1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গ্রিসের আইএমএফ-এর দ্বারস্থ হওয়াই ভালো

১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০

ইউরো এলাকার ১১ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম একটি সদস্যদেশকে দেউলিয়া হওয়া থেকে বাঁচানোর প্রশ্ন দেখা দিয়েছে৷ অথচ মাসট্রিস্ট চুক্তি অনুযায়ী ঠিক সেটা করাই নিষেধ৷ অপরদিকে ইউরো মুদ্রার স্থায়িত্ব নিয়েই টান পড়তে পারে৷

https://p.dw.com/p/M0dq
ইউরো’র স্থায়িত্ব নিয়ে চিন্তা?ছবি: picture-alliance / Helga Lade Fotoagentur GmbH

এই অবস্থায় কি করা যায়, তা নিয়ে মাথা ঘামিয়েছেন ‘জার্মান অর্থনীতির প্রতিষ্ঠান' নামধারী একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা৷ গত বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ইউরো-দেশগুলির জরুরি শীর্ষবৈঠকে ঘোষণা করা হয় যে, গ্রিসকে সাহায্য করা হবে - কিন্তু কোনো বাস্তব আর্থিক প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি৷ জার্মান গবেষকরা প্রথমত গ্রিসের দেউলিয়া হওয়ার বিপদ কতোটা, সেটা জানতে চেয়েছিলেন৷ তাঁরা দেখেন যে, গ্রিস সরকারের বন্ডের সুদ এখনও প্রায় ৭ শতাংশ, যা অবশ্য নব্বই-এর শতকের গোড়ায় আরো বেশী ছিল৷ জার্মান অর্থনীতির প্রতিষ্ঠানের গবেষক ইয়ুর্গেন মাথেস বলছেন: আসল বিপদটা হল, যদি আর্থিক বাজারগুলো নার্ভাস হয়ে পড়ে৷ তাহলে গ্রিসের পক্ষে রিফাইনান্স, অর্থাৎ ঋণ পরিশোধের জন্য ঋণ পাওয়া শক্ত হয়ে উঠবে, অথবা অত্যন্ত চড়া সুদে পুঁজি ধার নিতে হবে - যে পথের শেষে রাষ্ট্রের দেউলিয়া হওয়াটাও অসম্ভব নয়৷

একা গ্রিস নয়

তা থেকে বাঁচার একটি পন্থা হল কড়া বাজেট শৃঙ্খলা এবং সেই সঙ্গে সরকারি ব্যয় হ্রাস৷ যার বিপদ আবার এই যে, সরকারি ব্যয় হ্রাস মানে কর্মসংস্থান কমা, বেচাকেনা কমা, কর আদায় কমা, সরকারি বিনিয়োগ কমা৷ এ' ঝুঁকিও কম নয়৷ - একটি বৃহত্তর বিপদের কথা বলেছেন মাথেস: গ্রিস দেউলিয়া হলে ইউরো এলাকার অন্যান্য দেশও সেই আবর্তে গিয়ে পড়তে পারে, যেমন স্পেন, ইটালি, আয়ারল্যান্ড এবং পোর্তুগাল, একের পর এক৷ বস্তুত গ্রিস নয়, স্পেনকেই আসল রোগী বলে চিহ্নিত করেছেন নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ পল ক্রুগম্যান, তাঁর নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকার জন্য লিখিত ব্লগে৷ গ্রিসের ঋণ যদি তার জিডিপি'র ১২.৭ শতাংশ হয়, তা'হলে স্পেনের হল ১১.৪ শতাংশ৷ তায় আবার স্পেনের অর্থনীতি গ্রিসের চারগুণ৷ কাজেই স্পেন ডুবলে তার ঢেউও চারগুণ বড় হবে৷

সনদের ফারাক

গ্রিসের দেউলিয়া হওয়ার ঢেউ যে প্রথমে কোথায় গিয়ে লাগবে, তা বলা সোজা৷ গ্রিস সরকারের বন্ড প্রধানত অস্টিয়ান, সুইশ এবং জার্মান ব্যাঙ্কগুলোর হাতে৷ গ্রিসের দেউলিয়া হওয়ায় এই ব্যাঙ্কগুলি আবার অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়তে পারে৷ অর্থাৎ সেই লেম্যান ব্রাদার্সের কাহিনীর পুনরাবৃত্তি৷ কাজেই জার্মান অর্থনীতি প্রতিষ্ঠানের গবেষকদের পরামর্শ হচ্ছে: গ্রিস আইএমএফ-এর দ্বারস্থ হোক৷ আইএমএফ-এর রাষ্ট্রীয় ঋণ সঙ্কটে ত্রাণকর্তা সাজার অভ্যাস আছে৷ মাসট্রিস্টের ‘‘বেইলআউট'' শর্ত যেখানে বলে, পরের হয়ে জল সেঁচা চলবে না, আইএমএফ-এর সনদ বলে: হ্যাঁ, চলবে, তবে বেশ কিছু শর্ত আরোপ করতে হবে৷ কাজেই গ্রিসের মানুষজন সরকারি সাশ্রয়ের কোপে পড়ে তাদের নিজেদের সরকার কিংবা ইউরো এলাকাকে না দুষে, আইএমএফ-কেই দুষবে৷ সেটাও একটা লাভ বৈকি৷

প্রতিবেদক: রল্ফ ভেঙ্কেল/অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: জাহিদুল হক