1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চিংড়ি নিয়ে গবেষণা বাগেরহাটে

২ আগস্ট ২০১০

হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি করে বাংলাদেশ বছরে গড়ে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আয় করে৷ এই রপ্তানির অবস্থান পোশাক শিল্পের পর দ্বিতীয়৷ স্বভাবতই এমন আয় যে খাত থেকে, সেখাতে সরকারের নজর একটু বেশিই থাকার কথা৷

https://p.dw.com/p/OZmG
shrimp, pond, চিংড়ি, গবেষণা, বাগেরহাট, বাংলাদেশ
কৃত্রিম চিংড়ি ঘের (ফাইল ছবি)ছবি: Manuela Kasper-Claridge

কিন্তু তা সত্ত্বেও চিংড়ি রপ্তানি নিয়ে মাঝেমাঝেই বিপত্তিতে পড়তে হয় ব্যবসায়ীদের৷ গত বছর হঠাৎ কিছুদিনের জন্য ইউরোপে বাংলাদেশি চিংড়ি রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়৷ কারণ এক ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিক নাইট্রোফুরান৷ চিংড়ি উৎপাদনকারী ফার্মে কিভাবে যেন ঢুকে পড়ে এই নাইট্রোফুরান৷ যা আবার ইউরোপে নিষিদ্ধ৷ ফলে বেশ খানিকটা ক্ষতির মুখে পড়ে এখাতের ব্যবসায়ীরা৷

বাগেরহাটে গবেষণা কেন্দ্র

চিংড়ি খাতে এধরনের বিপত্তি রোধে প্রয়োজন আরো গবেষণা, জেলেদের সহায়তা৷ আর সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই বাংলাদেশের দক্ষিণের শহর বাগেরহাটে গড়ে উঠেছে চিংড়ি গবেষণাগার৷

মূলত চিংড়ি নিয়ে গবেষণা, এর উৎপাদন বৃদ্ধির নানা উদ্যোগ আর চাষীদের প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে সরকারের এই চেষ্টা৷ বাগেরহাটের দড়াটানা নদীর কাছে প্রায় ৮ একর জমির উপর গবেষণা কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে৷ সেখানে রয়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও সুযোগ-সুবিধাসহ ৪টি গবেষণাগার৷ রয়েছে চিংড়ি হ্যাচারি আর ৯ টি পুকুরের সমন্বয়ে পন্ড কমপ্লেক্স৷ সংস্থাটিতে কাজ করছেন ১১ জন বৈজ্ঞানিকসহ ২৮ জন৷

নীতিমালা মেনে গবেষণাগার

এই চিংড়ি গবেষণাগার নির্মাণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতিমালা অনুসরণ করা হয়েছে৷ গবেষণাগারের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ জানান, চিংড়ির রোগবালাই দমন ও প্রতিকার, চাষের জন্য মাটি ও পানির গুণগত পরীক্ষা, খাদ্য ও পুষ্টি এবং চিংড়ির গুণগত মান উন্নয়নে এখানে গবেষণা করা হবে৷

শুধু তাই নয় এই গবেষণাগার থেকে চিংড়ি চাষিদের কারিগরি সেবা প্রদানেরও ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান ইয়াহিয়া৷

উৎপাদন বাড়বে

বলে রাখা ভাল, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে চিংড়ির গড় উৎপাদন কম৷ ফলে বাংলাদেশ এই মুহূর্তে চিংড়ি রপ্তানি করে ভালো আয় করলেও তা আরো বাড়ানো সম্ভব৷ মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ সচিব শরফুল আলম মনে করেন, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও উন্নত চাষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে চিংড়ির উৎপাদন ৩ থেকে ৪ গুণ বাড়ানো যাবে৷ আর এই কাজটিই করবে চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্র৷

চলছে প্রশিক্ষণ

এখনো অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়নি বাগেরহাটের এই গবেষণাগার৷ কিন্তু তারপরও সংস্থাটি থেকে গত বছর ১ হাজার জনকে চিংড়ি চাষ বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে৷ এ বছরও সমসংখ্যক ব্যক্তিকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ৷ মূলত চিংড়ি চাষী, ডিপো মালিক, চিংড়ি প্রক্রিয়াকারকরা নিচ্ছেন প্রশিক্ষণ৷

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের বৃহত্তম চিংড়ি উৎপাদনকারী জেলা বাগেরহাট৷ সেখানকার অধিকাংশ এলাকাতেই দেখা যায় চিংড়ি ঘের৷ স্থানীয় মানুষের জীবন জীবিকার একটি বড় অংশ নির্ভরশীল চিংড়ির উপর৷ তাই বাগেরহাটেই চিংড়ি গবেষণাগার নির্মাণ হওয়ায়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাজার হাজার হেক্টর জমিতে চিংড়ি চাষে গুণগত পরিবর্তন আসবে৷ বাড়বে উৎপাদন- এমনটাই আশা করছেন চাষীরা৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক