1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জাপানের পরমাণু বিপর্যয়ে বিপর্যস্ত জার্মানির এফডিপি

৭ এপ্রিল ২০১১

জার্মানির উদারপন্থী গণতান্ত্রিক দল এফডিপি-র বহুল আলোচিত গিডো ভেস্টারভেলে দলীয় নেতা এবং জার্মানির ভাইস চ্যান্সেলরের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন৷ দলে এখন নতুন নেতা৷ ফিলিপ ব়্যোসলার৷ বয়স ৩৮৷ তিনি এফ ডি পি-র ১৩ নম্বর দলীয় নেতা৷

https://p.dw.com/p/10p8g
ছবি: dapd

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে-র নাম বঙ্গীয়করণ করে একজন বাঙালি রসিকতা করেছেন, জাপানের সুনামির তরঙ্গে জার্মানির ‘পশ্চিমা তরঙ্গ'ও ভেসে গেল৷ জার্মান শব্দ ভেস্টারভেলে, বঙ্গানুবাদে প্রায় মূলানুগ – ‘পশ্চিমা তরঙ্গ'৷

সূক্ষ্ম বিচারে এরকমই ঠিক যে, ভেস্টারভেলে এবং তাঁর দল এফ ডি পি-কে জাপানের সুনামি ও ভূমিকম্পই ধসিয়েছে৷ যদিও, ধসের আলামত ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছিল৷ ত্বরান্বিত করেছে ফুকুসিমার বিধ্বস্ত পরমাণু চুল্লি৷ প্রায় একই সময়ে বাডেন-ভুর্টেমব্যার্গ এবং রাইনলান্ড প্যালেটিনেট, জার্মানির এই দুই গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে নির্বাচন৷ দুই রাজ্যেই এফ ডি পি-র শোচনীয় পরাজয়৷ পরাজয়ের দায় বর্তায় ভেস্টারভেলের ঘাড়েই৷ কেননা তিনি দলীয় প্রধান৷

ইতিপূর্বে,এফ ডি পি সবসময়ই পরমাণু চুল্লির পক্ষে সায় দিয়েছে, সাফাই গেয়েছে৷ কারণও আছে৷ এফডিপি সর্বদাই বিত্তশালী ও বড়ো-বড়ো ব্যবসায়ীর আস্থাভাজন৷ ব্যবসায়ীদের কব্জায় জার্মানির ১৭-টি পরমাণু চুল্লি৷ ১৭ চুল্লি থেকে গোটা জার্মানির জন্যে মাত্র ২৩ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়৷ দেশব্যাপী যখন চুল্লির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, সোচ্চার, নির্বাচনও আসন্ন তখন৷ উপায়ান্তর না দেখে এফ ডি পি-ও ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যায়৷ নমনীয় হয়৷ কিন্তু ততদিনে পালে উল্টো হাওয়া৷ অতঃপর নির্বাচনে ভরাডুবি৷ এই ভরাডুবির জন্যে ভেস্টারভেলে-ই যে সম্পূর্ণ দায়ী, হয়তো তা নয়৷ যদিও তিনিই দলীয় নেতা৷ তাঁর পরামর্শ, উপদেশ ছাড়া কিছুই হয়নি৷ আরো ঘটনা এই, বড়ো-বড়ো হোটেল ব্যবসায়ীদের ট্যাক্স ছাড় দিয়েছেন অর্ধেকের বেশি৷ অথচ মধ্যবিত্ত, সাধারণ চাকরিজীবী, শ্রমিকের কর মওকুফে বড়ো কোনো উদ্যোগ নেয়নি উদারপন্থী গণতন্ত্রী দল৷ জনগণ ক্ষিপ্ত৷

কেউ বলেন, গত ১১ বছর (২০০৯ সনে সিডিইউ-র সঙ্গে ঐক্যজোট সরকার) ক্ষমতায় না থেকে ক্ষমতার জন্যে দিশেহারা হয়েছিল৷ সিডিইউ-য়ের জুনিয়র হিসেবে ক্ষমতাসীন হয়ে ভুলে যায় জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি৷ কারোর কথা, জার্মান বৈদেশিক রাজনীতিকেও সঠিক কাজে লাগাতে ব্যর্থ ভেস্টারভেলে৷ কেউ বলেন,সন্দেহ নেই, তিনি বাগ্মী, বুদ্ধিমান, চৌকস রাজনীতিক৷ গত এক দশকে জার্মান রাজনীতিতে ঢেউ তুলেছেন, কিন্তু অতিশয় অহংকারী, দাম্ভিক৷ গণতন্ত্রের লেবাসে ভিন্নমতের রাজনীতিককে , এমন কী নিজের দলের সিনিয়রকেও তুচ্ছ জ্ঞান করতেন৷ দলের সিনিয়রদের সঙ্গে বিরোধ ছিল৷ আপোশ করেননি৷ তাঁর পতনে ও পদত্যাগে আমরা অসুখী নই৷ দলে এখন নতুন মুখ, নতুন নেতৃত্ব আসবে, পুরোনো মূল্যবোধ ঝেড়ে ফেলবে, এটাই কাম্য আমাদের৷

প্রতিবেদন: দাউদ হায়দার, বার্লিন

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন