1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘জবাবটা আবুলের খুব দরকার

৩ এপ্রিল ২০১৪

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাদ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷ তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে চলছে আন্দোলন৷ এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভের ঝড় উঠেছে৷

https://p.dw.com/p/1BaYa
Proteste gegen Gebühren in Schulen in Bangladesh
ফাইল ছবিছবি: DW

ঘটনাটির শুরু রবিবার৷ চতুর্থ বর্ষের ফিশারিজ বায়োলজি ও জেনেটিকস বিভাগের একটি কোর্সের ক্লাস পরীক্ষা শিক্ষককে বলে পেছানোর জন্য সায়াদকে চাপ দিয়েছিল গ্রেপ্তার হওয়া ছাত্রলীগ কর্মী সুজয় কুমার কুন্ডু ও রোকনুজ্জামান৷ শিক্ষক এতে রাজি না হলে সন্ধ্যায় হলে সায়াদকে ডেকে নিয়ে রড, লাঠি, হকিস্টিক দিয়ে নির্মমভাবে পেটানো হয়৷ ওই রাতে সায়াদকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়৷ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সায়াদ ময়মনসিংহ শহরের ট্রমা সেন্টারে মারা যান৷ কে বা কারা তাঁকে ট্রমা সেন্টারে নিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ এদিকে, সাদ হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও খুনিদের শাস্তি নিশ্চিত না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা৷

Bangladesch Demonstration in Dacca Demonstranten
ফাইল ছবিছবি: AP

সাহয়্যার ইন ব্লগে মোঃ জুনায়েদ খান শিরোনাম দিয়েছেন ‘আবুল তোর ভাই টা মরল কেন রে?' তিনি এক বেদনাদায়ক দৃশ্যের উপস্থাপন করেছেন তাঁর লেখায়৷ লিখেছেন, ‘‘সামান্য একটা লুঙ্গি পরে পাবলিক প্লেসে হাত পা ছাড়িয়ে উদাম গায়ে শুয়ে আছে আবুলের ভাই৷ গা ভর্তি কালো কালো দাগ, রক্ত জমাট বেঁধে শক্ত হয়ে আছে৷ আবুলের ভাইটাকে আরো অনেক মোটা দেখাচ্ছে৷ মোটা দেখাবেই না কেন? খাওয়াদাওয়াটা তো আর কম হয়নি! চড়-থাপ্পর, কিল-ঘুষি-লাত্থি, হক স্টিক, রড, চাপাতি বাদ যায়নি কিছুই৷ ওর বন্ধুরা সারারাত ধরে আদর করে খাইয়ে দিয়েছে৷ ভাইয়ের আদর মাখা মুখটার দিকে তাকিয়ে ডুকরে কেঁদে ওঠে আবুল৷''

লিখেছেন, ‘‘আবুলের এ দুর্ভাগা ভাইটির নাম সায়াদ ইবনে মমতাজ সাদ৷ একটা আদুরে স্পর্শ কিংবা এক ফোটা জল অভাগার কপালে কিছুই জোটেনি৷ কখন মরে গেছে সেটাও কেউ জানে না৷ ‘কি এমন পাপ করেছিল রে তোর ভাই?' পাপ! পাপই বটে৷ দেশের একটা খ্যাতনামা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে সবচেয়ে বড় পাপটা করেছিল সে৷ নিরাপত্তাহীন সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু হায়েনাকেও সরল মনে বিশ্বাস করেছিল সে৷ হায়েনারা তার বিশ্বাসের উপযুক্ত প্রতিদান দিয়েছে৷ পঁচে যাওয়া পৃথিবীর তীব্র পঁচা গন্ধে হয়ত ঘুমাতে অনেক কষ্ট হতো সাদের৷ সাদের সেই বিশ্বস্থ হায়েনারা তাকে সে কষ্ট থেকে চিরতরে মুক্তি দিয়েছে৷ ‘আবুল, তোর ভাইটা তাহলে মরেই বেঁচে গেল নাকি রে?'''

সাদ...সাদ...সাদ...! হাজার হাজার সাদ রাজপথে নেমে এসেছে৷ অবাক কাণ্ড! কে? কে স্লোগান দেয়? ‘আমার ভাই মরল কেন? প্রশাসন জবাব চাই...' সাদের খুনিদের...ফাঁসি চাই...ফাঁসি চাই...' আবুল নিজেকে সামলে রাখতে পারে না৷ মিছিলের মাঝে মিশে যায়৷ দাঁতে দাঁত চেপে বজ্রকন্ঠে চিৎকার করে ওঠে – ‘আমার ভাই মরল কেন? জবাব চাই... জবাব চাই...' জবাবটা জানা যে আবুলের খুব দরকার৷''

একই ব্লগে মোহাম্মদ আরিফুর রহমান একটি কবিতা লিখেছেন,

‘‘আমার হলনা তোমাদের হোক

ভুলে গত আকালের শোক৷

সবাই পারেনা ফিরে যায় কেউ

তবু তোমরা স্মৃতি চিহ্ন রেখে যেও...

ভেতরে ভোর আসেনা

অদ্ভুত সুন্দর সূর্যটা দেখা দেয় না

ধবধবে সাদা জামা কিংবা ফুটফুটে সাদা কবিতার পাতা

মহাকালের ঘুটঘুটে কালোয়

আপন সত্তাকে খুঁজে পায় না৷

আবার জানালায় জাগছে ভোর

এখানে অন্ধকার

নিঃশব্দে প্রতিক্ষণ চলে মৃত্যুর হাহাকার৷''

সংকলন: অমৃতা পারভেজ

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য