালন করতে ১৪ বছরের জন্যে দাইনাহকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে৷ তিনি বলেন, ''সরকার আমাদের বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছে তবে আমরা তা প্রত্যাখ্যান করেছি, কারণ অগ্রগতি এত দ্রুত আসুক তা আমরা চায় না৷ আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে চায়৷''
বাদুই উপজাতির উদ্ভব এক রহস্য৷ কেউ কেউ বলে থাকেন তারা হিন্দু রাজ পরিবারের বংশধর৷ বলা হয়ে থাকে, ১৫ শ শতকে ইন্দোনেশিয়ার সর্বত্র ইসলাম ধর্ম ছড়িয়ে পড়ার পর, পাহাড় থেকে তাদের বসতি উঠিয়ে নিতে বাধ্য হয় তারা৷
প্রতিবেদন: ফাহমিদা সুলতানা
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক