1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১ আগস্ট ২০১৩

বাংলাদেশের মৌলবাদী রাজনৈতিক সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করেছে হাইকোর্ট৷ এর মধ্য দিয়ে জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পথ প্রশস্ত হয়েছে৷ ওদিকে, আপিলের জন্য রায়ের স্থগিতাদেশ চেয়ে ইতিমধ্যেই আবেদন করেছে জামায়াত৷

https://p.dw.com/p/19IHQ
Bangladeshi women shout slogans demanding the execution of Jamaat-e-Islami leader Abdul Quader Mollah and others convicted of war crimes involving the nation's independence war in 1971, in Dhaka, Bangladesh, Wednesday, Feb. 13, 2013. Protestors urged Prime Minister Sheikh Hasina to review a verdict sentencing the senior leader of Bangladesh's largest Islamic party to life in prison for killings and other crimes. The protesters said the life term was not enough since a tribunal had found Abdul Quader Mollah guilty of five charges, including playing a role in the killing of 381 unarmed civilians. Banner reads "we demand the execution of those convicted of war crimes." (AP Photo/Pavel Rahman)
ছবি: picture-alliance/AP

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের নিয়ম চালু করলে জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিক দল হিসবে নিবন্ধন নেয়৷ কিন্তু জামায়াতের এই নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কয়েকটি সংগঠন ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা হাইকোর্টে রিট করেন ২০০৯ সালে৷ আদালত তখন নির্বাচন কমিশন ও জামায়াতের বিরুদ্ধে রুল জারি করে৷ সেই রিটে জামায়াতের গঠনতন্ত্র সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে উল্লেখ করা হয়, এ কথা ডয়চে ভেলেকে জানান ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর৷ কারণ, জামায়াত জনগণের সার্বভৌমত্ব মানে না, জামায়াতের শীর্ষ পদে নারীরা আসীন হতে পারেন না৷ আর সব ধর্মের মানুষ জামায়াতের রাজনীতি করতে পারেন না৷

এই রিটের ওপর শুনানি শেষ হয় গত ১২ই জুন৷ বৃহস্পতিবার বিকেলে বিচারপতি এম মোয়াজ্জেম হোসেন, বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হকের সমন্বয়ে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ তাদের রায়ে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করেন৷ রায়ে বলা হয়, জামায়াতের গঠনতন্ত্র শুধু সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিকই নয়, জামায়াত একটি সন্ত্রাসী দল৷

রায়ের পর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং এই মামলার আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রজ্জাক তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন যে, এই রায়ের বিরুদ্ধে তারা আপিল করবেন৷ আর সেজন্য রায়ের কার্যকারিতার স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে ইতিমধ্যেই৷ এতে জামায়াতের রাজনীতির ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়কে কিনা – এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাব''৷

এদিকে নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী মহসীন রশিদ বলেছেন, এই রায়ের ফলে কার্যত জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হলো৷ এই দলের প্রতীক দাড়িপাল্লা নিয়ে আর কেউ নির্বাচন করতে পারবে না৷ আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ বলেছেন, রায়ের কপি পাওয়ার পর তারা সিদ্ধান্ত নেবেন৷

ওদিকে ১৪ দলের পক্ষে এক আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, আদালতের এই রায়ে আবারো প্রমাণিত হলো যে জামায়াত একটি সন্ত্রাসী সংগঠন৷ তাঁর আশা, আদালতের রায়ের আলোকে নির্বাচন কমিশন জামায়াতকে নিষিদ্ধের ব্যবস্থা নেবে৷

জামায়াতের অন্যতম মিত্র বিএনপি তাত্‍ক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি৷ তবে বিএনপি নেতা গায়েম্বর চন্দ্র রায় সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, জামায়াতের বিরুদ্ধে এই রায়ের ফলে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরো বাড়বে৷

১৯৪১ সালে জামায়াত প্রতিষ্ঠার পর মোট তিনবার দলটি নিষিদ্ধ হয়েছে৷ ১৯৫৯ এবং ১৯৬৪ সালে পাকিস্তানে এবং ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে৷ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ১৯৭৯ সালের ২৫শে মে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো জামায়াত প্রকাশ্যে রাজনীতি করার সুযোগ পায়৷ ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসির মামুন ডয়চে ভেলেকে বলেন, হাইকোর্টের এই রায়ের ফলে জামায়াতকে চতুর্থবারের মতো নিষিদ্ধ করার পথ প্রশস্ত হলো৷ তবে এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে সরকারকে৷ কারণ রায়ের পর জামায়াতের নিবন্ধন যদি নির্বাচন কমিশন বাতিল করে তাহলেই কিন্তু জামায়াত নিষিদ্ধ হয়ে যাবে না৷ শুধুমাত্র একটি অনিবন্ধিত দলে পরিণত হবে৷ অর্থাৎ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না৷

আদালতের রায়ে জামায়াতকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলা হয়েছে৷ তাই জামায়াতের অতীত এবং বর্তমান সন্ত্রাসী কাজ বিবেচনায় নিয়ে সরকার বিশেষ ক্ষমতা আইনে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে পারে৷ অধ্যাপক মুনতাসির মামুন জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানালেও সরকার এতটা সাহসী হবে বলে আশা করেন না তিনি৷ কারণ জামায়াতের শক্তি আছে, জোট আছে, ভোট আছে৷ মুনতাসির মামুনের কথায়, জামায়াত একটি যুদ্ধাপরাধী দল৷ ট্রাইব্যুনালের একাধিক রায়ে তা বলাও হয়েছে৷ তাই যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবেও জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা সম্ভব৷ সম্ভব জামায়াতের বিচার করা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য