1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দৃষ্টি হারানোর ঝুঁকি

গুডরুন হাইসে/আরবি১৯ জুলাই ২০১৪

এই রোগটি হলে দৃষ্টির সীমা কমতে থাকে৷ চোখের চাপ বাড়তে থাকে৷ কিন্তু ভুক্তভোগীরা তা বুঝতে পারেন না৷ এটা হলো গ্লুকোমার অত্যন্ত বিপজ্জনক দিক৷

https://p.dw.com/p/1CezA
Auge
ছবি: Bilderbox

গ্লুকোমা কোনো যন্ত্রণার সৃষ্টি করে না৷ তাহলে রোগীরা অন্তত সতর্ক সংকেত পেতেন যে, শরীরের কোথাও কোনো গোলমাল হয়েছে৷

চোখের ভেতরের ‘অ্যাকুয়াস হিউমার' নামে তরল পদার্থ প্রবাহিত হতে না পারলে এই রোগ দেখা দেয়৷ এই তরল পদার্থ চোখের লেন্স ও কাঠামোকে সতেজ রাখে৷ সুস্থ চোখে অ্যাকুয়াস হিউমার তৈরি ও নির্গমনের মধ্যে একটা ভারসাম্য থাকে৷ গ্লুকোমা হলে এই প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়৷ চোখের অভ্যন্তরে অপটিক স্নায়ুতে চাপ পড়ে৷ দৃষ্টির সংকেত মস্তিষ্কে পৌঁছাতে পারে না৷ পরিণতিতে অন্ধত্ব বরণ করতে হয় আক্রান্ত ব্যক্তিকে৷

Gesichtsfelddefekt beim Glaukom
চোখের অভ্যন্তরে অপটিক স্নায়ুতে চাপ পড়েছবি: picture-alliance/dpa/dpaweb

রোগীরা বুঝতে পারেন না

সাধারণত চোখ না ঘুরিয়ে সোজা তাকালেও আশেপাশের বস্তু দেখা যায়৷ ‘‘গ্লুকোমা রোগীরা প্রথমে বুঝতে পারেন না যে, দৃষ্টির পরিধি ক্রমেই কমে যাচ্ছে৷'' বলেন ডর্টমুন্ডের চক্ষু চিকিত্সক মার্কুস কোলহাস৷ রোগী এতে অভ্যস্ত হয়ে যান৷ গ্লুকোমা কয়েক মাস এমনকি কয়েক বছর ধরে চলতে পারে৷ প্রথম দিকে মস্তিষ্ক তথ্য ঘাটতির ভারসাম্যটা রক্ষা করে৷

গ্লুকোমার চিকিত্সায় প্রথমে চোখের অভ্যন্তরের চাপ মাপেন চক্ষু চিকিত্সক৷ অপটিক নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখেন৷ সে অনুযায়ী চিকিত্সা করেন৷ তা না হলে দৃষ্টিশক্তি হারানোর ঝুঁকি থাকে৷ ইউরোপে অন্ধত্ব বরণের দ্বিতীয় প্রধান কারণ গ্লুকোমা৷

প্রথমে ড্রপ দিয়ে ভারসাম্যহীন চাপকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হয়৷ এতে কাজ না হলে অপারেশন করতে হয়৷ লেসারের সাহায্যে চোখের জলপ্রবাহকে ঠিক করার চেষ্টা করা হয়৷ আরেক ধরনের অপারেশনে নতুন করে প্রবাহনালী তৈরি করা হয়৷ ‘‘আরেকটি পদ্ধতি হলো চোখের ভেতরে ছোট ছিদ্র করা৷ এর ফলে অতিরিক্ত তরল পদার্থ বের হয়ে যায়৷'' বলেন কোলহাস৷

বয়স্কদের ঝুঁকি বেশি

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বয়স্ক মানুষরাই এই রোগের শিকার হন৷ ৪০-এর পর থেকে এই সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়৷ বাচ্চাদের এই রোগ খুব কমই হয়৷ জার্মানির ৩০০ ছোটো ছেলেমেয়ের মধ্যে ১১ বছরের নেলেও গ্লুকোমার শিকার৷ চার মাস বয়সে তার অসুখটি শনাক্ত করা হয়৷ এক চোখ ঘোলাটে দেখে তাকে ডাক্তার কাছে নিয়ে যাওয়া হলে তিনি সাথে সাথে রোগটি নির্ণয় করেন: জন্মগত গ্লুকোমা৷

তারপর থেকে চলে নেলে ও তার পরিবারের জন্য এক ওডিসি৷ নানা ধরনের চিকিত্সা চলে৷ ৫৩টি অপারেশনের ধকলও সহ্য করতে হয় ছোট্ট মেয়েটিকে৷ কিন্তু কোনো কিছুই দীর্ঘস্থায়ী সাহায্য করতে পারেনি৷
বিশ্বব্যাপী প্রায় ছয় কোটি (৬০ মিলিয়ন) মানুষ গ্লুকোমার শিকার৷ জার্মানিতে এই সংখ্যাটা ১০ লক্ষের মতো৷ অনুমান করা হয় আরো ২০ লক্ষ মানুষ জানেনই না, যে তাদের গ্লুকোমা হয়েছে৷ জার্মানিতে ডায়বেটিস ও উচ্চরক্তচাপের পর সংখ্যার দিক দিয়ে দ্বিতীয় প্রধান অসুখ গ্লুকোমা৷
দুইভাগে ভাগ করা হয়

এই অসুখটিকে দুইভাগে ভাগ করা হয়৷ প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি গ্লুকোমা৷ প্রাইমারি গ্লুকোমা অন্য কোনো অসুখের কারণে হয় না৷ যেটি হয়েছে নেলের ক্ষেত্রে৷ অন্যদিকে সেকেন্ডারি গ্লুকোমা কোন সংক্রমণ, আঘাত বা টিউমার থেকে হতে পারে৷ গ্লুকোমার রোগীরা প্রায়ই রক্তনালী ও হার্টের সমস্যায় ভোগেন৷ হ্যারপেস থেকেও চোখের চাপ বৃদ্ধি পেতে পারে৷ হারিয়ে যেতে পারে দৃষ্টিশক্তি৷ ধূমপান থেকেও রক্তনালী বিশেষ করে চোখের সূক্ষ্ম রক্তনালী ও অপটিক নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷

Augentropfen
চোখের ভেতরের ‘অ্যাকুয়াস হিউমার' নামে তরল পদার্থ প্রবাহিত হতে না পারলে এই রোগ দেখা দেয়ছবি: Fotolia/apops

নেলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের বিশেষ লাঠি দিয়ে চলাফেরা করে৷ পড়াশোনা করে সাধারণ স্কুলে৷ অন্যান্য বাচ্চাদের মতো অনেক কিছুই করতে পারে সে৷ যেমন নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে সাইকেল চালাতে পারে৷ এক সহকারীর সাহায্যে পাঁচ কিলোমিটার দৌড়ের ট্রেনিংও শেষ করেছে মেয়েটি৷

জীবনযোদ্ধা নেলে

ইতোমধ্যে দৃষ্টির পরিধি অত্যন্ত সীমিত হয়ে পড়েছে তার৷ তাই স্বরলিপি না দেখেই বেহালা বাজানো শিখেছে নেলে৷ সে বেহালা বাজানো শিখেছে, সমাজকে দেখানোর জন্যও৷ যেন সে বলতে চায়, ‘‘হ্যালো এখানে আমি৷ অন্যান্যরা যা পারে আমিও তা পারি৷ তাই আমাকে তোমরা সেভাবেই নাও৷'' তবে নেলের আশঙ্কা, একদিন হয়তো আলো ছায়ার পার্থক্যটাও আর চোখে পড়বে না তার৷ হয়তো একেবারেই অন্ধ হয়ে যাবে সে৷ কিন্তু পরিস্থিতির কাছে হার মানতে রাজি নয় নেলে৷ এ ব্যাপারে বদ্ধপরিকর জীবন সংগ্রামী মেয়েটি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য