1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কাসাব-কে মৃত্যুদন্ড দিল আদালত

৬ মে ২০১০

সকাল থেকেই সবার চোখ ছিল আর্থার রোডের জেলের দিকে৷ প্রশ্ন ছিল - কি সাজা ঘোষণা করবেন বিচারক এম এল তাহলিয়ানি ? শেষ পর্যন্ত যাবজ্জীবন নয়, মোহাম্মদ আজমল কাসাব-এর জন্য ফাঁসির আদেশই দিল আদালত৷

https://p.dw.com/p/NFW9
মুম্বই হামলার সময় কাসাবছবি: AP

‘পরনে কালো শার্ট, হাতে মেশিন গান' অথবা ‘হাসপাতালের বেডে অসহায়ভাবে শুয়ে থাকা বিচারের প্রতিক্ষারত একটি ছেলে' - মোহাম্মদ আজমল কাসাব বললেই আমাদের সামনে ভেসে এসেছে এই মুখ৷ টিভির পর্দায়ও বারে বারে দেখানো হয়েছে ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার একমাত্র জীবিত ও ধৃত আসামী আজমাল কাসাব-কে৷ প্রশ্ন উঠেছে - কি সাজা হবে তার ?

অবশেষে বৃহস্পতিবার, বিচারক এম এল তাহলিয়ানি হত্যা, ভারতের বিরুদ্ধে লড়াই, ষড়যন্ত্র এবং সন্ত্রাসবাদের অপরাধে কাসাব-কে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন৷ আর কাসাব যতক্ষণ না মারা যাবে ততক্ষণ তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখতে হবে বলেও তাঁর রায়ে উল্লেখ করেন বিচারপতি৷

২৬/১১'র মুম্বই হামলায় পাকিস্তান থেকে আসা দশ জন জঙ্গির হাতে সেদিন প্রাণ দিয়েছিল ১৬৬ জন৷ এঁদের মধ্যে ২৫ জন ছিল বিদেশি৷ সেদিন দীর্ঘ সময় ধরে গোলাগুলি চলেছিল৷ মুম্বই-এর তাজ হোটেল, কামা হাসপাতাল, ছত্রপতি শিবাজী টারমিনাস স্টেশন ও নরিম্যান হাউস ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল গুলিতে৷ চলেছিল সংঘর্ষ৷ দশ জন জঙ্গির মধ্যে নয় জনই মারা যায় পুলিশের গুলিতে৷ মারা যান মুম্বই পুলিশের তিনজন উচ্চপদস্থ অফিসারও৷

কাসাব ছিল সেই হত্যাকারীদের মধ্যে একমাত্র জীবিত আসামী৷ তাই স্বাভাবিকভাবেই, গত প্রায় দেড় বছর ধরে ঐ মৃতদের আত্মীয়রা অপেক্ষা করে আছে একমাত্র জীবিত আসামী কাসাব-এর সাজার জন্য৷ গত ৩রা মে তাকে দোষী সাবস্ত করে আদালত৷ সরকার পক্ষের কৌঁসুলি উজ্জল নিকাম সেদিন জানান যে, কাসাব কোন সাধারণ খুনি নয়৷ ভারত রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ষড়যন্ত্র, জঘন্য হত্যাকান্ডসহ ৮৬টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে৷ যার সবগুলিতেই দোষী প্রমাণিত হয়েছিল সে৷ কাজেই তার মৃত্যুদন্ডই প্রাপ্য, বলেন নিকাম৷ বৃহস্পতিবার তার মৃত্যদন্ড ঘোষণা করলো আদালত৷

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে ফরিদকোট নামের ছোট্ট একটা গ্রামে জন্ম হয় কাসাব-এর৷ নিতান্তই একটি সাধারণ পরিবারে৷ পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে বাবা-মায়ের তৃতীয় সন্তান কাসাব৷ ছোটবেলায় নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থা ছিল তাদের৷ এমনই হাল যে, দারিদ্র্যের কারণে একটা সময় স্কুল ছেড়ে দেয় কাসাব৷ এর পরপরই শুরু হয় কঠোর সংগ্রাম৷ কখনও বাবার ধাবায়, কখনও লাহোর শহরে মজদুর হিসেবে৷ তখন থেকেই ছোট-খাটো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে কাসাব৷ এরপর, ২০০৭ সালে চলে যায় সে রাওয়ালপিন্ডিতে৷ সেখানে জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সংস্পর্শে আসে কাসাব৷ চলে প্রশিক্ষণ৷ শিখতে হয় নানা রকম আগ্নেয়াস্ত্র, গ্রেনেড, রকেট লঞ্চার এবং মর্টার চালানোর কৌশল৷ শিখতে হয় সাঁতার, চলে উগ্রবাদী ধর্মীয় শিক্ষা এবং জিহাদের মন্ত্রণাও৷ এভাবেই, খুব শিগগির মুম্বই হামলার জন্য তৈরি হয়ে ওঠে কাসাব৷ পরিণত হয় ‘কিলিং মেশিন’-এ৷

প্রতিবেদন : দেবারতি গুহ

সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক