1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কাস্ত্রোর মৃত্যুতে শোকাচ্ছন্ন কিউবা

২৮ নভেম্বর ২০১৬

শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর মরদেহ শনিবার দাহ করা হয়েছে৷ অবিসংবাদিত এই নেতার মৃত্যুর শোক কাটিয়ে উঠতে পারছে না কিউবাবাসী৷ নয়দিনের রাষ্ট্রীয় শোক চলছে৷

https://p.dw.com/p/2TMY2
ছবি: Getty Images/AFP/G. Legaria

হাভানা একটি প্রাণবন্ত শহর৷ কিন্তু কাস্ত্রোর মৃত্যুতে এই শহরটিরও যেন মৃত্যু হয়েছে৷ চারদিকে নেমে এসেছে নিস্তব্ধতা৷ বন্ধ আছে মদ্যপান ও বিক্রি৷ বিভিন্ন বিনোদন অনুষ্ঠান ও জনপ্রিয় বেসবল ম্যাচ বাতিল করা হয়েছে৷ মাত্র ৩২ বছর বয়সে ফিদেল কাস্ত্রো ক্ষমতা গ্রহণ করে টানা অর্ধশত বছর ধরে নিজের দেশে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় লড়াই করে গেছেন৷

যার শ্লোগান ছিল ‘সমাজতন্ত্র, নয়ত মৃত্যু'৷ জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত হৃদয়ে এই ধারণাই পোষণ করে গেছেন তিনি৷ কমিউনিস্ট ও পুঁজিবাদী শিবিরে বিভক্ত গত শতকের বিশ্বে ঠাণ্ডা লড়াইয়ের এক প্রতীকে পরিণত হয়েছিলেন ফিদেল কাস্ত্রো৷ শুক্রবার রাতে কাস্ত্রোর মৃত্যুর খবর ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই রাজধানী হাভানার রাস্তাগুলো নীরব হয়ে আছে৷ শোকের এই পরিবেশে ১৩ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো সাপ্তাহিক প্রতিবাদ মিছিল বন্ধ রেখেছে কিউবার সবচেয়ে পরিচিত ভিন্নমতাবলম্বী গোষ্ঠী৷

এখন দেহভস্ম একটি শবাধারে রাখা হয়েছে৷ সোমবার থেকে দু'দিনের শোকসভায় বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধান ও নেতারা যোগ দেবেন৷ শ্রদ্ধা জানাবেন তার দেহভস্মে৷ সবার শ্রদ্ধা জানানো শেষে ৩০ নভেম্বর ১৯৫৯ সালের বিপ্লবে ফিদেলের গেরিলা বাহিনী যে পথে হাভানা পৌঁছেছিল, তাঁর উল্টোপথ অনুসরণ করবে দেহভস্ম৷

এভাবে সেটা সান্তিয়াগো দ্য কিউবা শহরে গিয়ে পৌঁছাবে৷ ১৯৫০-এর দশকে পূর্বাঞ্চলীয় এই শহরটি থেকেই বিপ্লব শুরু করেছিলেন ফিদেল৷  ৪ ডিসেম্বর সেখানেই তাঁর রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টি শেষে দেহভস্ম সমাহিত করা হবে৷ এর মাধ্যমে নয় দিনের রাষ্ট্রীয় শোক শেষ হবে৷ ওই দিন হাভানার রেভোল্যুশন স্কয়ারে আরেকটি শোকসভা অনুষ্ঠিত হবে৷ বিদেশি বিশিষ্ট অতিথিরা যোগ দেবেন এ অনুষ্ঠানে৷

জাতীয় গ্রন্থাগারের সামনে টাঙানো হয়েছে কাস্ত্রোর বিশাল প্রতিকৃতি৷ প্রতিকৃতি টাঙানোর সময় এক ব্যক্তি বললেন, ‘‘তিনি ছিলেন আমাদের জন্য সব৷ তাই তাঁর মৃত্যুতে ক্ষতিগ্রস্ত হননি এমন একজনও খুঁজে পাওয়া মুশকিল৷'' মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রো, অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা, কমিউনিস্ট নেতারা প্রয়াত ফিদেল কাস্ত্রোর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন৷ এরপর রাতে শ্রদ্ধা জানাবেন বিশ্ব নেতারা৷

১৯৬১ সালে তাকে হত্যা পরিকল্পনা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত বে অফ পিগস৷ তাদের সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়৷ সারা জীবনে তাঁর উপর ৬০০-রও বেশি গুপ্তহত্যা চেষ্টা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি৷

উত্তর কোরিয়ায় শোক পালন

কাস্ত্রোর মৃত্যুতে সোমবার থেকে তিনদিনের আনুষ্ঠানিক শোক পালন শুরু করেছে উত্তর কোরিয়া৷ দেশটি মার্কিন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে উল্লেখ করেছে কাস্ত্রোকে৷ সরকারি ভবনগুলোতে পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে৷ এছাড়া বিভিন্ন ট্রেন ও মেট্রো স্টেশনে কাস্ত্রোর সামরিক পোশাক পরা কালো ফ্রেমবন্দি ছবি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য রাখা হয়েছে৷

ফ্লোরিডায় উৎসবের আমেজ     

ফিদেল কাস্ত্রোর মৃত্যুতে উল্লাসে মেতে ওঠে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী কিউবার ভিন্নমতাবলম্বী নির্বাসিত লোকজন৷ যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২০ লাখ কিউবান নাগরিকের বাস৷ এর মধ্যে ৭০ শতাংশই থাকে ফ্লোরিডায়৷

এই অঙ্গরাজ্যের মায়ামি শহরে গতকালও তারা আনন্দে মেতে থাকে৷ ফিদেলের মৃত্যুসংবাদ প্রচার হওয়ার পরপরই গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত কিউবানরা উল্লাস করতে করতে সড়কে নেমে যায়৷

এপিবি/এসিবি (এপি, এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য