1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে গোখাদ্যে!

১৭ সেপ্টেম্বর ২০১০

জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে বিশ্বমন্ডলে৷ আর এই পরিবর্তন রুখতে কত কিছুই না বলা হচ্ছে, আর কত কিছুই না করা হচ্ছে৷ এবার জলবায়ুর পরিবর্তনের লাগামকে ধরে রাখার চেষ্টা চলছে প্রাণীকূলের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে৷

https://p.dw.com/p/PEMD

চলুন চলে যাই, বাংলাদেশে৷ যমুনা নদীর বুকে একটি চড়ে গরুর পাল নিয়ে হেঁটে চলেছেন এক কৃষক৷ গ্রিন হাউজ গ্যাস কিংবা জলবায়ু পরিবর্তন- এর কীইবা বোঝেন তিনি৷ আর নুন আনতে যার পান্তা ফুরোয় এতে কীইবা এসে যায় তাঁর৷ কিন্তু তার পরেও তো এই পৃথিবীকে বাঁচাতে কাজ করতে হবে, তাই না? এ ক্ষেত্রে নানা সংগঠন করছে নানা গবেষণা৷ এমনি একটি প্রতিষ্ঠান আন্ত:প্রাণীসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা আইএলআরআই৷ যারা প্রাণীদের নিয়ে গবেষণা করে৷ আইএলআরআই এর নতুন একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, যেসব প্রাণী খড় কিংবা ঘাস খায়, খাবার পরে ঢেকুর তোলে এবং যাদের গোবর দিয়ে সার হয়ে থাকে, বিশ্বের গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনের পাঁচ ভাগের এক ভাগের জন্য দায়ী গরুর মতো সেইসব প্রাণী৷

আইএলআরআই এর এই গবেষণায় বলা হয়েছে, দিনদিন বেড়ে যাচ্ছে গরুর মাংস ও দুধের চাহিদা৷ আর সেইসঙ্গে বেড়ে চলেছে গ্রিণহাউজ গ্যাস নির্গমনের আশঙ্কা৷ কিন্তু তাই বলে তো আর মাংস কিংবা দুধ খাওয়া বন্ধ করা যাবে না৷ তাই নজর দেওয়া হয়েছে গরুর খাবারের দিকে৷ গবেষণাটি বলছে, বেশি বেশি শস্য খাওয়ানোর পরিবর্তে গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে অল্প পরিমানে অধিক পুষ্টিসমৃদ্ধ তৃনভূমির ঘাস৷ গ্রীষ্মমন্ডলীয় দেশগুলোতে এই ধরণের আরও পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে৷ এতে একদিকে যেমন শস্যভান্ডারে ঘাটতি পড়বে না, অন্যদিকে আবার সবুজ ঘাসের জমিও হারিয়ে যাবেনা৷

গবেষণাটিতে উল্লেখ করা হয়েছে ল্যাটিন অ্যামেরিকার কথা৷ বলা হয়েছে, সেখানকার গরুরা তৃণভূমিতে গিয়ে অধিক পুষ্টিসমৃদ্ধ ঘাস ব্রাসিয়ারিয়া খাচ্ছে৷ যার ফলে এসব গাভি অতিরিক্ত দুধ দিতে পারছে এবং এদের ওজনও প্রায় তিনগুণ বেড়েছে৷ গবেষকদের মধ্যে একজন ফিলিপ থ্রনটন৷ এ প্রসঙ্গে থ্রনটন বলছেন, এই অঞ্চলের কেবল ৩০ শতাংশ গরুকেও যদি ব্রাসিয়ারিয়া ঘাস খাওয়ানো হয় তাহলে প্রতি বছর প্রায় ৩ কোটি টন কার্বন ডাইঅক্সাইড কম মিশবে প্রকৃতিতে৷ গবেষণাটিতে বলা হয়েছে, পৃথিবীতে যে পরিমান গ্রিণহাউজ গ্যাস নির্গমন হয় তার ১৮ শতাংশের জন্য দায়ী মিথেন ও নাইট্রাস অক্সাইড উৎপাদনকারী এইসব প্রাণীকূল৷

বিজ্ঞানীরা বলছেন, গৃহপালিত প্রাণীদের খাবারে পরিবর্তন আনাটা গ্রীষ্মমন্ডলীয় অর্ধ বিলিয়ন গরীব কৃষকের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে৷ তাই ধনী দেশগুলো, যারা বেশি কার্বন নির্গমন করছে তারা এই কৃষকদের সাহায্য করতে পারে৷

ইউরোপীয়ান ক্লাইমেট এক্সচেঞ্জের হিসেব অনুযায়ী, প্রতিটন কার্বনের জন্য ২০ ডলার সমপরিমান ক্ষতি হচ্ছে৷ সেই হিসেবে গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের গরীব কৃষকরা যদি প্রাণীকূলের খাদ্যাভাসের পরিবর্তন আনতে পারে, তাহলে বেঁচে যাবে বিশ্বের ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার৷

প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস

সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়