1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চলে গেলেন সিদ্ধার্থশংকর, অবসান এক যুগের

Supriyo Bandyopadhyay৭ নভেম্বর ২০১০

প্রয়াত হলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, বর্ষীয়ান রাজনীতিক ও আইনজীবী সিদ্ধার্থশংকর রায়৷ প্রথমে জ্যোতি বসু, তার পর সিদ্ধার্থশংকরের মৃত্যুতে শেষ হল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির একটি অধ্যায়৷

https://p.dw.com/p/Q0io
ডানদিকে রাইটার্স বিল্ডিং, সিদ্ধার্থবাবুর প্রাক্তন কর্মক্ষেত্রছবি: Prabhakar Mani Tewari

সিদ্ধার্থশংকর রায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ১৯৭২ থেকে ৭৭-এর অস্থির সময়ে৷ একদিকে জরুরি অবস্থা, নকশাল আন্দোলন, অন্যদিকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পর সীমান্তে শরণার্থীদের ঢল৷ অনেক সিদ্ধান্তই নিতে হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশংকর রায়কে, যা জনপ্রিয় তো ছিলই না, বরং রীতিমত বিতর্কিত ছিল৷ যে কারণে ১৯৭৭ সালে বামফ্রন্ট পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিকভাবে এ রাজ্যে আর কখনও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি সিদ্ধার্থশংকর৷ যদিও কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে সুসম্পর্কের সুবাদে, বিশেষত ইন্দিরা গান্ধীর বিশেষ আস্থাভাজন হওয়ার কারণে কাজের কখনই অভাব হয়নি তাঁর৷ বরং পেয়েছেন নানা গুরুদায়িত্ব৷ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে, ১৯৬৭ থেকে ৭২, তিনি ছিলেন কেন্দ্রে ইন্দিরা গান্ধীর সরকারে শিক্ষা ও যুবমন্ত্রী৷ ১৯৮৬ সালে, পঞ্জাবে খালিস্তানি জঙ্গি আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন রাজ্যপাল করে পাঠানো হয় তাঁকে৷ ১৯৯২ থেকে ৯৬ আমেরিকায় ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন তিনি৷ তার আগে অবশ্য রাজ্য রাজনীতিতে ফেরার একটা চেষ্টা করেছিলেন তিনি, দাঁড়িয়েছিলেন ভোটে৷ কিন্তু জামানত বাজেয়াপ্ত হয় তাঁর৷

বিশিষ্ট আইনজীবী, সংবিধান বিশেষজ্ঞ সিদ্ধার্থশংকর রায় কট্টর বামবিরোধী হলেও জ্যোতি বসু, স্নেহাংশু আচার্যের মত অনেক বামপন্থীই ছিলেন তাঁর ব্যাক্তিগত বন্ধু৷ রাজনৈতিক বিভেদ কখনও সেই বন্ধুত্বের অন্তরায় হয়নি৷ জ্যোতি বসু মারা যাওয়ার পর এক সাক্ষাৎকারে এ সম্পর্কে সিদ্ধার্থশংকর বলেন, বন্ধুত্ব আজীবন ছিল কারণ ওঁরা ছিলেন জেন্টলম্যান৷ তাই কোনও মামুলি ব্যাপার সেই বন্ধুত্বে দাগ ফেলেনি৷ সিদ্ধার্থশংকর নিজেও ছিলেন তাই৷ সৌজন্যবোধে বিশ্বাসী, শিক্ষিত ভদ্রলোক যিনি মামুলি বিষয়ের ঊর্ধে ছিলেন৷

বুধবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার বেলতলায় নিজের বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সিদ্ধার্থশংকর৷ তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০৷ দীর্ঘদিন ভুগছিলেন কিডনির অসুখে৷ ডায়ালিসিস চলছিল৷

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন, বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিল তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন৷

প্রতিবেদন: শীর্ষ বন্দোপাধ্যায়

সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী