1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ঐতিহাসিক' সৌদি আরব সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী

১ মার্চ ২০১০

সৌদি আরবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড.মনমোহন সিং-এর ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরকে ঘিরে যে উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে, তা সত্যি অভাবনীয়৷ বিশেষ করে সৌদি আরব তাঁর প্রতি যে সব বিরল সম্মান দেখাচ্ছে, তা সবার নজর কেড়েছে৷

https://p.dw.com/p/MHDd
ছবি: AP

ভারতের প্রধানমন্ত্রী রিয়াধে এসে পৌঁছনোর পর গোটা সৌদি মন্ত্রীসভা বিমানবন্দরে গিয়ে তাঁকে স্বাগত জানিয়েছে৷ আল রাওয়াদাহ প্রাসাদে তাঁকে স্বাগত জানাতে যে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল, তার পুরোটা সময় ধরে উপস্থিত ছিলেন বাদশাহ আব্দুল্লাহ, যেটা একটা বিরল ঘটনা৷ বাদশাহ'র উপদেষ্টা পরিষদ ‘মজলিস-আল-সুরা'য় ভাষণ দেওয়ার বিরল সম্মানও তাঁকে দেওয়া হয়েছে৷

ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক

সোমবার সুরা'র সদস্যদের উদ্দেশ্যে ভাষণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্কের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন৷ তিনি বলেন, এক্ষেত্রে ভারত প্রত্যাশার চেয়েও বেশী অগ্রসর হতে প্রস্তুত৷ তবে পাকিস্তানকে তার আগে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে৷ পাকিস্তানের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্কের মাধ্যমে ভারত স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চায়, কারণ দুই দেশের ভবিষ্যৎ একই সূত্রে বাঁধা৷ সেক্ষেত্রে বাণিজ্য, ভ্রমণ ও উন্নতির যে জোয়ার দেখা যাবে, তার ফলে ভারত, পাকিস্তান তথা গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় সমৃদ্ধি অনেক বেড়ে যাবে, বলেন সিং৷

পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সুবাদে সৌদি আরবের সঙ্গে সুসম্পর্কের এই নতুন অধ্যায় আন্তর্জাতিক মহলে যথেষ্ট আগ্রহের সৃষ্টি করেছে৷ ভারতের পেট্রোলিয়ামের বেড়ে চলা চাহিদা মেটাতে সৌদি আরব বাড়তি উদ্যোগের পরিচয় দিচ্ছে৷ সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স সৌদ আল ফয়জল মিত্র রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তানের বিপজ্জনক পরিস্থিতি সম্পর্কে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করে বলেন, উগ্রবাদ যাতে লক্ষ্য পূরণ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে সেদেশের রাজনৈতিক নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত৷ সৌদি আরব ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ‘ইন্টারলোকুটার' বা সহায়কের ভূমিকা পালন করতে পারে, ভারতীয় পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিমন্ত্রীর এই মন্তব্যে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল, দেশে ফেরার পথে প্রধানমন্ত্রী নিজে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, সৌদি আরব যদি পাকিস্তানের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, ভারত তাকে স্বাগত জানাবে৷

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক

ভারত ও সৌদি আরব – দুই দেশই উগ্রবাদ ও হিংসার শিকার হওয়ায় ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে ও দৃঢ়তার সঙ্গে পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনমোহন সিং মন্তব্য করেন৷ তিনি আরও বলেন, ইসলাম ধর্ম ভারতের সংস্কৃতি ও জাতীয় সত্ত্বার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ৷ ভারতের প্রায় ১৬ কোটি মুসলিম মানুষ দেশ গড়ার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখে চলেছেন এবং সব ক্ষেত্রেই সাফল্য দেখাচ্ছেন৷ ‘‘আমরা আমাদের এই বহুমাত্রিক সংস্কৃতির কারণে গর্বিত'', বলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী৷

মনমোহন সিং-এর সৌদি আরব সফরকালে বন্দি-প্রত্যর্পণ সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে৷ দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা, অর্থনীতি, জ্বালানি ও প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তুলতেও বদ্ধপরিকর মনমোহন সিং ও সৌদি বাদশাহ আব্দুল্লাহ৷ তাঁদের আলোচনার ফলাফলকে ৬ পৃষ্ঠার ‘রিয়াধ ঘোষণাপত্র' হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে৷ ২০০৬ সালে বাদশাহ আব্দুল্লাহ'র ঐতিহাসিক দিল্লি সফরের সময় জ্বালানীর ক্ষেত্রে যে কৌশলগত সহযোগিতা শুরু হয়েছিল, তা আজ সম্প্রসারিত হয়ে বিশাল আকার নিয়েছে৷ ভারত কৌশলগত কারণে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অপরিশোধিত পেট্রোলিয়ামের যে ভাণ্ডার গড়ে তুলতে চলেছে, সেই প্রকল্পেও সৌদি আরবের অংশগ্রহণকে স্বাগত জানানো হচ্ছে৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক