1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গাড়ি ছুটবে হাজার মাইল গতিতে

২৬ জুলাই ২০১০

মোটর সাইকেল নিয়ে দুরন্ত গতিতে ছুটতে দেয়া যায় অনেককে৷ অনেকে আবার জার্মানির আটোবান ধরে গাড়ি নিয়ে ছুটে চলেন প্রচণ্ড গতিতে৷ এই দুরন্ত বা প্রচণ্ড শব্দগুলোর সংজ্ঞা বোধহয় ভবিষ্যতে বদলে যাবে৷

https://p.dw.com/p/OUZz
ছবি: AP

অবাক হচ্ছেন! মোটর সাইকেলের দুরন্ত গতি কিংবা গাড়ির প্রচন্ড গতি বলতে আমরা ঠিক কতটা দ্রুত বুঝি? ঘন্টায় ১৫০, ১৮০ কিংবা ২০০ কিলোমিটার৷ এর বেশি বোধহয় নয়৷

হাজার মাইল গতির গাড়ি

কিন্তু এবার বিজ্ঞানীরা শোনাচ্ছেন নতুন এক গাড়ির কথা৷ যাতে বসানো হয়েছে সুপারসনিক জেট ইঞ্জিন৷ আর তার গতি ঘন্টায় এক হাজার মাইল৷ হ্যাঁ ঠিক শুনেছেন৷ ঘন্টায় এক হাজার মাইল গতিতেই ছুটে চলবে নতুন এই সুপারকার৷ অবশ্য, নির্মাতা আশা করছেন এই গতিতে এটি উড়বে না বরং মাটিতেই থাকবে৷ এর নাম ব্লাডহাউন্ড সুপারসনিক কার সংক্ষেপে এসএসসি৷ লম্বায় এটি ১২ দশমিক ৮ মিটার৷

প্রায় তিন বছর ধরে গবেষণার পর ব্লাডহাউন্ডএর প্রথম মডেলটি সবার সামনে উম্মুক্ত করা হয়েছে৷ নীল-হলুদ রঙের এই গাড়ির নির্মাতা বৃটিশরা৷ এর প্রদর্শনীও হয়েছে দক্ষিণ ইংল্যান্ডের ফার্নবরো ইন্টারন্যাশনাল এয়ার শোতে৷

গ্রিন চালাবেন সুপারকার

রয়াল এয়ারফোর্সের পাইলট অ্যান্ডি গ্রিন ২০১২ সালের শুরুর দিকে চালাবেন এই সুপারকার৷ পরীক্ষামূলকভাবে সেটি চলবে ইংল্যান্ডের একটি রানওয়েতে৷ গ্রিন এর মন্তব্য, আমরা গাড়িটির গড়ন ঠিক করেছি৷ মাসকয়েক আগেই সেটিকে চূড়ান্ত করা হয়েছে৷ এখন আমরা জানি, এই গাড়ি ঘন্টায় হাজার মাইল বেগে ছুটতে পারবে৷

সুপারসনিক এর পেছনে বেশ খানিকটা শ্রম দিচ্ছেন গ্রিন৷ তিনি বলেন, সপ্তাহের কাজের দিনগুলোতে আমি পাইলট৷ আর সপ্তাহান্তে আমি এই ধরিত্রীর একমাত্র সুপারসনিক ড্রাইভার৷

গ্রিন অবশ্য একটু বেশিই রোমাঞ্চ প্রিয়৷ জানালেন, ব্লাডহাউন্ড নিয়ে দ্রুত গতির বিমানের সামনে দিয়ে ছুটে যেতে চান তিনি৷ তবে তিনি বলেন, এ শুধু মাটিতে নতুন এক গতির রেকর্ড করা নয়৷ বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বিজ্ঞানীদের সামনে এক চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়া৷ যাতে তারা সুপারসনিক গতির প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা দূর করতে কাজ করে৷

গ্রিন এর কথায়, ফার্নবরো ইন্টারন্যাশনাল এয়ার শোতে আমরা এই গাড়ি নিয়ে হাজির হয়েছি৷ এখানে অনেক সুন্দর সুন্দর উড়োজাহাজ দেখা যাচ্ছে৷ কিন্তু সবচেয়ে দ্রুতগতির যানটি আমাদের কাছেই আছে৷ আমরা অন্য যেকারো চেয়ে গতিসম্পন্ন৷

৪২ সেকেন্ডে গতি হাজার মাইলে

ব্লাডহাউন্ড টিম আশা করছে তাদের নতুন এই গাড়ি ০ থেকে ১০০০ মাইল গতিতে পৌঁছাতে সময় নেবে মাত্র ৪২ সেকেন্ড৷ আর শব্দের বাধা ভেঙে ছুটে যাবে এটি ভয়ঙ্কর গতিতে৷ বলে রাখা ভাল, এন্ডি গ্রিন এর আগের সুপারসনিক গাড়িটিও চালিয়েছিলেন৷ ১৯৯৭ সালে সেই গাড়ির গতি ছিল ঘন্টায় ৭৬৩ মাইল৷ সেটির নির্মাতা ছিলেন রিকার্ড নোবেল৷

ব্লাডহাউন্ড এসএসসি-এর প্রধান নির্মাতা মার্ক চ্যাপম্যান বলেন, এই বছর আমরা যে বায়ুগতিবিদ্যা নিয়ে কাজ করেছি, তাতে এই গাড়িটি সেকেন্ডে ৪৪২ মিটার গতিতেও মাটিতেই থাকবে এবং থিতু অবস্থায় থাকবে৷ সমুদ্রপৃষ্ঠে সর্বোচ্চ গতির মনুষ্যযান হবে ব্লাডহাউন্ড সুপারকার৷

সুপার কম্পিউটার

৬ টন ওজনের সুপারকারটির বাইরের অংশের ডিজাইন করেছেন একদল বিজ্ঞানী৷ এজন্য তারা যে কম্পিউটারটির সহায়তা নিয়েছেন, সেটি ইউরোপের অন্যতম দ্রুতগতির সুপার কম্পিউটার৷

কিন্তু ভবিষ্যতে কী রাস্তাঘাটে দেখা যাবে এমন সুপারকার৷ বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকা টেকনোলজি টুডের সম্পাদক প্রকৌশলী আবুল হাসান এর মতে, ভবিষ্যতেও রাস্তাঘাটে এই গাড়ি চালানো অসম্ভব৷ তবে, এই প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে বাউন্ডেড পথে চলে মানে ট্রেন বা এজাতীয় পরিবহন আরো দ্রুত করা সম্ভব৷

উল্লেখ্য, ২০১২ সালে সুপারকারটির প্রথম পরীক্ষামূলক চালনার পর এটিকে নেয়া হবে দক্ষিণ আফ্রিকায়৷ সেখানে একটি শুকিয়ে যাওয়া লেকে চালানো হবে সুপারকারটিকে৷ গতির আসল পরীক্ষাটি হবে সেখানে৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক