1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চাষি থেকে ব্যবসায়ী

৮ নভেম্বর ২০১৬

কেনিয়ার গ্রামের চাষি জেনিফার ওভিনো কিছুটা মিলেনিয়াম ভিলেজ প্রোজেক্টের কল্যাণে, কিন্তু প্রধানত নিজের প্রচেষ্টায় চাষি থেকে ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছেন৷ সাউরি গ্রামের অন্যান্য চাষিদেরও সেই জীবনদর্শন শেখাতে চান জেনিফার৷

https://p.dw.com/p/2SHMN
সাউরি গ্রামের সফল চাষি জেনিফার ওভিনো
ছবি: DW

সফল চাষি হয়ে ওঠার রহস্য

সাউরি গ্রামে প্রায় সকলেই তাঁকে চেনে, কেননা জেনিফার ওভিনো সফল চাষি৷ সহস্রাব্দ গ্রাম প্রকল্পের কল্যাণে তাঁর সাফল্য৷ জেনিফার বলেন, ‘‘আমি শিখেছিলাম যে, শুধু এক ধরনের শস্যের চাষ করতে হবে, এমন কোনো কথা নেই৷ লোকে এখানে শুধু ভুট্টার চাষ করে, ভুট্টা আর ভুট্টা৷ তারপর আমি যখন চাষ করতে শুরু করি, তখন আমি শিখি যে, অন্যান্য ফসলেরও চাষ করা যায়, যেমন এখানে দেখছেন৷''

প্রকল্পের সূচনায় প্রশিক্ষণ ছাড়া বীজ আর সারও পেয়েছিলেন জেনিফার ওভিনো৷ এছাড়া তাঁর গ্রিনহাউসের জন্য কম সুদে ঋণ৷ ইতিমধ্যে তিনি ভুট্টা ছাড়া নানা ধরনের ফলমূল ও সবজির চাষ করে থাকেন৷ এর ফলে কোনো একটার ফলন কম হলেও পুষিয়ে নেওয়া যায়৷ খাদ্য শস্যের চেয়ে ফলমূল আর সবজি থেকে রোজগারও বেশি হয়৷ জেনিফারের নীতি হল, ‘‘আমার বিশ্বাস, আমি যদি ঠিকমতো কাজ করি, তাহলে বাকি চাষিরা কৃষি ব্যবসায়ের গুরুত্বটা বুঝবে, শুধু নিজেদের খাওয়া-দাওয়ার জন্য চাষ না করে, পয়সার জন্যেও চাষবাস করবে৷''

জেনিফার ওভিনোর খামার ইতিমধ্যে এতো বড় হয়ে পড়েছে যে, তিনি চারজন ফুলটাইম কাজের লোক রেখেছেন৷ দু'বছর হলো তিনি নিজেই বীজ আর সার কেনেন৷ অন্যান্য অনেক চাষি কিন্তু আজও মিলোনিয়াম প্রোজেক্টের অর্থানুকুল্যের উপর নির্ভর৷

সহস্রাব্দ প্রকল্প থেকে শুধু যে সাউরির চাষিরা লাভবান হয়েছেন, এমন নয়৷ আগে সাউরির স্কুলগুলিতে প্রায় সব কিছুর অভাব ছিল৷ স্কুল-পালানো ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যাই বেশি ছিল৷ মিলেনিয়াম প্রোজেক্টের সঙ্গে আসে পাঠ্যবই, কম্পিউটার, স্কুলেই দুপুরের খাওয়া৷ বিশেষ করে ঐ দুপুরের খাওয়ার লোভেই গত দু'বছরে স্কুলের ছাত্রসংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে, জানালেন স্কুলের হেডমাস্টার৷ কিন্তু এ-বছরের শেষে ত্রাণ তহবিল থেকে মাসোহারা বন্ধ হবে – কাজেই দুপুরের খাওয়াও বন্ধ হবে৷ ওদিকে কেনিয়া সরকারের কাছ থেকে যে টাকা আসে, তা-তে স্কুলের কাজ চলে না৷ স্কুলের অধ্যক্ষ ফ্রান্সিস ওকোকো বলেন, ‘‘আমি চাইতাম যে, প্রকল্পের ওরা আরো বছর তিনেক সময় দিক, যা-তে আমরা সামলে নিতে পারি৷ যাতে ওরা এই প্রতিষ্ঠানটিতে যে পরিবর্তন আনতে চেয়েছিল, তা আনা সম্ভব হয়৷''

এখন সেটুকু সাফল্যও মুছে যেতে চলেছে৷ জেনিফার ওভিনো প্রায় প্রতিদিন ‘মার্কেট সার্ভিস সেন্টারে' যান৷ স্থানীয় চাষিরা তাদের ফসল এখানে কমিশনের ভিত্তিতে বিক্রি করতে পারেন - সেটাও মিলেনিয়াম প্রকল্পের একটি উদ্যোগ৷ জেনিফার বলেন, ‘‘এখানে একটা কাজের জন্য মাত্র একজন লোক লাগে৷ দশজন মিলে বাজারে যাবার দরকার নেই, বিক্রি করতে তো শুধু একজন লোকই লাগে৷ এছাড়া ওরা সকলে পরস্পরের কাছ থেকে শিখতে পারে, দলে থাকার যেটা সুবিধে৷ পরস্পরের কাছ থেকে ওরা এটাও শিখবে, কীভাবে ওদের কৃষি ব্যবসায়কে আরো উন্নত, আরো লাভজনক করা যায়৷''

জেনিফার ওভিনো জানেন যে, সাউরির সব চাষি তাঁর মতো সফল নয়৷ তবে মিলেনিয়াম প্রকল্পের সাহায্যই তার একমাত্র কারণ নয়, বরং জেনিফারের সঠিক মনোভাব – এবং বিশেষ করে তাঁর শৃঙ্খলা৷ জেনিফার বলেন, ‘‘লোকের শেখা উচিত যে, শুধু বসে থেকে ‘আমায় দাও! আমায় দাও!' বললেই চলবে না৷ তাহলে কুঁড়ে হয়ে যাবে, সারা দিন বসে থাকবে, করার কাজ পাবে না৷ কিন্তু আমি সকালেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করি – আর তখনই বুঝতে পারি, দিনটা খুব ব্যস্ততায় কাটবে৷''

জেনিফার সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছেন৷ সাধারণ চাষি থেকে অর্থনৈতিক বিচারে স্বনির্ভর এক সফল কৃষি ব্যবসায়ীতে পরিণত হয়েছেন৷

ফ্লোরিয়ান নুশ/এসি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান