1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জলবায়ু বিমা চালুর আহ্বান জানাচ্ছেন বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা

১৮ মার্চ ২০১১

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগামীতে ‘জলবায়ু বিমা’ ব্যবসা সম্ভাবনাময় খাত হতে পারে৷ এর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি-পরিবার ও সমাজের জন্য ক্ষতিপূরণ আদায় করে দেয়া সম্ভব৷ জাতিসংঘের মাধ্যমে ইতিমধ্যে এই প্রক্রিয়া শুরুও হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/10bqs
বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা জলবায়ু বিমা চালুর দাবি জানাচ্ছেনছবি: CC/United Nation Photos

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় সব বিমা কোম্পানি এখন একটি পরিকল্পনা নিয়ে বেশ এগিয়ে যাচ্ছে৷ আর এর নাম জলবায়ু বিমা৷ অবশ্য ইতিমধ্যেই ফ্লোরিডা রাজ্যের বিমা কোম্পানিগুলো প্রায় একই ধরণের বিমা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে৷ তবে সেটা জলবায়ু নিয়ে নয়, তারা আবহাওয়াকেই গুরুত্ব দিচ্ছে৷ এর মানে সেখানে মাঝে মাঝেই যে ঝড় জলোচ্ছ্বাস হচ্ছে, তাতে যে ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে, তা কাটিয়ে তুলতে চালু করেছে এই প্রকল্প৷

অবশ্য এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা জলবায়ু বিমা চালুর দাবি জানাচ্ছেন৷ তারা বলছেন, এই বিমা ব্যবস্থায় ক্ষতিগ্রস্তরা যেমন পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ পাবে, তেমনি দেশও অনেকটা চাপমুক্ত হওয়ার মাধ্যমে লাভবান হবে৷ তারা জানিয়েছেন, এই প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলের দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোতে শুরু হয়েছে৷ প্রতি বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের পর ব্যক্তি নির্বিশেষে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে ওই ক্ষতিপূরণ দেয়া হচ্ছে৷ জলবায়ু পরিবর্তনে বিশ্বব্যাপী ‘মিটিগেশন' ও ‘অ্যাডাপ্টেশন' নামে দু'টি বিষয় রয়েছে৷

Madagaskar Abholzung
ছবি: AP

অভিযোজন প্রক্রিয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যেসব সমস্যার উদ্ভব ঘটবে তার বিরুদ্ধে খাপ খাওয়ানোর সক্ষমতা অর্জনের বিষয় রয়েছে৷ এরমধ্যে খাদ্য ঘাটতি মোকাবিলা ও আবাসস্থল রক্ষায় প্রস্তুতি, লবণসহিষ্ণু ফসল উদ্ভাবন ও আবাদ, জীববৈচিত্র্য রক্ষা, সুপেয় পানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখাসহ নানা বিষয় রয়েছে৷

এ নিয়েই কথা বলছিলাম বাংলাদেশের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা অক্সফামের ম্যানেজার জিয়াউল হক মুক্তার সঙ্গে৷ তিনি এ প্রসঙ্গে জানালেন, শুধু বিমা নয়, ব্যাংকিংও আগামীতে একটি সম্ভাবনা খাত হিসেবে বেরিয়ে আসতে পারে৷ তবে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে ভালো যে উপায়টি রয়েছে, তাই খুজে বের করা প্রয়োজন৷

এ কথা তো সকলের জানা যে, সমুদ্রের পানির উচ্চতা এক মিটার বাড়লে বাংলাদেশের ১ কোটি ৩০ লাখ লোক গৃহহীন হবে৷ ১৬ ভাগ ধান উৎপাদন হ্রাস পাবে৷ এর ফলে খাদ্য ঘাটতি অনিবার্যভাবে উপস্থিত হবে৷ জিয়াউল হক মুক্তা বলেন, গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমনে আমরা সহনীয় মাত্রারও অনেক নীচে অবস্থান করছি৷ অথচ সবচেয়ে বেশি বিপদাপন্ন ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছে বাংলাদেশের৷ ১৯০৭ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত একশ' বছরে ৩০ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দেশ ও জনগণের৷

জলবায়ু পরিবর্তনে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ৷ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশে মারাত্মক পানিজনিত সমস্যা বিদ্যমান৷ আর জলবায়ুর পরিবর্তন এ সমস্যাকে আরও ঘনীভূত করেছে৷ গ্রীনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ কমানোর মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমানো এবং জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে৷ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সৃষ্ট প্রায় সকল পরিবেশগত ও সামাজিক বিপর্যয় চূড়ান্তভাবে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ৷ জলবায়ু পরিবর্তন এ অঞ্চলের সকল দেশের ওপর প্রভাব ফেলবে৷

প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন