1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

খালেদার লন্ডন সফর নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আগ্রহ

সমীর কুমার দে ঢাকা
১৫ জুলাই ২০১৭

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া লন্ডন সফর করছেন৷ সেখান থেকে ফিরে সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করবেন তিনি৷ ফলে তাঁর এই সফর ঘিরে রাজনৈতিক মহলে একটা আগ্রহ তৈরি হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/2gb1C
Bangladesch Khaleda Zia vor dem Gericht in Dhaka
ছবি: M. uz Zaman/AFP/Getty Images

খালেদা জিয়ার এই সফরকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ৷ দলটির নীতি-নির্ধারকরা চান, খালেদা জিয়ার লন্ডন সফর যেন পারিবারিক সফরের ভেতরই সীমাবদ্ধ থাকে৷ বিএনপিও এই সফরকে পারিবারিক ও চিকিৎসা সংক্রান্ত সফরই বলছে৷ এর সঙ্গে রাজনীতিকে মেলাতে চান না তারা৷ তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, খালেদা জিয়া দেশে ফেরার পরই এ বিষয়ে বলা যাবে৷

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘নেত্রী চোখ ও পায়ের চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাচ্ছেন৷ লন্ডনে তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমান রয়েছেন৷ সেখানে তিনি ছেলে ছাড়াও নাতনিদের সঙ্গে দেখা করবেন৷'' 

Hanif.mp3 - MP3-Stereo

তিনি বলেন, ‘‘তারেক রহমানতো বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান৷ ফলে তাদের দু'জনের দেখা হলে রাজনীতি নিয়ে তো কিছু আলোচনা হতেই পারে৷ সেটাকে অত বড় করে দেখার কিছু নেই৷ তাই এটাকে কোনভাবেই রাজনৈতিক সফর না ভেবে চিকিৎসা ও পারিবারিক সফর হিসেবে দেখাই শ্রেয়৷ আর দেশেতো রাজনীতি করার কোন পরিবেশই নেই৷ ফলে এসব আলোচনা অবান্তর৷''

এদিকে, ক্ষমতাসীন দলের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার মতে, খালেদা জিয়ার এই সফর পারিবারিক হলেও তিনি লন্ডন যাচ্ছেন দু'টি টার্গেট নিয়ে৷ এগুরো হলো, আন্তর্জাতিক মিডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ ও বিদেশে ‘লবিস্ট' নিয়োগ করা৷ তাদের ধারণা, এই সফরে মিডিয়ার সঙ্গে বড় অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে বিশ্ব জনমত সৃষ্টি ও চড়া মূল্যে ‘লবিস্ট' নিয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি করতে পারেন খালেদা জিয়া৷ এছাড়া এই সফরে হতে পারে একাদশ সংসদ নির্বাচন ভণ্ডুল করার শলা-পরামর্শও৷ এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আপাতত লন্ডনকে নিরাপদ মনে করে সেখানে যাচ্ছেন তিনি৷

তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘খালেদা জিয়ার এই সফর নিয়ে আমাদের কোন আগ্রহ নেই৷ কারণ আমরা তো আর বিএনপির রাজনীতি করি না৷ আমরা জনগণের রাজনীতি করি, জনগণকে নিয়েই আমাদের চিন্তা৷'' 

Mirza.mp3 - MP3-Stereo

প্রসঙ্গত, দেশে হুলিয়া থাকায় ছেলের সঙ্গে প্রবাসেই খালেদা জিয়া সাক্ষাৎ করছেন গত এক দশক ধরে৷ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বলে আসছেন, প্রবাসে থাকা সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেকের ইশারাই বিএনপি পরিচালিত হয়৷ নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা এবং আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়ার আগে খালেদার এই লন্ডন সফর নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আগ্রহ৷ লন্ডন যাওয়ার আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক করেন খালেদা জিয়া, যেখানে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়৷ 

খালেদা কবে নাগাদ ফিরবেন- এমন প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা নির্ভর করবে তার চিকিৎসার উপর৷ সর্বশেষ ২০১৫ সালে ১৬ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া লন্ডন গিয়েছিলেন৷ সেবার তারেকসহ পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদ করেই দেড় মাস পর ফিরেছিলেন তিনি৷ তারেক ও তাঁর স্ত্রী-কন্যারা ছাড়াও প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী ও দুই সন্তানও তখন লন্ডনে ছিলেন৷ এবার কোরবানির ঈদ হবে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে৷ যদি ঈদ করে খালেদা জিয়া দেশে ফেরেন তাহলে দেড় মাসের বেশি সময় বাইরে থাকবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন৷ 

Haq.mp3 - MP3-Stereo

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘খালেদা জিয়ার সফর নিয়ে এখনই কিছু বলা যাবে না৷ উনি দেশে ফিরে এলে বোঝা যাবে সেখানে তিনি কি করেছেন৷ আর আওয়ামী লীগ নেতারা তো উন্নয়নের নামে এখনই ভোট চাইতে শুরু করেছেন৷ তারা বলছেন, উন্নয়ন ধরে রাখার জন্য আওয়ামী লীগকে আরেকবার ভোট দিতে হবে৷

তিনি বলেন, ‘‘আর বিএনপিতো আছে সহায়ক সরকার নিয়ে৷ এতে জনগণের লাভ কী? জনগণের জন্যতো বিএনপি ভালো কিছু বলতে পারছে না৷ আসলে দেশে এখন বাকস্বাধীনতা অনেকটাই সীমাবদ্ধ৷ মিডিয়াও এ ব্যাপারে তেমন কিছু লিখছে না৷ এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে৷''