1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানির নতুন দল এএফডি সম্পর্কে ১০টি তথ্য

২ জুলাই ২০১৭

অলটারনেটিভ ফর জার্মানি বা জার্মানির জন্য বিকল্প দল (এএফডি) প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালের এপ্রিলে৷ প্রতিষ্ঠার পাঁচ মাস পরের নির্বাচনেই প্রায় পাঁচ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পেয়ে সাড়া ফেলে দেয় এই দল৷

https://p.dw.com/p/2fgyo
ছবি: picture-alliance/dpa/K.-D. Gabbert

২০১৭ সালের নির্বাচনকে ঘিরে দলটি নিয়ে চলছে নানা আলোচনা৷ এই আলোচনার প্রধান ১০টি বিষয় এখানে উল্লেখ করা হলো৷

অভিবাসন বিরোধী

ডানপন্থি এই রাজনৈতিক দলটির প্রথম পরিচয় হচ্ছে, এরা অভিবাসন বিরোধী৷ ২০১৫ সালে জার্মানি যখন শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে শুরু করে, তখন এই দলটিও বিভিন্ন রাজ্য নির্বাচনে ভালো করতে থাকে৷ তারা ইউরোপের সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার পক্ষে এবং জার্মানির সীমান্তে জাতীয়তা পরীক্ষার কঠোর ব্যবস্থা রাখতে চায়৷

যে দেশ থেকে মানুষ জার্মানি আসতে চায়, সেই মানুষদের সেখানেই আটকে দেয়ার পক্ষে তারা৷ কারো আশ্রয়ের আবেদন খারিজ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ফেরত পাঠিয়ে দিতে চায় দলটি৷ জার্মানির ঐতিহ্যবাহী ভাষা ও সংস্কৃতিতে গুরুত্বারোপের পাশাপাশি তারা মনে করে, ইসলাম জার্মান সমাজের অংশ নয়৷ 

ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিরোধী

২০১৩ সালের নির্বাচনে গ্রিসের মতো ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঋণগ্রস্ত সদস্যদের বেইল-আউটের বিরোধিতা করে তারা আলোচনায় আসে৷ অবশ্য ওই নির্বাচনে সংসদে প্রতিনিধি পাঠানোর মতো ভোট তারা পায়নি৷ কিন্তু ২০১৪ সালের ইউরোপীয় সংসদ নির্বাচনে তারা ৭ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পেয়েছে৷ তারা ইউরোপীয় যুক্তরাষ্ট্রীয় ধারণার বিরোধিতা করে৷ একক মুদ্রা ইউরোও তারা রাখতে চায় না৷ এএফডির মতে, জাতীয় পর্যায়ে ফিরে গেলেই ইউরোপ শক্তিশালী হবে৷

ডানপন্থি রাজনীতি

যে ধারার প্রবণতার কারণে অ্যামেরিকায় ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন বা যুক্তরাজ্য বেক্সিটের পক্ষে ভোট দিয়েছে, সেই প্রবণতা থেকে জার্মানিতে এই দলটির উত্থান হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন৷ অরাজনৈতিক অবস্থান থেকে উদ্ভব হয়ে দলটি জার্মান রাজনীতিতে সবচেয়ে ডানপন্থি অবস্থান গ্রহণ করেছে৷ এদের, বিশেষ করে সাবেক পূর্ব জার্মানিতে জনপ্রিয়তা বেশি৷

বদলে যাচ্ছে রাজনীতির মানচিত্র

একটা সমীক্ষায় সম্ভাব্য ভোটারদের প্রশ্ন করা হয়, আগামী রোববার ভোট হলে কাকে ভোট দেবেন? সেখানে এএফডি ৮-১৫ শতাংশ ভোট পায়৷ অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মনে করেন, এই দলটির সমর্থন অনেক বেড়ে যেতে পারে৷

আঞ্চলিক খেলোয়াড়

এরই মধ্যে জার্মানির বিভিন্ন অঞ্চলে তাঁরা আঞ্চলিক রাজনীতির বড় খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছে৷ ১৬টি রাজ্যের মধ্যে ১৩টি রাজ্যের সংসদে তাদের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে৷ গত বছর জার্মানির উত্তর-পূর্বের রাজ্য মেকলেনবুর্গ ফোয়রপমার্নে ২০ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয় তারা৷ সাক্সনি রাজ্যে দলটি ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পায়৷ সেখানে সরকার গঠন করতে সিডিইউ-এসপিডি-গ্রিনকে জোট করতে হয়৷

নব্য নাৎসিদের নতুন আশ্রয়

আনুষ্ঠানিকভাবে দলটি যদিও সরাসরি গণতন্ত্র, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ এবং আইনের শাসনের কথা বলছে, তথাপি এর স্বল্প ইতিহাস পর্যালোচনা করে অনেক সমালোচনাকারী বলছেন, এর সদস্যরা নব্য নাৎসি ধারণাগুলোকে এগিয়ে নিচ্ছেন এবং তাদের ভাষা ব্যবহার করছেন৷ নাৎসিবিরোধী ট্যাবুগুলো এই দলটি ভেঙে দিচ্ছে বলেও অনেকে অভিযোগ করেন৷ 

রক্ষা করতে চায় ঐতিহ্যগত পরিবার

দলটি জার্মানির ঐতিহ্যগত একক পরিবার প্রথাকে সংরক্ষণ করতে চায়৷ তারা গর্ভপাত বিরোধী৷ বিকল্প জীবনধারা চায় না তারা৷ পরিবার প্রথাকে ধরে রাখতে তারা নানা ধরনের অর্থনৈতিক প্রণোদনা দেয়ার পক্ষে৷

নেতৃত্বের লড়াই

নতুন এই দলে নেতৃত্ব নিয়ে সংঘাতও রয়েছে৷ মূল প্রতিষ্ঠাতারা আরেকটু উদার দল চেয়েছিলেন৷ কিন্তু তারা হয় দলের ভেতরেই কোণঠাসা হয়ে গেছেন বা দল ছেড়েছেন৷ এই পরিবর্তনে ২০১৫ সালের ৪ জুলাই'র কনভেনশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে৷ ওই সময় ফ্রাউকে পেট্রি, ইয়র্গ ময়টেন যৌথভাবে দলের মুখপাত্র হন৷ দলে কিছুটা উদার ও ডানপন্থিদের মধ্যকার এই লড়াই এখনো চলমান রয়েছে৷

পেগিডার সঙ্গে অস্বস্তিকর সম্পর্ক

মানুষ অনেক সময় ‘জার্মানির ইসলাম ও অভিবাসীবিরোধী গোষ্ঠী পেগিডা' আন্দোলনের সঙ্গে তাদেরকে মিলিয়ে ফেলেন৷ পূর্বাঞ্চলীয় শহর ড্রেসডেনে তারা নিয়মিত বিক্ষোভ করে থাকে৷ পেগিডা আন্দোলন কোনো দল নয়৷ এটা একটা নাগরিক উদ্যোগ৷ ২০১৬ সালে এএফডি এই আন্দোলনে না জড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেও পরে তারা সেখানে স্থির থাকেনি৷ সম্প্রতি তারা যৌথ কর্মসূচিও দিয়েছে৷

সংবাদ মাধ্যমের প্রত ‘বৈরী'

সংবাদ মাধ্যমের প্রতি তাদের আচরণ অনেকটা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বা বেক্সিট নেতা নাইজেল ফারাজের মতো৷ তথ্যের জন্য কেউ তাদের দপ্তরে ফোন করলে প্রায়ই পূর্বধারণকৃত ‘পরে ফোন করুন' বাক্যটি শুনিয়ে দেয়া হয়৷

প্রতিবেদন: জেফারসন চেজ/এসএন