1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ঘরে বসেই চোর ধরুন আর পয়সা কামান

৯ অক্টোবর ২০১০

একটা অদ্ভুত ব্যাপার লক্ষ্য করেছেন? মজার ব্যাপার কিন্তু! দিন দিন পৃথিবী যত আধুনিক আর সভ্য হচ্ছে, হরেক কিসিমের চুরি আর চোরের সংখ্যাও যেন তার সাথে সাথে পাল্লা দিয়েই বাড়ছে৷

https://p.dw.com/p/PZvL
সিসিটিভি’র শহর লন্ডন (ফাইল ফটো)ছবি: AP

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের এক জরিপ সংস্থা খোঁজ-খবর নিয়ে জানিয়েছে, সেদেশে চুরির কারণে বছরে প্রায় ৫ বিলিয়ন পাউন্ড গচ্চা যায়৷ টাকার অংকে সেটি তাহলে কত দাঁড়াচ্ছে!

তবে চোরের দশ দিন আর সাধুর একদিন বলে কথা আছে না! যুক্তরাজ্য জুড়ে ক্রমাগত এই চোরের রাজত্ব আর চুরি ঠেকাতে অর্থাৎ হাতে নাতে চোর ধরতে সেদেশের এক তদারকি সংস্থা সম্প্রতি ‘ইন্টারনেট আই' নামের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে৷ যার মূল উদ্দেশ্য, দোকানে দোকানে ঘটতে থাকা এই ধুন্ধুমার চুরি ঠেকানো এবং বামাল সমেত চোর ধরিয়ে দেওয়া৷

এ'সপ্তাহেই এই চোর ধরার অভিযানটি শুরু হয়েছে৷ জানা গেছে, চোর ধরলে আবার আকর্ষণীয় পুরস্কারও মিলবে, এবং সেটি নগদ নারায়ণেই৷ তার মানে দাঁড়াচ্ছে, আপনি ঘরে বসে চোর ধরবেন আর সেই সাথে সাথে কাঁচা পয়সাও আপনার পকেটে এসে ঢুকবে৷ পুরস্কারের অঙ্কটিও কম নয় কিন্তু! পুরস্কারের টাকার পরিমাণটি ক্ষেত্র বিশেষে নাকি এক হাজার পাউন্ডও হতে পারে৷

‘সেন্টার ফর রিটেইল রিসার্চ' নামের এই সংস্থাটির কর্তাব্যক্তিরা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা আশা করছেন, অক্টোবর নাগাদ চোর ধরার এই অভিযানের অভিযাত্রীর সংখ্যা তিন হাজারে গিয়ে দাঁড়াবে৷

এর জন্য শুরুতে অবশ্য আপনাকে ইন্টারনেট আই বা ‘অন্তর্জাল চোখ' প্রকল্পে নিবন্ধিত হতে হবে৷ নিবন্ধনের জন্য নির্দিষ্ট পয়সা দিলেই আপনি এই চোর ধরার অভিযানে নেমে পড়তে পারবেন৷ জানা গেছে, নিবন্ধিতরা ঘরে বসেই ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে সরবরাহকৃত সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অকুস্থলে সন্দেহভাজন কাউকে কোন অপরাধ করতে দেখলেই টেক্সট মেসেজিং এর মাধ্যমে তা জানিয়ে দিতে পারবেন৷ আর চোর ধরার এই অভিযানে সফল হলেই আপনার পকেটে আসবে কাঁচা পয়সা৷

অবশ্য এই প্রকল্পটি নিয়ে বিস্তর সমালোচনাও শুরু হয়েছে৷ কেউ কেউ তো একে একেবারে সেই সাবেক পূর্ব জার্মানির ‘স্টাসি' ধাঁচের গোয়েন্দগিরির পর্যায়েই টেনে নামিয়েছেন৷ কেউ বলছেন, এটি একেবারে মানুষের ব্যক্তিগত বিষয়ে আড়ি পাতা হয়ে গেছে৷ এদিকে ‘নো সিসিটিভি' প্রচারাভিযান দলের চার্লস ফারিয়ার বলেছেন, এই প্রকল্পটি যুক্তরাজ্যের নজরদারির ক্ষেত্রে আরেকটি বিরক্তিকর অধ্যায়৷

অবশ্য সেদেশের সরকারী তথ্য কমিশনারের অফিস থেকে জানানো হয়েছে, তথ্য সংরক্ষণ বিধির মান মোতাবেক এই প্রতিষ্ঠানটিকে উৎরাতে হবে৷ আর যারা চোর ধরতে নামবেন সেইসব দর্শকদেরও ঠিকুজি কুলুজির হদিশ জানাতে হবে৷

যাইহোক, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে এবারে বোধহয় যুক্তরাজ্যে চোরদের কপাল পুড়লো৷ বলতেই হচ্ছে- চোর ভায়ারা একটু রয়ে সয়ে! তিন হাজার জোড়া চোখ সেই সুকুমার রায়ের ‘খুড়োর কল' এর মত চোর ধরার কলে চোখ ঠেকিয়ে আপনাদের দেখছে কিন্তু!

প্রতিবেদন: হুমায়ূন রেজা

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন