1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে লবি কন্ট্রোল

১৭ মার্চ ২০১০

লবিস্ট কখনো হতে পারেন কারখানার মালিক বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রধান৷ সাধারণত দেখা যায় লবিং করতে হচ্ছে রাজনীতিকদের সঙ্গে, যারা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উপস্থাপন করেন সংসদে৷

https://p.dw.com/p/MVXA
বার্লিন– লবিজমের মধ্যমণিছবি: DW

জার্মানির রাজধানী বার্লিন৷ রাজনীতির সব ধরণের অম্ল-মধুর সিদ্ধান্ত সেখানেই নেয়া হয়৷ এখানেই রয়েছে জার্মান সংসদ - বুন্ডেসটাগ৷ চ্যান্সেলর, জার্মান প্রেসিডেন্ট এবং অন্যান্য মন্ত্রীরাও এই শহরেই কাজ করেন, বসবাসও করেন৷ কিন্তু সব ধরণের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তই যে শুধু বার্লিনে বা সংসদের নেয়া হয় তা কিন্তু নয়৷ সংসদের বাইরেও রাজনীতিকরা মিলিত হন, নেন বিভিন্ন ধরণের সিদ্ধান্ত৷ শুরুতেই বলা হয়েছে লবিং- এর অর্থ হচ্ছে অর্থের বিনিময়ে নিজ স্বার্থকে রক্ষা করতে রাজনীতিকদের শরণাপন্ন হওয়া, পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করা৷ এই কাজটি করেন থাকেন লবিস্টরা৷ লবিস্টরা বিভিন্ন জায়গায় মিলিত হন রাজনীতিকদের সঙ্গে৷

RWE Turm in Essen
এসেন শহরে আরডাব্লুই -র একটি জ্বালানী উৎপাদনকারী প্ল্যান্টছবি: AP

প্রশ্ন উঠেছে, বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং কারখানার মালিকদের এই পরিকল্পনা কি কখনো সাধারণ মানুষদের স্বার্থ উদ্ধার করে ? এই উত্তর খুঁজতে কোলনে গড়ে উঠেছে ‘লবি কন্ট্রোল' নামের একটি সংস্থা৷ সাংবাদিক ডিটমার ইয়াসবিনসেক কাজ করছেন এই সংস্থায়৷ তিনি সরাসরি হাজির হয়েছেন বার্লিনে৷ জার্মানির রাসায়নিক কারখানাগুলোর প্রতিনিধিত্ব করছে ভিসিআই নামের এক সংগঠন৷ সে প্রসঙ্গে ডিটমার জানালেন, ‘‘সম্প্রতি একাধিক লবি'র মধ্যে এক বিশাল আকারের সংঘাত দেখা গিয়েছে, যার আওতায় রাসায়নিক কারখানাগুলো নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য আসরে নেমেছিল৷ তবে সেটা বার্লিনে হয়নি, হয়েছিল ব্রাসেলসে৷''

নিখুঁত লবিং'এর কারণে রাসায়নিক কারখানাগুলো তাদের স্বার্থ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিল, বাড়তি খরচ কমাতে পেরেছিল৷ লবি কন্ট্রোল প্রসঙ্গে ডিটমার ইয়াসবিনসেক আরো বললেন, ‘‘লবি কন্ট্রোলের অর্থ হল জার্মানিতে লবিং-কে নিয়ন্ত্রণে রাখা৷ এই লবিং'কে যে কেউ নিয়ন্ত্রণে দেখতে চায়৷ সবাই এই নিয়ন্ত্রণকে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলে৷ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল দূর্নীতি দমন নিয়ে কাজ করে৷ রাজনীতিকদের ওপর যারা অবৈধ এবং অনৈতিকভাবে প্রভাব বিস্তার করে – তাদের সমালোচনা করে৷ লবি কন্ট্রোল তেমন কিছু করবে না৷ নীতিগতভাবেই যে সব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, প্রভাব বিস্তার করা হয়, সেগুলো জনসম্মুখে তুলে ধরা হবে৷ ভুল সিদ্ধান্ত হলে তার সমালোচনা করবে লবি কন্ট্রোল৷''

BdT Spatz und Kaffeetasse
সংসদের বাইরে বিভিন্ন ক্যাফে-রেস্তোরায় লবিস্টরা মিলিত হন রাজনীতিকদের সঙ্গেছবি: AP

বার্লিনে ডিটমারের সঙ্গে ছিলেন বেশ কিছু মানুষ৷ পুরো দলটি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে৷ বার্লিনের এই এলাকায় রয়েছে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন অফিসের শাখা এবং আরো অনেক সংস্থার দপ্তর৷ তামাক শিল্পের প্রতিনিধি, ব্যাংক ব্যবসায়ী, গাড়ির ব্যবসায়ী - সব মিলে প্রায় ৫ হাজার লবিস্ট কাজ করছেন বার্লিনে৷ এর সঙ্গে রয়েছে অসংখ্য জনসংযোগ সংস্থা৷ এসব সংস্থা হল লবিং'এর মধ্যমণি৷ এরাই বিভিন্ন কোম্পানির হয়ে প্রচার করে থাকে৷ বিভিন্ন সংস্থার ভাবমূর্তি রাজনীতিকদের কাছে তুলে ধরার দায়িত্ব থাকে এই এজেন্সিগুলোর৷ এই এজেন্সিগুলোই রাজনীতিকদের সঙ্গে প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থার মালিকদের সাক্ষাৎ ঘটায়৷ কখন কোন আইন প্রণয়ন করা হবে তা-ও সবার আগে জানে এই এজেন্সিগুলো এবং তাদের বদৌলতে প্রতিষ্ঠানগুলোও জেনে যায়৷ ডিটমার জানান, ঠিক এখানেই দেখা দেয় সবচেয়ে বড় সমস্যা৷ ক্ষমতা আর অর্থের সামনে আর কোন কিছুই দাঁড়াতে পারে না৷

Symbolbild Businessmen beim Handschlag und Geldscheine, Manager, Gehalt
কে লবিস্ট ? কে রাজনীতিক ?ছবি: picture-alliance/chromorange

ডিটমার জানান, ‘‘গ্রিনপিস বা জার্মানির পরিবেশ সংরক্ষণ সংগঠনের কাছে রসায়ন শিল্প সংস্থাগুলির মত এত অর্থ নেই৷ যখনই দুর্বল ও শক্তিশালী দুই পক্ষের মধ্যে স্বার্থের সংঘাত ঘটে, সেখানে অর্থবলেরই শেষ পর্যন্ত জয় হয়৷ লবিং'এর মূল সমস্যা এটাই৷''

মূল কথা হল যার অর্থ আছে তার স্বার্থ রক্ষা করা হবে৷ এখানে ব্যক্তিগত পর্যায়ে আলাপ-পরিচয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷ নতুন আইন প্রণয়ন করা হলে, আগেভাগেই সেই খবর এদের কাছে পৌঁছায়৷ তখন শুধু দরকার হয় রাজনীতিকদের সম্মতি৷ এটা সম্ভব হয় শুধুমাত্র রাজনীতিকদের সঙ্গে ভাল যোগাযোগ থাকলেই৷

প্রতিবেদক : মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদক : সঞ্জীব বর্মন