1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন

ইং ইয়াং/আরবি২৬ মে ২০১৪

চীনের মানুষরা, বিশেষ করে বিত্তশালীরা হামেশাই স্বপ্ন দেখেন বিদেশে পাড়ি দেওয়ার৷ সেই লক্ষ্য সামনে রেখেই সন্তানদের বড় করেন তাঁরা৷ অনেকের ক্ষেত্রে সে স্বপ্ন সফলও হয়৷

https://p.dw.com/p/1C6YY
Symbolbild China Visum
ছবি: ibphoto - Fotolia.com

গু শুয়ান তাঁর সাত বছর বয়সি মেয়েকে প্রতিদিন স্কুল থেকে নিয়ে আসেন, স্কুলে পৌঁছে দিয়েও আসেন৷ ‘‘একা মেয়েকে স্কুলে যাতায়াত করতে দেওয়াটা খুব বিপজ্জনক৷'' বলেন গু শুয়ান৷ বিপদটা কী ধরনের সেটা স্পষ্ট নয়৷ তবে অদূর ভবিষ্যতে মেয়েকে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে মা-বাবার সিদ্ধান্তটা স্পষ্ট৷ তাঁদের ইচ্ছা মেয়ে অ্যামেরিকায় স্কুলশিক্ষা চালিয়ে যাবে৷

মধ্যবিত্তদেরও রয়েছে এই উচ্চাকাঙ্খা

মেয়ে জানে মা-বাবার পরিকল্পনা৷ সে তা বুঝতে পারে কিনা, তা অবশ্য তার মাও জানেন না৷ শুধু চীনের মিলিওনিয়াররাই যে তাঁদের সন্তানদের অ্যামেরিকা ও ব্রিটেনের দামি বেসরকারি স্কুলে পড়তে পাঠান তাই নয়, মধ্যবিত্তরাও এখন এই উচ্চাকাঙ্খার পথ ধরেছেন৷

Chinatown in Vancouver Kanada
যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত একটি ‘চায়না টাউন’ছবি: Getty Images

ইচ্ছার তালিকায় সবচেয়ে ওপরে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ক্যানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড৷ ২০১২ সালে প্রায় ১৫০,০০০ চীনা এই চারটি দেশে অভিবাসন করেছেন৷ বেইজিং-এর ‘সেন্টার ফর চায়না অ্যান্ড গ্লোবালাইজেশন'-এর এক সমীক্ষায় এই তথ্য জানা গিয়েছে৷

বর্তমানে প্রতিবছর ৮০-এর দশকের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি চীনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন৷ বেশিরভাগ অভিবাসী উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণির, ৩৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সি৷

এক বছর বয়সি ছেলেকে নিয়ে পরিকল্পনা

কাই জিং-এর ছেলে অ্যামেরিকায় জন্মেছে৷ মা-বাবার সঙ্গে এখন সে বেইজিং-এ বসবাস করে৷ বয়স তার এক বছর৷ ‘মা' ও ‘বাবা' শব্দ দুটি বলতে পারে সে৷ ‘‘চীনা ভাষাটা আয়ত্ত করতে পারলে আমরা অ্যামেরিকায় চলে যাব৷ ঐ দেশে জন্মগ্রহণ করায় গ্রিনকার্ড পেতে কোনো অসুবিধা হবে না৷'' খুশি হয়ে বলেন তরুণী মা৷

Weltbildungsbericht Schulklasse in Shanghai China
চীনাদের দেশ ছাড়ার প্রধান কারণ সন্তানদের সুশিক্ষার সুযোগ করে দেওয়াছবি: AFP/Getty Images

কাই জিং-এর স্বামী শুয়ে জিয়ান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উচ্চপদস্থ কর্মচারী৷ ছেলে জন্ম নেওয়ার আগেই তার ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করে ফেলেন মা-বাবা৷ ‘‘আমরা আমাদের ছেলেকে একটি সুন্দর জীবনের সুযোগ দিতে চাই৷ চীনের বাচ্চাদের স্কুলে অনেক চাপের মধ্যে থাকতে হয়৷ আমাদের নিজেদেরও এই অভিজ্ঞতা হয়েছে৷ আমি চাইনা আমার সন্তানও এটা ভোগ করুক৷'' বলেন সুয়ে জিয়ান৷

দেশ ছাড়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে

চীনের মানুষদের দেশ ছাড়ার প্রবণতার পেছনে কিছু কারণ রয়েছে৷ তাঁরা চান সন্তানদের সুশিক্ষার সুযোগ করে দিতে৷ এছাড়া অস্বাস্থকর খাদ্যদ্রব্য, স্মগ ও পরিবেশ দূষণ ইত্যাদিও উদ্বিগ্ন করে তুলছে চীনের জনগণকে৷

শুয়ে জিয়ান আরো কিছু কারণের কথা উল্লেখ করেন৷ বলেন, ‘‘চীনে আমরা নিরাপত্তার অভাব অনুভব করি৷ সরকার আইনের শাসনের কথা বললেও বাস্তবে প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়, কীভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে৷ এছাড়া ভবিষ্যতে গণআন্দোলন হতে পারে বলে আমাদের ভয় হয়৷ ধনী দরিদ্রের ফারাক বৃদ্ধি পাওয়ায় সহিংস আন্দোলন বা গণ বিপ্লব হওয়া অসম্ভব নয়৷''

সবার জন্য সৌভাগ্য বয়ে আনে না

ভবিষ্যতে কী তাঁর গোটা পরিবার অ্যামেরিকায় বসবাস করবেন? এই প্রশ্নের ‘না' সূচক উত্তর দেন শুয়ে জিয়ান৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি সবসময়ের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করবো না৷ অর্থ উপার্জন করতে চাইলে বিদেশের চেয়ে চীনে সুযোগ অনেক বেশি৷ কিন্তু আমার স্ত্রী ও সন্তান সর্বদা মুক্ত বাতাস ও সুশিক্ষার স্বাদ গ্রহণ করুক, এটাই আমি চাই৷''

চীনের অনেক পরিবারই এই সব কারণে পরস্পরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকেন৷ বিদেশে সবারই যে ভালো চাকরি পাওয়ার সৌভাগ্য হয় তা বলা যায় না৷ কাই জিং-এর পরিচিত একজন চীনে ডক্টরেট করা সত্ত্বেও ক্যানাডায় একটি সুপার মার্কেটে ক্যাশিয়ার হিসাবে কাজ করছেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান