চিড়িয়াখানায় জন্তু-জানোয়ারদের মাপজোক
হামবুর্গ শহরের চিড়িয়াখানায় বাৎসরিক পশু গণনা শুরু হয়েছে৷ বাসিন্দাদের সংখ্যা গোনা হচ্ছে, সঙ্গে তাদের মাপ ও ওজনও নথিভুক্ত করা হচ্ছে৷ সদ্য জন্ম নেওয়া সিন্ধুঘোটক শিশুর প্রথমবার এই অভিজ্ঞতা হচ্ছে৷
বয়স ছোট, আকার নয়
থর নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছে৷ সদ্যোজাত সিন্ধুঘোটকের এখনো এক বছর বয়স হয়নি৷ কিন্তু এখনই তার ওজন প্রায় ২১৮ কিলো৷ গুটিয়ে না থেকে শরীর টান-টান করলে প্রায় ১ মিটার ৭০ সেন্টিমিটার লম্বা হতে পারে সে৷
মাছ পেলেই খুশি
থর-এর মা ডায়নার বয়স ১৮৷ শরীর প্রায় ৩ মিটার লম্বা৷ তবে তার মাপ নেওয়া সহজ নয়৷ সুস্বাদু মাছ খাইয়ে প্রথমে তার মন জয় করে খেলাচ্ছলে সেই কাজ করতে হয়েছে৷ সেইসঙ্গে জানা গেছে তার ওজনও – ৯৮০ কিলো!
বালতির মধ্যে একা কেভিন
গণনার সময় ছোট প্রাণীদের মোটেই ভোলা হয় না৷ মাত্র এক মাস বয়সি উত্তর অ্যামেরিকার এই শজারুর নাম কেভিন৷ দেখতে ছোট্ট খরগোসের মতো৷ তবে স্বভাবে বেজায় কুঁড়ে৷ সারাদিন গাছের ডালে শুয়ে ঘুমাতে ভালবাসে সে৷ ওজন মাপার সময়ও তাকে ঘুম থেকে তুলতে হয়েছিল৷
খাড়া কাঁটা, ভীষণ ক্লান্ত
বিশেষ রকমের দস্তানা পরে কেভিনকে ওজনযন্ত্রে বসানো হয়৷ খুব সাবধানে সেই কাজ করতে হয়, কারণ তার কাঁটা একেবারে সুচের মতো ধারালো৷ দেখা গেল, ওজন তার ১,২৮০ গ্রাম৷ কিন্তু এত কাণ্ডের দরকার ছিল কি? অবশ্যই – কারণ যে কোনো কোম্পানির মতো চিড়িয়াখানায়ও যে অ্যাকাউন্টস রাখতে হয়!
এখানে আরও একটা হরিণ!
গণনায় জানা গেল, চিড়িয়াখানায় ২৬টি ভিয়েতনামি সিকা হরিণ রয়েছে৷ গত বছরের গণনার পর অনেক প্রাণীর জন্ম-মৃত্যু ঘটেছে৷ অথবা নতুন অতিথি এসেছে৷ কিছু প্রাণী আবার অন্য চিড়িয়াখানায় চলে গেছে৷ এই মুহূর্তে হামবুর্গ চিড়িয়াখানায় প্রাণীর সংখ্যা ১,৮৫৯৷
খাঁচার মধ্যে জীবন
চিড়িয়াখানার ২৬টি ভিয়েতনামি সিকা হরিণ গ্রীষ্মকালে তাদের সাদা ছাপ ফুটিয়ে তোলে৷ স্বদেশে তারা বিপন্ন প্রাণীর তালিকায় রয়েছে৷ অন্য অনেক চিড়িয়াখানার মতো হামবুর্গও তাদের রক্ষা করতে প্রজনন কর্মসূচি চালাচ্ছে৷ তাই তাদের বংশবৃদ্ধি ঘটলে সেটা বড় আনন্দের কারণ৷
শুধু দেখতেই বিপজ্জনক
২০১৩ সালেই এই নর্দার্ন কেমেন আইল্যান্ড লিজার্ড-এর মাপ নেওয়া হয়েছিল৷ এই প্রজাতির গিরগিটি ১ মিটার ৪০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে৷ তবে এই প্রাণীটিকে দিব্যি হাতের উপর রাখা চলে৷ দক্ষিণ অ্যামেরিকার এই গিরগিটি দেখতে বিপজ্জনক হলেও বাস্তবে তারা বেশ শান্ত৷ তারা শামুক খেতে বড্ড ভালোবাসে৷
রাজি করানো কঠিন
সবচেয়ে বড় প্রাণীদেরও মাপজোক থেকে বাদ দেওয়া হয় না৷ এবার এশিয়ার এই হাতি পরিবারের পালা৷ বেশি কসরত ছাড়াই ২০১৩ সালে ‘আসাম’ নামের শাবকটির উচ্চতা মাপা সম্ভব হয়েছিল৷ তখন তার উচ্চতা ছিল দেড় মিটার৷ তবে ব্যাপারটা তার পছন্দ হয় নি৷ অনেক বুঝিয়ে-সুজিয়ে তাকে রাজি করাতে হয়েছিল৷
আরে, মুখের মধ্যে কী!
ছোট্ট থর-এর কারণে এ বছর সিন্ধুঘোটকের মাপজোকের ঘটনা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়েছে৷ এই চিড়িয়াখানায় আগামী বছর বাসিন্দাদের সংখ্যা বাড়বে, এমনটাই কর্মীদের আশা৷ যেমন বাঘেদের ঘরে নতুন অতিথি আসার কথা৷ হামবুর্গের হাগেনবেক চিড়িয়াখানা সম্পর্কে আরও জানতে উপরের ডানদিকের লিংকে ক্লিক করুন৷