1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্ষণিকের মুহূর্ত

ইয়ানা ও্যর্টেল / এসি২১ ডিসেম্বর ২০১৩

আকাশে বিদ্যুৎ চমকানো থেকে শুরু করে বুদবুদ ফেটে যাওয়ার মতো ঘটনা আমাদের বিস্মিত করলেও ঠিক সেই মুহূর্তগুলি ভালো করে দেখার উপায় নেই মানুষের৷ কিন্তু এক সুইস আলোকচিত্র শিল্পী নিপুণভাবে তা মুহূর্ত ক্যামেরার লেন্সে ধরে রাখছেন৷

https://p.dw.com/p/1Advh
Symbolbild Klammern Wäscheklammer Koalition schwarz rot grün
প্রতীকী ছবিছবি: picture-alliance/dpa

চমকপ্রদ সব ছবি তোলেন আলোকচিত্র শিল্পী ফাবিয়ান ও্যফনার৷ সাবানের পানি থেকে ফোটানো বুদবুদ: ঠিক ফাটার মূহূর্তে তোলা ছবি৷ ফেটে যাওয়ার মুহূর্তে তোলা রঙিন বেলুনের ছবি৷ সেন্ট্রিফিউজে কীভাবে রং ছড়িয়ে পড়ে, তার ছবি৷ ফাবিয়ান বলেন, ‘‘ফটোগ্রাফিতে আমাকে যা টানে, তা হল একটি ক্ষণিকের মুহূর্তকে ধরে রাখার সুযোগ৷ মুহূর্তটা এতোই ক্ষণিক যে, মানুষের চোখে তা ধরা পড়ে না৷ কিন্তু ফটোগ্রাফিতে তেমন একটি মুহূর্তকেও চিরকালের জন্য ধরে রাখা সম্ভব৷ সেটাই হল ফটোগ্রাফির আশ্চর্য দিক৷''

সুইজারল্যান্ডের উত্তর-পশ্চিমে একটি ছোট্ট শহরে ফাবিয়ান ও্যফনারের স্টুডিও৷ তরল রংয়ে ভরা একটি আধারে একটি পাথর গিয়ে পড়ার সঠিক মুহূর্তটিতে ছবিটি তুলতে চান তিনি৷ এক সেকেন্ডের এক হাজার ভাগের এক ভাগ এই মুহূর্তটিকে ধরার জন্য ফাবিয়ানকে রীতিমতো মাথা ঘামাতে হয়েছে৷ ফাবিয়ান বলেন, ‘‘পাথরটা আধারের উপর পড়ার সময় যে শব্দটা হয়, সেটা এই যন্ত্রে ধরে কম্পিউটারের মাধ্যমে ফ্ল্যাশলাইটগুলোকে সক্রিয় করা হয় – যাতে পাথরটা যখন তরল রংয়ের উপরিভাগে আঘাত হানে, ঠিক সেই মুহূর্তে ফ্ল্যাশ জ্বলে ও ছবি তোলা হয়৷''

চাই ধৈর্য ও কঠিন পরিশ্রম

এ ধরনের একটি শুটিং-এর জন্য ফাবিয়ান-কে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে ছবির প্রযুক্তি, মালমশলা ও সাজসরঞ্জাম নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়৷ ফাবিয়ান বলেন, ‘‘আমি ঠিক ততোটা তথ্য দেবার চেষ্টা করি, যাতে লোকে বুঝতে পারে, ছবির পিছনে আইডিয়াটা কী৷ কিন্তু এতোটা নয় যে, কারোর পক্ষে ঠিক এই ছবিটাই তোলা সম্ভব হবে৷''

এতো সুপরিকল্পিত ছবিও শেষমেষ যে কী হয়ে দাঁড়ায়, তাতে ফাবিয়ান স্বয়ং মাঝেমধ্যে চমকে যান৷ অনেক দর্শক শুনে রীতিমতো আশ্চর্য হন যে, এ গুলো হাতে আঁকা ছবি নয়৷ ফাবিয়ান বলেন, ‘‘এই ছবিটাই ধরুন৷ এখানে আমি ফেরোফ্লোরিড নামের একটি চৌম্বকশক্তিযুক্ত তরল পদার্থের সঙ্গে জলরং মিশিয়েছি৷ হঠাৎ তা থেকে পপ আর্টের মতো কালো কালো রেখা টানা এই সব আকার বেরোয়৷ দেখেই কিথ হ্যারিং-এর কথা মনে পড়েছিল৷''

প্রযুক্তি ও শিল্পের মেলবন্ধন

বিজ্ঞানের নিয়মকানুন আর ল্যাবোরেটরির এক্সপেরিমেন্টকে কাব্যময় ছবিতে পরিণত করাই হল ফাবিয়ান ও্যফনারের লক্ষ্য৷ তাঁর ‘ড্যান্সিং কালার্স' পর্যায়ে তিনি শব্দতরঙ্গকে নৃত্যরত বর্ণালী হিসেবে দেখাতে চেয়েছেন৷ ফাবিয়ান বলেন,‘‘এ ক্ষেত্রে রক মিউজিকই ভালো কাজ করে৷ তবে আমি সাধারণত গান বাজাই না, বরং নানা ধরনের শব্দ ব্যবহার করি, যেমন কাচ ভাঙার শব্দ কিংবা হৃৎস্পন্দনের শব্দ৷ সেই শব্দের ফ্রিকোয়েন্সি অনুযায়ী আকৃতিটাও নানারকমের হয়: কখনো একটা ফুটন্ত ফুলের মতো; কখনো একটা আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের মতো৷ শব্দের ফ্রিকোয়েন্সি অনুযায়ী নানা ধরনের ফলাফল পাওয়া যায়৷''

ফবিয়ান পেশায় প্রোডাক্ট ডিজাইনার৷ নিত্যনতুন প্রকল্পের জন্য তাঁর আইডিয়ার কোনো অভাব নেই৷ সে সব আইডিয়ার জন্য গ্রাহকেরও অভাব নেই৷ ফাবিয়ান বলেন, ‘‘এখন আমি বেশ কয়েকটা প্রোজেক্ট নিয়ে ব্যস্ত৷ সব ক'টাতে একসঙ্গেই কাজ করি, যাতে একটায় এগোতে না পারলে অন্য আরেকটায় চলে যাই৷ আপাতত একটা প্রোজেক্ট হল: পেট্রোলের সঙ্গে জলরং মেশাচ্ছি৷ মাঝেরটা হল স্কচ হুইস্কি নিয়ে একটা প্রোজেক্ট: হুইস্কি দিয়ে মগজের মতো একটা আকৃতি সৃষ্টি করা৷ তৃতীয়টা হল পারফিউম ইন্ডাস্ট্রির জন্য: এখানে আমি বিভিন্ন রংয়ের ফোঁটা মিশিয়ে একটা গোলাকৃতি সৃষ্টি করি৷''

ফাবিয়ান ও্যফনারের ছবিগুলো দেখলে জানতে ইচ্ছে করে, ওগুলো কী ভাবে তোলা হয়েছে৷ কিন্তু সে রহস্য ভেদ করার পরেও থেকে যায় নিজের কল্পনা – ছবি দেখার যা আসল মজা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য