1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গদ্দাফির সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে জিহাদের ডাক

২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০

অথচ এই বিরোধের উৎস ২০০৮ সালে, গদ্দাফি-পুত্র হ্যানিবাল ও তাঁর স্ত্রীর একটি সুইজারল্যান্ড সফরকে কেন্দ্র করে৷ গত মাসে সেই দীর্ঘমেয়াদী বিরোধের নিষ্পত্তির সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছিল৷ তবে গদ্দাফি আবার হুঙ্কার দিলেন কেন?

https://p.dw.com/p/MDeZ
শুক্রবার বেনগাজিতে গদ্দাফির জিহাদের ডাকছবি: AP

বৃহস্পতিবার বেনগাজিতে প্রদত্ত তাঁর ভাষণে লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গদ্দাফি বলেন যে, সুইজারল্যান্ড মসজিদের মিনার তৈরী নিষিদ্ধ করার ফলেই তিনি এই ডাক দিচ্ছেন৷ কিন্তু বিশ্লেষকরা এর পিছনে প্রায় দু'বছর পুরনো সুইশ-লিবীয় বিরোধের একটি নতুন অধ্যায় দেখতে পাচ্ছেন৷ এবং সেই সঙ্গে গদ্দাফির নতুন উচ্চাশা কিংবা উচ্চাভিলাষের একটি অভিব্যক্তি৷

২০০৮ সালে সুইশ পুলিশ গদ্দাফি-পুত্র হ্যানিবাল ও তাঁর স্ত্রীকে জেনেভার একটি হোটেলের কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের দায়ে সাময়িকভাবে আটক করে৷ তার জবাব হিসেবেই কিনা বলা শক্ত, তবে লিবিয়া তার পর পরই দু'জন সুইশ ব্যবসায়ীকে লিবিয়া ছাড়া থেকে বিরত করে৷ দু'জনের বিরুদ্ধেই ভিসা শেষ হয়ে যাওয়ার পরও দেশে থাকার এবং ব্যবসা সংক্রান্ত বেআইনী কার্যকলাপের অভিযোগ করা হয়৷ গত জানুয়ারিতে ঐ দু'জন সুইশ ব্যবসায়ীর একজনকে নির্দোষ সাব্যস্ত করে ছেড়ে দেওয়া হয়, এবং অপরজনের সাজা কমিয়ে চার মাস করা হয়৷

Minarett - Spitze in Zürich / Schweiz
সুইজারল্যান্ডের জুরিখে মাহমুদ মসজিদের আলোকিত মিনারছবি: AP

প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ

এর থেকে মনে হতে পারে যে, লিবিয়া এবং সুইজারল্যান্ড একটি আপোষের দিকে এগোচ্ছিল৷ কিন্তু সুইশ সরকার ইতিমধ্যে গদ্দাফি সহ ১৮০ জন লিবীয় কর্মকর্তাকে ব্ল্যাকলিস্ট করে বসে আছেন, যার অর্থ এই যে, এই লিবীয় নাগরিকরা ইউরোপে তথাকথিত শেংগেন চুক্তির দেশগুলিতে বিনা বাধায় চলাফেরা করার সুযোগ পাবেন না৷ যেটা গদ্দাফির নতুন বিষোদ্গীরণের একটা কারণ হতে পারে৷ কিন্তু সম্ভাব্য আসল কারণটির একটি আন্দাজ দিয়েছেন জেনেভায় আরব বিশ্ব এবং ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলি সংক্রান্ত অধ্যয়ন ও গবেষণা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ ড. হুসনি উবায়দি, ডয়েচে ভেলে'কে প্রদত্ত একটি সাক্ষাৎকারে: ‘‘বেনগাজিতে শুক্রবারের নামাজে তাঁর এই মন্তব্যের মাধ্যমে কর্নেল গদ্দাফি চেয়েছিলেন তাঁর রাজনীতিকে একটি নতুন আঙ্গিক দিতে - বিশেষ করে তিনি আফ্রিকান ইউনিয়নের সভাপতিপদ থেকে বিদায় নেওয়ার পরে৷ তিনি এখন একটি নতুন প্রকল্পের জন্য সচেষ্ট, একটি ইসলামি ইউনিয়ন৷ কাজেই তাঁর এ-সব মন্তব্য সম্ভবত ইসলামি দুনিয়ায় তাঁর নিজের বৈধতা বাড়ানোর জন্য৷''

প্রতিক্রিয়া

গদ্দাফির জিহাদের ডাক সম্পর্কে সুইশ সরকার কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে৷ জেনেভায় জাতিসংঘের সাধারণ পরিচালক সের্গেই ওরঝোনিকিডসে বলেছেন, কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের পক্ষে এ-ধরণের ডাক দেওয়া নিয়মবিরুদ্ধ৷ জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন সুইশ-লিবীয় বিরোধের এই নতুন মাত্রাকে ‘‘দুভার্গ্যজনক'' বলে অভিহিত করেছেন৷ ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক মুখপাত্র বলেছেন, গদ্দাফির জিহাদের ডাক ‘‘প্রথা বহির্ভূত''৷ সুইজারল্যান্ডের প্রায় চার লক্ষ মুসলমান অধিবাসীদের প্রতিনিধিরা কিন্তু জিহাদের ডাক প্রত্যাখ্যান করেছেন এই বলে যে, ইসলামি দুনিয়ায় গদ্দাফির বিশ্বাসযোগ্যতা কিংবা বৈধতা, দু'টির কোনোটিই নেই৷ তাঁদের দৃষ্টিতে গদ্দাফি একজন রাজনৈতিক নেতা, কোনো ধর্মীয় নেতা নন৷

প্রতিবেদক: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই