1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্যাথরিন বিগেলো’র অস্কার পাওয়া কি হলিউড’কে বদলে দেবে?

১০ মার্চ ২০১০

সাতই মার্চের সন্ধ্যায় বিগেলো প্রথম মহিলা হিসেবে সেরা পরিচালকের অস্কার জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন৷ আটই মার্চ ছিল শততম আন্তর্জাতিক নারী দিবস৷ যোগাযোগটা কি শুধু কাকতালীয়?

https://p.dw.com/p/MORO
অস্কার হাতে ক্যাথরিন বিগেলোছবি: AP

একদিকে বিগেলো জিতলেন - যদিও ১৯৩৯ সালে কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেত্রী হ্যাটি ম্যাকড্যানিয়েলের ‘‘গন উইথ দ্য উইন্ড'' ছবিতে অভিনয়ের জন্য অস্কার জেতা, অথবা ১৯৬৩ সালে ‘‘লিলিজ অফ দ্য ফিল্ড'' ছবির জন্য কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেতা সিডনি পয়টিয়ারের অস্কার জয়ের সঙ্গে ঐতিহাসিক গুরুত্বে বিগেলো'র জয় পাল্লা দিতে পারবে না, কেননা ‘জেন্ডার ওয়ার'-এর রকমসকম কিছুটা আলাদা৷ নারী-পুরুষের সমানাধিকারের যুদ্ধে কোন জয়টা যে মৌখিক, আর কোনটা বাস্তব, তা বোঝা যায় আখেরে৷

Oscar für Hattie McDaniel 1940
‘‘ম্যামি’’-র ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য হ্যাটি ম্যাকড্যানিয়েলের শ্রেষ্ঠ সহ-অভিনেত্রীর অস্কারছবি: AP

সেলুলয়েডের সীমানা

দেখা যাক পরিসংখ্যান কি বলছে৷ পরিসংখ্যান বলছে, বিগত কয়েক বছরে হলিউডে মহিলা চিত্রপরিচালকদের সংখ্যা কমেছে৷ বড় ফিল্ম স্টুডিওগুলোর ছবিগুলিতে মহিলাদের জন্য রোল বা পার্টও কমেছে৷ আরো খুঁটিয়ে দেখতে গেলে, ২০০৯ সালে ওপরের আড়াইশো বক্স অফিস হিট ছবিগুলির মধ্যে পরিচালক, প্রযোজক বা চিত্রনাট্য রচয়িতার মতো গুরুত্বপূর্ণ পদগুলিতে মহিলারা ছিলেন মাত্র ১৬ শতাংশ পদে৷ এই পরিসংখ্যান ২০০৮ সালের তুলনায় অপরিবর্তিত হলেও, ২০০১ সালের তুলনায় তিন শতাংশ কম৷

‘দ্য সেলুলয়েড সিলিং' শীর্ষক সমীক্ষাটি আরো জানাচ্ছে যে, পরিচালকের পদে মহিলারা ছিলেন মাত্র সাত শতাংশ, যা কিনা ২০০৮ সালের তুলনায় দুই শতাংশ কম৷ ইউনিভার্সিটি অফ সাদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার অপর একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ২০০৯ সালের টপ ১০০টি ছবির প্রায় ৪,৪০০ সংলাপযুক্ত রোল বা ভূমিকার মধ্যে মাত্র ৩০ শতাংশ ছিল নারী চরিত্রের৷ অথচ কোনো ছবির একজন পরিচালক মহিলা হলেই ঐ অনুপাত বেড়ে ৪৪ শতাংশে দাঁড়াতো৷

Plakat des Films Twilight - Biss zum Morgengrauen
‘বিজনেস’ হিসেবেও সাফল্য চাই

কি মুভি? কেমন বিজনেস?

বিগেলোর ছবিটি এক হিসেবে যাকে বলে কিনা টিপিকাল মহিলাদের ছবি, আবার আরেক হিসেবে নয়৷ কম বাজেটের ছবি, বক্স অফিসে বিশেষ সুবিধে করতে পারেনি - সেই হিসেবে নিন্দুকরা একে মহিলাদের ছবি বলবে৷ অপরদিকে এর উপজীব্য কিন্তু রোম্যান্স কি পারিবারিক সম্পর্ক নয়, বরং যুদ্ধ, বোমা এবং সৈনিক৷ কাজেই ছবিটি আদৌ ‘‘মহিলাসুলভ'' নয়৷ এছাড়া কে বলেছে মহিলাদের ছবি টাকা করতে পারে না? ‘‘টোয়াইলাইট'' ফ্র্যানচাইজের দু'টি ছবি কমবয়সি মহিলাদের জন্য, সারা বিশ্বে টিকিট বেচেছে এক বিলিয়ন ডলারের বেশী৷ ছবি দু'টির একটির পরিচালক এক মহিলা, অন্যটির একজন পুরুষ৷

কাজেই বিগেলে'র অস্কার জেতাটা প্রথমে গালগল্প, বড়জোর প্রতীক, কি আরো বেশী হলে প্রেরণা হয়ে থাকছে৷ তাঁর পরে অন্যান্য মহিলা পরিচালকরা তাঁর এই সাফল্যের পুনরাবৃত্তি করতে পারেন কিনা, সেটা নির্ভর করবে তাঁদের ছবির গুণমান, গ্রাহক এবং বক্স অফিস রিটার্নের উপর৷ কথাটা যে ‘মুভি বিজনেস', সেটা স্মরণে রাখা ভালো৷ গত ১০০ বছরের বেশী, অর্থাৎ আন্তর্জাতিক নারী দিবসের চেয়েও বেশীদিন ধরে হলিউড ঐ প্রথাতেই চলছে৷

প্রতিবেদক: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই