1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে শরণার্থী সীমা নৈতিকবিচারে প্রশ্নবিদ্ধ

১১ অক্টোবর ২০১৭

জার্মানির রক্ষণশীল দল সিডিইউ ও সিএসইউ শরণার্থী প্রবেশের সীমা নির্দিষ্ট করতে সম্মত হয়েছে৷ যদিও অনেকে একে অসাংবিধানিক পদক্ষেপ বলছেন, বিশেষজ্ঞদের মতে প্রস্তাবটি বৈধ৷ তবে নৈতিকভাবে শরণার্থী সীমা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়৷

https://p.dw.com/p/2le4C
ছবি: Reuters/S. Loos

সোমবার সিডিইউ প্রধান আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও সিডিইউ নেতা হোর্স্ট জেহোফার এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করেন৷ জার্মানিতে শরণার্থী প্রবেশ নিয়ে অবশেষে দল দুটি একটি সমঝোতায় পৌঁছালো৷ গ্রিনস এবং লিবারেল ফ্রি ডেমোক্র্যাটস (এফডিপি)-র সাথে সম্ভাব্য জোট গঠন নিয়ে আলোচনার অংশ হিসেবে এই ঘোষণা আসে৷

সিডিইউ বা সিএসইউ প্রস্তাবিত নীতিতে বলা হয়, মানবিক বিচারে বছরে ২ লাখ পর্যন্ত শরণার্থী গ্রহণ করবে জার্মানি৷ জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী, জার্মানিতে আশ্রয়প্রার্থী, নির্ধারিত শরণার্থী এবং পরিবারের সাথে একত্রিত হতে জার্মানিতে আসতে ইচ্ছুক- সবমিলিয়ে এ সংখ্যা ধরা হয়েছে৷ দক্ষ কর্মীরা এ প্রস্তাবের আওতাভুক্ত নয়৷

প্রস্তাবে বহুল আলোচিত ‘মাইগ্রেশন ক্যাপ’ টার্মটি দু'দলের কেউই সরাসরি উল্লেখ করেনি৷ তবে কঠোর পরিভাষা যোগ না করলেও প্রস্তাবটি জার্মানিতে শরণার্থী প্রবেশের সীমা নির্দিষ্ট করেছে৷ অবশ্য কোনো অংশ থেকে শরণার্থীরা চলে গেলে সে পরিমাণ শরণার্থী অন্য অংশ থেকে গ্রহণ করবে জার্মানি৷

‘নৈতিকতার প্রশ্নে রাজনীতি’

সুরক্ষার প্রয়োজনে আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরানো ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নীতিতে পড়ে না৷ সারল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউরোপীয়, আন্তর্জাতিক এবং পাবলিক আইন বিষয়ের অধ্যাপক টোমাস গিজেরিশ ডয়েচে ভেলেকে বলেন, ‘‘আশ্রয়প্রার্থীদের নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিজস্ব নীতি ও আইন রয়েছে, যেখানে সুরক্ষা পেতে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের কিভাবে বিবেচনা করা হবে, তা নিয়ে স্পষ্ট বলা রয়েছে৷ ইইউ আইনে সুরক্ষা পেতে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের ‘মাইগ্রেশন ক্যাপ’-এর আওতায় আনার সুযোগ নেই৷ যুদ্ধাক্রান্ত কোনো দেশ থেকে যদি কেউ আসে, যার স্পষ্টতই ফিরে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই, তার সুরক্ষা পাবার অধিকার রয়েছে এবং তাকে ফিরিয়ে দেয়া যায় না৷’’ অধ্যাপক গিজেরিশের মতে, কেবল ব্যক্তিগত বিপন্নতা নয়, রাষ্ট্রীয় সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা মানুষেরও এ অধিকার রয়েছে৷ সীমা উল্লেখ করে আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতি বিরুদ্ধ৷​​​​​​​

সিডিইউ ও সিএসইউ তাদের প্রস্তাবে উল্লেখ করেছে, প্রস্তাবিত ২ লাখ শরণার্থী গ্রহণের পরও বিশেষ পরিস্থিতিতে এ সংখ্যা বিবেচনা করা হবে৷ সম্ভাব্য আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা সীমিত করতে কিছু বিষয়, যেমন ইইউ বহিরাগত সীমানা রক্ষা এবং নিরাপদ দেশের তালিকা তৈরি ইত্যাদি বিষয় বিবেচনার প্রস্তাব করা হয়েছে৷ অধ্যাপক টোমাস গিজেরিশের মতে, আইনের দৃষ্টিতে ঠিক থাকলেও নৈতিক বিচারে এ এক প্রশ্নবিদ্ধ রাজনীতি৷

সম্ভাব্য আইনী প্রক্রিয়া

শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করা প্রো-অ্যাসাইলের আইনজীবী মারেই পেলসার ডয়েচে ভেলেকে বলেন, কোটার মাধ্যমে কারো মানবাধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব নয়৷ ‘‘এ ধরনের প্রস্তাব কর্মী অভিবাসনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও মানবাধিকার সুরক্ষায় তা খাটে না৷’’ এ ধরনের ক্ষেত্রে জার্মানিকে আইনের মুখোমুখি দাঁড়াতে হতে পারে৷ পেলসারের মতে, জার্মান সংবিধান কিংবা মানবাধিকার বিষয়ে ইউরোপীয় কনভেনশন অনুযায়ী আশ্রয়প্রার্থীরা আইনের দ্বারস্থ হতে পারেন৷ 

অবশ্য সিডিইউ ও সিএসইউ উত্থাপিত শরণার্থী সীমা নির্ধারণের এ প্রস্তাব সম্ভাব্য জোটের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্যতা পায়, তার উপরই নির্ভর করছে পরবর্তী আলোচনা৷

কার্লা ব্লাইকার/আরএন