1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চলে গেলেন নাট্যব্যক্তিত্ব রমাপ্রসাদ বণিক

২৮ ডিসেম্বর ২০১০

মাত্র ৫৬ বছর বয়সে মারা গেলেন নাট্যকার অভিনেতা নির্দেশক রমাপ্রসাদ বণিক৷ অসংখ্য গুণগ্রাহীর চোখের জলে মঙ্গলবার তাঁর শেষকৃত্য হল কলকাতায়৷

https://p.dw.com/p/zqlJ
চেনামুখ নামে নাটকের দল গড়েছিলেন রমাপ্রসাদছবি: dpa

বিখ্যাত অভিনেতা অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় তরুণ রমাপ্রসাদ বণিক-কে দেখার পর বলেছিলেন, এদের মত ছেলেদের দেখলে মনে হয় আরও কিছু বছর বাঁচি, যা জানি সব শিখিয়ে দিয়ে যাই৷

নাটকের অনুগত ছাত্র রমাপ্রসাদ বণিক কিন্তু চেষ্টা করেছিলেন, যতদিন বেঁচে থাকবেন, নাটক শিখিয়ে যাবেন ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের৷ কলকাতার নেহরু চিলড্রেনস মিউজিয়মে কিশোর-কিশোরীদের নাটক শেখানোর যে কর্মশালা চালু আছে গত প্রায় দুদশক ধরে, তার প্রাণপুরুষ ছিলেন রমাপ্রসাদ বণিক৷ সিনেমা, টিভি, মঞ্চ নাটক, নিজের হাজার ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি সময় দিতেন এই নাটকের প্রশিক্ষণ শিবিরে৷ নিজে যা শিখেছেন, তাই শিখিয়ে যেতেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে৷ আজকের এই আত্মসর্বস্ব সময়ে যে উদারতা আর আন্তরিকতা নেহাতই দুর্লভ৷ যে কারণে তাঁর অকাল প্রয়াণে শোকে আচ্ছন্ন শংকর চক্রবর্তীর মত অনুজ অভিনেতারা৷

ব্যাংকের মোটা মাইনের চাকরি রমাপ্রসাদ ছেড়ে দিয়েছিলেন স্রেফ নাটক করবেন বলে৷ তিনি ছিলেন সেই প্রজন্মের মানুষ, যাঁরা বৃহত্তর স্বার্থকে সবসময় ব্যাক্তিগত স্বার্থের উপরে রাখতেন৷ আর সেজন্য ব্যাক্তিগত সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যকে উপেক্ষা করতেও পিছপা হতেন না৷ হয়তো সেই কারণেই নিজের শারীরিক অসুস্থতাকেও খুব একটা গুরুত্ব দেননি বরং কাজ করে গেছেন৷ নয়তো মারা যাওয়ার মত বয়স তাঁর হয়নি৷ মাত্র ৫৬ বছর৷ রমাপ্রসাদ রেখে গেলেন মা, স্ত্রী, দুই কন্যা আর অসংখ্য গুণগ্রাহী ভক্তকে৷

রমাপ্রসাদ বণিকের নাটকে হাতেখড়ি বহুরুপি নাটকের দলে, শম্ভু মিত্র, তৃপ্তি মিত্র, কুমার রায়দের কাছে, মাত্র আট বছর বয়সে৷ দীর্ঘদিন ধরে বহুরুপির নানা প্রযোজনার কাজে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থেকে নিজেকে শিক্ষিত করেছিলেন রমাপ্রসাদ৷ পরে যখন সমবয়সীদের সঙ্গে জোট বেঁধে চেনামুখ নামে নাটকের দল গড়লেন, একের পর এক অসাধারণ নাটক আবিষ্ট রেখেছিল সিরিয়াস নাটকের দর্শকদের৷ আবার সিনেমা বা টিভিতে নানা ধরণের মজাদার চরিত্রে তাঁর তুখোড় অভিনয় সব স্তরের দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় করেছিল তাঁকে৷

রমাপ্রসাদের আকস্মিক প্রয়াণ অনেকটাই নিঃস্ব করে দিয়ে গেল বাংলা নাটককে৷

প্রতিবেদন: শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক