1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আয়ারল্যান্ডের কথা

২৯ নভেম্বর ২০১৩

এককালের ‘‘কেল্টিক টাইগার'' আয়ারল্যান্ড ‘বুম' থেকে ‘বাস্ট', অর্থাৎ রাজা থেকে ফকিরে পৌঁছে যায় অতি কম সময়ে৷ এবার তারাই ইউরো এলাকার প্রথম দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক বেলআউটের ছত্রছায়া পরিত্যাগ করতে চলেছে৷

https://p.dw.com/p/1AQEC
ছবি: PETER MUHLY/AFP/Getty Images

আয়ারল্যান্ড যে অর্থনৈতিক বিচারে নিরাময়ের পথে, তার প্রমাণ হিসেবে একটি পরিসংখ্যান পেশ করা চলতে পারে৷ নেওয়া যাক ‘গোস্ট এস্টেট' বা ‘ভুতুড়ে' আবাসন প্রকল্পগুলোকে৷ ২০০৮ সাল পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডে এই আবাসন প্রকল্পগুলো ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছিল৷ কম সুদে ব্যাংক ঋণ এবং সেই সঙ্গে কর ছাড়ের ফলে অনেকেই ‘প্রপার্টি'-তে বিনিয়োগ করতে শুরু করেছিলেন - এ' হলো নব্বই-এর দশকের কথা৷

২০০৮ সালে সেই প্রপার্টির বাজার ধসে যাওয়ার পর বহু আংশিকভাবে নির্মিত আবাসন প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়৷ যারা সেই সব প্রকল্পে ফ্ল্যাট কিনেছেন, তাদের দেখতে হয়, প্রকল্পের সাইটগুলোর কি দৈন্যদশা৷ ফুটপাথ কিংবা তারের বেড়া নেই; ম্যানহোল কভার এবং রাস্তার আলো চুরি গেছে৷ অবক্ষয়ের সেখানেই অন্ত নয়: কোনো কোনো প্রকল্পের একাংশকে শেষমেষ বুলডোজার দিয়ে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনো পথ কিংবা পন্থা থাকেনি৷

Irland Abtreibungsgegner vor dem Parlament in Dublin
আজ যারা আয়ারল্যান্ড ছাড়ছেন, তারা চাকরি ছেড়েও বিদেশে যাচ্ছেনছবি: Reuters

আয়ারল্যান্ডে বাড়ি তৈরি বাজার তুঙ্গে পৌঁছয় ২০০৭ সালে৷ তারপরে যে ‘প্রপার্টি ক্র্যাশ' ঘটে, প্রধানত তার কারণেই আয়ারল্যান্ডকে ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক আর্থিক ত্রাণের শরণাপন্ন হতে হয়৷ আয়ারল্যান্ডে প্রপার্টির মূল্য আজও ২০০৭ সালের তুলনায় ৪৭ শতাংশ কম – এবং তা রাজধানী ডাবলিনে বাড়ির দাম বাড়া সত্ত্বেও৷ তবে গত ১২ মাসে সারা দেশে প্রপার্টির দাম বেড়েছে গড়ে ছয় শতাংশ, ডাবলিনের ক্ষেত্রে যেটা ১৫ শতাংশ৷

ফেরা যাক ভুতুড়ে আবাসন প্রকল্পগুলোর কথায়৷ ২০১০ সালে আয়ারল্যান্ডে এ'ধরনের অসম্পূর্ণ বা পরিত্যক্ত আবাসন প্রকল্পের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৮৪৬; আপাতত সেটা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৫৮-য় -– অর্থাৎ প্রায় ৫৬ শতাংশ কম৷ সরকারি বিবরণে দেখা যাচ্ছে যে, বিগত ১২ মাসে ৫০০টি অসম্পূর্ণ আবাসন প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে৷ সব মিলিয়ে এটা যে দেশের অর্থনৈতিক নিরাময়ের একটা বড় লক্ষণ, তা-তে কোনো সন্দেহ নেই৷

দেশান্তরী

তবে আয়ারল্যান্ড এমন একটি দেশ, যার অর্থনৈতিক পরিস্থিতির আন্দাজ পেতে হলে চিরকালই নজর রাখতে হয় দেশান্তরীর সংখ্যাটির দিকে – খেয়াল রাখবেন, অভিবাসী নয়, দেশান্তরী৷ ঊনবিংশ শতকের গোড়ায় মন্বন্তরের সময় আয়ারল্যান্ড ছেড়ে দেশত্যাগী হয়েছিলেন পাঁচ লাখ মানুষ৷ আবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পঞ্চাশের দশকেও প্রায় আড়াই লাখ আইরিশ দেশ ছাড়েন৷

Iren stimmen über Auflösung des Senats ab
২০০৮ সাল পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডে ‘ঘোস্ট্ এস্টেট্' বা ‘ভুতুড়ে' আবাসন প্রকল্পগুলো ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছিলছবি: picture-alliance/AP-Photo

কিন্তু আজ যারা আয়ারল্যান্ড ছাড়ছেন, তারা চাকরি ছেড়েও বিদেশে যাচ্ছেন, শুধু বেকারত্ব থেকে পালিয়ে কাজের সন্ধানে নয়৷ তার একটা কারণ হলো, বিশেষ করে চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে, কাজের মাত্রাধিক সময় এবং কষ্টদায়ক পরিবেশ৷ হাসপাতালে কনসালট্যান্ট পাওয়া যেমন শক্ত, তেমন জুনিয়র ডাক্তারদের একটানা ৩১ ঘণ্টা ডিউটি করার দৃষ্টান্তও আছে৷ কাজেই তারা দেশ ছাড়ছেন এবং আয়ারল্যান্ডে আবার শোনা যাচ্ছে একটি ‘হারানো প্রজন্মের' কথা৷

সরকারের প্রচেষ্টা হলো আয়ারল্যান্ডকে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির একটি কেন্দ্রবিন্দু করে তোলা: যে কারণে গুগল, ফেসবুক, ই-বের প্রতি আইরিশ সরকার এতোটা সদয়৷ তার ফলও পাওয়া যাচ্ছে৷ আয়ারল্যান্ডে বেকারত্ব কমে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৮ শতাংশে – যা কিনা ইউরো এলাকার গড়ের সামান্য উপরে৷ নয়ত আয়ারল্যান্ডে বেকারত্বের হার ছিল ১৫ শতাংশ – আবার তা-ও মানুষজন বিপুল সংখ্যায় দেশান্তরী হবার কারণে, নয়ত বেকারত্বের হার দাঁড়াত ২০ শতাংশে৷

এসি/জেডএইচ (এএফপি, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য