1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি কমাতে মাঠে নেমেছে জার্মানি

৩ সেপ্টেম্বর ২০১০

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি কাটাতে নানা দেশ নানা উদ্যোগ নিয়েছে৷ শিল্পোন্নত দেশ বলতে যে দেশগুলোকে বোঝানো হয়, সেই দেশগুলো – বিশেষ করে জার্মানি এ ক্ষেত্রে কী করছে?

https://p.dw.com/p/P3E9
বাংলাদেশের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ভয়াবহ হতে চলেছেছবি: Sophie Tarr

‘জলবায়ু পরিবর্তন: বাংলাদেশ ও ইউরোপ সংলাপ' শীর্ষক সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গত সপ্তাহে জার্মানির হানোফার শহরে৷ এই সংলাপে আগতদের মধ্যে ছিলেন এমন অনেক ব্যক্তি, যারা খোদ জার্মানিতেই কাজ করছেন জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু নিয়ে৷

জার্মানি,মধ্য ইউরোপের একটি রাষ্ট্র৷ ইউরোপের অন্যতম প্রধান শিল্পোন্নত দেশ৷ আয়তনের দিক থেকে ইউরোপের ৭ম বৃহত্তম রাষ্ট্র৷ উত্তর উত্তর সাগর ও বাল্টিক সাগরের উপকূলীয় নিম্নভূমি থেকে মধ্যভাগের ঢেউ খেলানো পাহাড় ও নদী উপত্যকা এবং তারও দক্ষিণে ঘন অরণ্যাবৃত পর্বত ও বরফাবৃত আল্পস পর্বতমালা দেশটির ভূ-প্রকৃতিকে বৈচিত্র্যময় করেছে৷ রাইন, মাইন, এলবে, দানিউব, স্পে এবং মোজেল নদী ছড়িয়ে আছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তরে৷

Klimawandel Bangladesch Überschwemmung Slum Haors
বন্যার থাবা থেকে বাঁচতে আরও উঁচি জায়গাই ভরসাছবি: Sophie Tarr

প্রাকৃতিক এই সৌন্দর্য্যের বাইরেও একটি বিষয় আছে৷ আর তাহলো শিল্পায়ন৷ বলা হচ্ছে, এই শিল্পায়ন পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তনের উপর প্রভাব ফেলছে৷ এ অবস্থায় কি করা যায়?

১৯৯২ সাল৷ জুন মাসের প্রথম এবং দ্বিতীয় সপ্তাহ৷ ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে জাতিসংঘের বিশেষ বৈঠক৷ জলবায়ু পরিবর্তন বিষযে৷ বিশ্বের অনেক দেশের শীর্ষ নেতারা আছেন তাতে৷ আছেন তখনকার জার্মান চ্যান্সেলর হেলমুট ক্যোহল৷ তিনিই সেই সম্মেলনে প্রতিশ্রুতি দিলেন, ২০০৫ সালের মধ্যে জার্মানি ক্ষতিকারক কার্বন নি:সরণ, যাকে সংক্ষেপে বলে সিওটু, তা শতকরা ২৫ ভাগ কমাবে৷ জার্মানি সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি! বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে ক্ষতিকারক এই গ্যাস নি:সরণ কমানো হয়েছে মাত্র ২১ ভাগ৷ কিন্তু এর চার বছর বাদেই হিসেব কষে বলা হয়েছে, জার্মানি তার লক্ষ্যে পৌঁছে গেছে, ক্ষতিকারক গ্যাস নি:সরণ কমানো হয়েছে ২৭ ভাগ৷ তবে কাজ থেমে নেই তাদের৷ বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুসারে, ২০২০ সাল নাগাদ শতকরা ৪০ ভাগ এবং ২০৫০ সাল নাগাদ জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম এই গ্যাস নি:সরণ ৯৫ ভাগ কমানো হবে৷ ফলে শিল্প এবং জ্বালানি খাতে আনা হচ্ছে বিশাল পরিবর্তন৷ নতু্ন এই অর্থনীতির নাম দেয়া হয়েছে ‘লো কার্বন ইকোনমি'৷ এ বিষয়ে হানোফারে বাংলাদেশ- ইউরোপ সম্মেলনে অংশ নেয়া পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ইয়োর্গান মায়ার বলছেন, ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে জার্মানির বড় ধরণের উদ্যোগ রয়েছে৷ আমরা এমনি একটি দেশ যেখানে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার হচ্ছে দ্রুত৷ কারণ পরিবেশ বান্ধব জ্বালানিতে আমরা ২০ বছরের জন্য বিশেষ প্যাকেজ বা সুবিধা দিচ্ছি৷'

Sunderbans
সুন্দরবনের মানুষ এখনই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব টের পাচ্ছেনছবি: Prabhakar Mani Tewari

কার্বন নি:সরণের মাত্রা কমাতে জার্মানির এই উদ্যোগে বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকির দেশ কি উপকৃত হবে? মায়ার বলছেন, ‘এটা জার্মানির নিজের জন্য সহায়ক হতে পারে৷ কিন্তু বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে সহায়তা করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে সবগুলো শিল্পোন্নত দেশসহ ভারত ও চীনকে৷'

জার্মানি যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, সেই পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন তো বেশ চ্যালেঞ্জের বিষয়৷ এ বিষয়ে মায়ারের ভাষ্য, ‘সত্যিই এটা বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ৷ আমাদের এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতেই হবে৷ কারণ এটা না করা গেলে জলবায়ু পরিবর্তন একটি মহা দুর্যোগ হিসাবে চিহ্নিত হবে৷'

প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন