কয়লার চুলা ছাড়ুন, সবাই বাঁচুন
১২ জুলাই ২০১৩সম্মেলনে রান্না হলো, খাওয়া হলো, খাওয়ার সময় কথাও হলো অনেক৷ মূল কথা – এশিয়া, ল্যাটিন অ্যামেরিকা আর আফ্রিকায় এখনো কোটি কোটি মানুষ কাঠ বা কয়লার চুলায় রান্না করেন৷ এর ফলে নিজেরা মৃত্যুকে ডেকে আনেন, পরিবেশেরও ক্ষতি হয় প্রচুর৷
এভাবে রান্না অবশ্য চলছে সেই প্রস্তর যুগ থেকেই৷ মানুষ যখন পাথরে পাথর ঘষে আগুন জ্বালায়, তখন থেকেই চলে আসছে গাছের ডাল পুড়িয়ে শিকার করা পশুর মাংস আগুনে ঝলসে খাওয়া৷ সেই থেকে মানবজাতির খাদ্য তালিকায় এসেছে অনেক নতুনত্ব৷ বিজ্ঞানের অগ্রগতি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এনেছে ব্যাপক পরিবর্তন৷ কিন্তু অনেকের হেঁসেলই এখনো পড়ে আছে সেই যুগে৷ বন শহরের এক হোটেলে আয়োজিত সম্মেলনে বক্তাদের কথা থেকে বেরিয়ে এসেছে ভয়ংকর কিছু তথ্য৷ ভাবতে অবাক লাগে, এমন চুলায় রান্না করার কারণে নাকি প্রতি বছর নানা রোগে ভুগে মারা যায় ৪০ লক্ষ মানুষ! বলা বাহুল্য, মৃতদের প্রায় সবাই নারী৷
আবদ্ধ ঘরে ধোঁয়া এমনই প্রভাব ফেলে মানব দেহে৷ নিউমোনিয়া, ফুসফুসের জটিল অন্যান্য রোগ তো হয়ই, হৃদরোগ হয়, চোখে ছানি পড়ে, এমনকি সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষেত্রেও বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করে কাঠ বা কয়লার চুলা৷ তারপরও এমন চুলার ব্যবহার খুব একটা কমছে না৷ ফলে উজাড় হচ্ছে বনের গাছপালা৷ প্রতি বছর সারা পৃথিবীতে ৩০ লক্ষ টন কাঠ পোড়ে রান্নাঘরে, ভাবা যায়!
বন শহরে জুন মাসের শেষ দিকে অনুষ্ঠিত সম্মেলনটি এসব বিষয় তুলে ধরার জন্যই আয়োজন করেছিল ‘দ্য গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ক্লিন কুকিং স্টোভস'৷ নাম দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন সংস্থাটির কাজ হলো বিশ্বব্যাপী আধুনিক চুলার ব্যবহার বাড়ানোয় ভূমিকা রাখা৷ সম্মেলনে এশিয়া, আফ্রিকা এবং ল্যাটিন আমেরিকার নারীদের প্রতি কাঠ বা কয়লার চুলা ছেড়ে আধুনিক চুলা ব্যবহার করে নিজেদের এবং গাছপালাকে বাঁচানোর আহ্বান জানানো হয়৷ গ্যাস, বায়োগ্যাস এবং সৌরবিদ্যুৎ চালিত বিভিন্ন ধরনের চুলা এবং চুলার উৎপাদক ও ব্যবহারকারীরাও ছিলেন সেখানে৷ ‘দ্য গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ক্লিন কুকিং স্টোভস' জানিয়েছে, এখন পৃথিবীতে ৩০ লক্ষ আধুনিক চুলা ব্যবহৃত হচ্ছে৷ সংস্থাটির লক্ষ্য, ২০২০ সালের মধ্যে সংখ্যাটিকে ১০ কোটিতে নিয়ে যাওয়া৷